• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
পরকাল বা আখেরাতের প্রতি ঈমান

পরকাল বা আখেরাতকে আরবি ভাষায় কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন নামে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে

সংরক্ষিত ছবি

ধর্ম

পরকাল বা আখেরাতের প্রতি ঈমান

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ০৯ আগস্ট ২০১৮

ঈমানের অন্যতম অঙ্গ হলো পরকালের প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। কোনো মুসলমান ততক্ষণ পর্যন্ত মুমিন হতে পারবেন না যতক্ষণ পর্যন্ত সে পরকালের প্রতি পূর্ণ ঈমান না আনবেন। ইসলামী পরিভাষায় একে আখেরাত বলা হয়। আখেরাত একটি আরবি শব্দ। এর শাব্দিক অর্থ মানুষের মৃত্যু-পরবর্তী জীবন। আখেরাত বলতে সাধারণভাবে মৃত্যুর পর থেকে অনন্তকালের জীবনকে বুঝায়। হাদিসে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত- তিনি বলেন, আমি আল্লাহর নবীকে এ কথা বলতে শুনেছি যে, কেয়ামাতের দিন মানবজাতিকে খালি পায়ে, উলঙ্গ ও খতনাবিহীন অবস্থায় একত্রিত করা হবে। আমি আরজ করলাম, ইয়া রসুলুল্লাহ! এমতাবস্থায় তো নারী-পুরুষ পরস্পর পরস্পরের দিকে তাকাবে। হুজুর (সা.) বললেন, হে আয়েশা! সেদিনকার অবস্থা এত ভয়াবহ হবে যে, পরস্পর পরস্পরের দিকে তাকানোর কোনো কল্পনাই কেউ করবে না (বুখারি ও মুসলিম)।

পরকালের প্রতি ঈমান আনার মর্মকথা হলো- পরকাল বা পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে পবিত্র কোরআন ও হাদিসে রসুলে যা যা উল্লিখিত হয়েছে, সবকিছুর প্রতি বিশ্বাস স্থাপন করা। কবরের জীবন, কবরের আজাব ও  নেয়ামত, পুনরুত্থান, হাশর-নশর, আমলনামা, হিসাব, মিজান, হাউজে কাউছার, পুলসিরাত, শাফাআত, জান্নাত-জাহান্নামসহ পারলৌকিক জীবন সম্পর্কে শুদ্ধ বর্ণনায় যত আলোচনা রয়েছে সব কিছুকে পূর্ণভাবে বিশ্বাস করার নামই ঈমান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহ মহান ইরশাদ করেছেন, যারা ঈমান এনেছে আল্লাহ ও আখেরাতের দিনের প্রতি এবং নেক কাজ করেছে। তাদের জন্য রয়েছে তাদের রবের কাছে তাদের প্রতিদান। আর তাদের কোনো ভয় নেই এবং তারা দুঃখিতও হবে না (সুরা বাকারা, আয়াত-৬২)।

পরকাল বা আখেরাতকে আরবি ভাষায় কোরআন ও হাদিসে বিভিন্ন নামে সংজ্ঞায়িত করা হয়েছে। যেমন- কিয়ামাহ, আস-সাআহ, আল-আখিরাহ, ইয়াউমুদ্দীন, ইয়াউমুল হিসাব, ইয়াউমুল ফাৎহ, ইয়াউমুত্তালাক, ইয়াউমুল জামই, ইয়াউমুত্তাগাবুন, ইয়াউমুল খুলুদ, ইয়াউমুল খুরুজ, ইয়াউমুল হাসরাহ, ইয়াউমুত্তানাদ, আল আজিফাহ, আত্তাম্মাহ, আস-সাখ্খাহ, আল-হাক্কাহ, আল-গাশিয়া, আল-ওয়াকিয়াহ ইত্যাদি। যে নামেই যে পরিচয়েই সংজ্ঞায়িত করা হোক না কেন, পরকালের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে। পরকালীন জীবনের সব কার্যক্রমের প্রতি বিশ্বাস রাখতে হবে।

পবিত্র কোরআন ও হাদিসের আলোকে আখেরাতের জীবনকে দুই ভাগে বিন্যাস করা হয়েছে- এক. মৃত্যু থেকে কেয়ামত পর্যন্ত। দুই. কেয়ামত থেকে অনন্তকাল অবধি। সেখানে মৃত্যু ও ধ্বংস নেই। প্রথম পর্যায়ের নাম আলমে বরযখ বা কবরের জীবন। মৃত্যুর পর মানবদেহ কবরস্থ করা হোক কিংবা না করা হোক কিংবা সাগরে ভাসিয়ে দেওয়া হোক কিংবা আগুনে ভষ্মীভূত হয়ে যাক বা অন্য কোনো ভাবে নিঃশেষ হয়ে যাক- সর্বাবস্থায় তারপর থেকে বরযখ জীবন শুরু হয়। আর দ্বিতীয় পর্যায় হলো কেয়ামত, হাশর-নশর বা অনন্তকালের জীবন।

 

লেখক : আলেম ও সাংবাদিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads