• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
ধর্মে-কর্মে বঙ্গবন্ধু

বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর নেতৃত্বের প্রসঙ্গ আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, সমাদৃত

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ধর্মে-কর্মে বঙ্গবন্ধু

  • মিরাজ রহমান
  • প্রকাশিত ১৭ আগস্ট ২০১৮

বাংলাদেশের মহান স্থপতি জাতির পিতা বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। একটি নাম, একটি ইতিহাস। বাংলাদেশ নামের স্বাধীন রাষ্ট্রের সঙ্গে অঙ্গাঙ্গিভাবে জড়িয়ে রয়েছে নামটি। বহুমুখী কর্মক্ষমতার অধিকারী একজন মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। প্রায় সব ধরনের মানবীয় গুণ-ক্ষমতার সুষম সম্মিলন ঘটেছিল তার মধ্যে। বাংলাদেশের স্বাধীনতা আন্দোলনে তাঁর নেতৃত্বের প্রসঙ্গ আজ বিশ্বব্যাপী স্বীকৃত, সমাদৃত। তাঁর দীপ্ত কণ্ঠে প্রদত্ত ৭ মার্চের ভাষণকে ঐতিহাসিক দলিল হিসেবে স্বীকৃতি দিয়েছে ইউনেস্কো। অভাবনীয় রাজনৈতিক দূরদর্শিতা ও নেতৃত্বগুণে বলীয়ান ছিলেন জাতির পিতা। শুধু রাজনীতি আর নেতৃত্বের অঙ্গনেই নয়, একজন মুসলিম হিসেবে তার ইসলামপ্রীতি ছিল অতুলনীয়। অসাম্প্রদায়িক চেতনায় আলোকিত ছিল তার ধর্মবোধ। আলেমদের সঙ্গে গভীর সম্পর্ক এবং তাদের প্রতি শ্রদ্ধা-ভক্তি ছিল বঙ্গবন্ধুর স্বভাবসুলভ বংশগত অভিধা। ধর্মকে কখনো তিনি রাজনীতির হাতিয়ার হিসেবে নয়, আদর্শ জীবন ব্যবস্থার পাথেয় হিসেবে গ্রহণ করেছিলেন। জাতির জনক বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের এমন কিছু ইসলামপ্রীতির দুর্লভ তথ্য ও ইতিহাস নিয়ে আজকের আয়োজন— ধর্মে-কর্মে বঙ্গবন্ধু। 

বাংলাদেশে ইসলামের প্রচার-প্রসার ও ইসলামী মূল্যবোধ প্রতিষ্ঠা এবং বিশ্বের বিভিন্ন মুসলিম দেশ ও নেতার সঙ্গে সম্পর্ক বিনির্মাণে অসামান্য অবদান রেখেছেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। তার কিছু ইসলামপ্রীতিমূলক অবদান ও ভূমিকার কথা উল্লেখ করা হলো— 

১. বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের ঐকান্তিক প্রচেষ্টায় বাংলাদেশে প্রথম সরকারি ইসলামী গবেষণা সংস্থা হিসেবে ‘ইসলামিক ফাউন্ডেশন’ প্রতিষ্ঠিত হয়।

২. তার তত্ত্বাবধানে বাংলাদেশ মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড পুনর্গঠিত হয়। উল্লেখ্য, বাংলাদেশে এর আগে পূর্ণাঙ্গ স্বায়ত্তশাসিত কোনো মাদরাসা শিক্ষা বোর্ড ছিল না।

৩. বাংলাদেশ বেতার ও বাংলাদেশ টেলিভিশনে পবিত্র কোরআনের তিলাওয়াত ও বাংলা তরজমা প্রচারের উদ্যোগ গ্রহণ করা হয় বঙ্গবন্ধুর নির্দেশনায়।

৪. তাবলিগ জামাতের মারকাজ প্রতিষ্ঠায় কাকরাইল মসজিদের জন্য অতিরিক্ত জায়গা বরাদ্দ দেন।

৫. তাবলিগ জামাতের বার্ষিক সম্মেলন বিশ্ব ইজতেমা সুন্দর ও সফলভাবে অনুষ্ঠিত হওয়ার জন্য টঙ্গীতে আলাদা স্থান নির্ধারণ করে দেন।

৬. পবিত্র হজব্রত পালনের উদ্দেশ্যে সৌদি আরব গমনকারী হজযাত্রীদের জন্য ‘ভ্রমণকর’ রহিত করেন।

৭. বাংলাদেশ সিরাত মজলিস প্রতিষ্ঠা ও রাষ্ট্রীয়ভাবে ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.) উদযাপনের ব্যবস্থা গ্রহণ করেন।

৮. ঈদে মিলাদুন্নবী (সা.), শবেকদর ও শবেবরাতসহ বিভিন্ন ধর্মীয় দিবস উপলক্ষে সরকারি ছুটি ঘোষণা প্রদান করেন।

৯. বর্তমান সোহরাওয়ার্দী উদ্যান ও তৎকালীন রেসকোর্স ময়দানে ঘোড়দৌড় প্রতিযোগিতা নিষিদ্ধকরণসহ সুশীল সমাজ গঠনে প্রকাশ্যে মদ ও জুয়ার বিভিন্ন আয়োজন নিষিদ্ধ করেন এবং এর শাস্তির বিধান প্রণয়ন করেন।

১০. নানামুখী সমস্যার সমাধান ঘটিয়ে তার অবদানে রাশিয়াতে প্রথম তাবলিগ জামাত প্রেরণের ব্যবস্থা হয়।

১১. হজ পালনের জন্য সরকারি অনুদানের ব্যবস্থা করেন।

১২. জাতীয় মসজিদ বায়তুল মোকাররমের পুনর্নির্মাণে অসামান্য অবদান রাখেন তিনি।

১৩. আন্তর্জাতিক ইসলামী সংস্থা ওআইসিতে বাংলাদেশের সদস্যপদ প্রাপ্তির ক্ষেত্রেও বঙ্গবন্ধুর অবদান ছিল অবিস্মরণীয়। তার আন্তরিকতায় ১৯৭২ সালে বাংলাদেশ ওআইসির সদস্যপদ লাভ করে। এ ছাড়া মুসলিম রাষ্ট্র ও মুসলিম বিশ্বের নেতাদের সঙ্গে কূটনৈতিক সম্পর্ক সমুন্নত রাখতে বঙ্গবন্ধুর অগ্রণী ভূমিকার কথা আজও স্মরণীয়। মুসলিম দেশগুলোর রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রীসহ মুসলিম উম্মাহর বিশ্বনেতাদের সঙ্গে তার অন্তরঙ্গ সম্পর্ক ছিল। বিভিন্ন ছবিতে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানকে সংযুক্ত আরব আমিরাত, ইরাক, দুবাই, ইরান ও সৌদি আরবের তৎকালীন আমিরদের সঙ্গে অন্তরঙ্গ আলাপচারিতায় ব্যস্ত দেখা যায়।

১৪. ১৯৭৩ সালে ফিলিস্তিন-ইসরাইল যুদ্ধে শেখ মুজিবুর রহমানের নেতৃত্বাধীন বাংলাদেশ ফিলিস্তিনের পক্ষাবলম্বন করে এবং ফিলিস্তিনি যোদ্ধাদের জন্য কয়েক লাখ কার্টন চা প্রেরণ করেন তিনি।

১৫. বঙ্গবন্ধুর উৎসাহ ও আন্তরিক ইচ্ছার পরিপ্রেক্ষিতে মাওলানা অলিউর রহমান ধর্ম মন্ত্রণালয়ের প্রস্তাব করেছিলেন এবং তা পরে বাস্তবায়িত হয়েছে।

এ ছাড়াও তৎকালীন প্রায় সব বিজ্ঞ আলেম-উলামার সঙ্গে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমানের সুসম্পর্ক ছিল। পারিবারিক ঐতিহ্য ও ধারাবাহিকতা এবং ব্যক্তিগত ভালোবাসা ও শ্রদ্ধাবোধ থেকে আলেম-উলামাদের সঙ্গে সম্পর্ক বজায় রাখতেন তিনি।

১৬. মওলানা ভাসানীকে পিতৃতুল্য গুরু মানতেন বঙ্গবন্ধু : মওলানা আবদুল হামিদ খান ভাসানীকে পিতৃতুল্য গুরু মনে করতেন বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান। রাষ্ট্রপতি হওয়ার পরও তার কাছে মওলানা ভাসানী ছিলেন পিতৃতুল্য মানুষ। বঙ্গবন্ধুকেও তিনি পুত্রসম স্নেহ করতেন। মওলানা ভাসানীকে বঙ্গবন্ধু একজন রাজনৈতিক গুরু হিসেবে যতটা মানতেন ঠিক ততটাই তাকে একজন ধর্মীয় পথনির্দেশক হিসেবে অনুসরণ করতেন। মোটকথা, একজন ধর্মীয় নেতা হিসেবে মওলানা ভাসানীর প্রতি বঙ্গবন্ধুর শ্রদ্ধবোধ ইসলাম ধর্মের প্রতি তার গভীর শ্রদ্ধাবোধের পরিচায়ক। রাষ্ট্রপতি ও প্রধানমন্ত্রী থাকাকালীন প্রায়ই নিরাপত্তারক্ষী ছাড়াই রাত-বিরাতে মওলানা ভাসানীর সঙ্গে সাক্ষাৎ করতে যেতেন। ১৯৭৫ সালের ১৫ আগস্ট বঙ্গবন্ধুকে সপরিবারের নির্মমভাবে হত্যা করার কথা শুনে মওলানা ভাসানী খুবই কেঁদেছেন। ওইদিন তিনি বার বার বলেছেন, ‘সব শেষ হয়ে গেল’। তিনি এতটাই দুঃখ পেয়েছিলেন যে, ওইদিন কোনো কিছুই খাননি এবং কারো সঙ্গে সাক্ষাৎও করেননি।

১৭. বঙ্গবন্ধুর স্বপ্ন ছিল বড় হয়ে মাওলানা তর্কবাগীশ হবেন : মওলানা ভাসানীর মতো আরো একজন মাওলানার সঙ্গে গুরু-শিষ্য সম্পর্ক ছিল বঙ্গবন্ধুর। তিনি ছিলেন মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশ। ১৯৫৬ থেকে ১৯৬৭ সাল পর্যন্ত একটানা দশ বছর মাওলানা তর্কবাগীশ আওয়ামী লীগের কেন্দ্রীয় সভাপতি ছিলেন এবং শেখ মুজিবুর রহমান ছিলেন যুগ্ম সম্পাদক। পরে তর্কবাগীশের সঙ্গেই তিনি সাধারণ সম্পাদকের দায়িত্বও পালন করেন। বঙ্গবন্ধুর চোখে-মুখে আদর্শ নেতা হিসেবে আঁকা ছিল তর্কবাগীশের ছবি। মাওলানা আবদুর রশিদ তর্কবাগীশের নাতি সৈয়দ হাদী তর্কবাগীশ একুশের সঙ্কলনে ‘অগ্নীগর্ভে একুশ’ প্রবন্ধে লিখেছেন, যেদিন প্রথম তর্কবাগীশের সঙ্গে শেখ মুজিবুর রহমানের দেখা হয় সেদিন তিনি বলেছিলেন, নেতা আমি আপনার মতো বক্তা হতে চাই।

১৮. বঙ্গবন্ধুকে কালো কোটটি উপহার দিয়েছিলেন যিনি : আল্লামা শামছুল হক ফরিদপুরী (র.) বাংলার জমিনের সর্বজন শ্রদ্ধেয় একজন আলেমেদ্বীন। পাঞ্জাবির ওপরে তিনি সবসময় কালো কোট পরতেন। একদিন লালবাগে হুজুরের কক্ষে বসে শেখ মুজিব বলছিলেন, দাদা আপনার কোটটা আমার খুব ভালো লাগে। সঙ্গে সঙ্গে নিজের পরনে থাকা কালো কোটটি খুলে নাতি মুজিবকে দিলেন এবং বললেন, গায়ে দাওতো দেখি নাতি তোমাকে কেমন লাগে। কোটটি পরার পর ফরিদপুরী (র.) বললেন, দারুণ লাগছে তো নেতাকে। এখন তোমাকে সত্যিকারের জাতীয় নেতা মনে হচ্ছে। ঠিক আছে এটা তোমাকে দিয়ে দিলাম। তুমি সব সময় এটা পরে মিটিং-মিছিলে যাবে। দাদা হুজুরের সেই কালো কোটটি শেখ মুজিবুর রহমানের আমৃত্যু নিত্যসঙ্গী ছিল। বঙ্গবন্ধুর প্রিয় পোশাক ছিল কালো কোট।

১৯. বঙ্গবন্ধুর নির্দেশে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুরু হয়েছিল একজন মাওলানার কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে : বঙ্গবন্ধুর ইসলামপ্রীতি ছিল আন্তরিক ভালোবাসায় সিক্ত। যেকোনো সভা-সেমিনারের শুরুতে সুযোগ থাকলে কোরআন তেলাওয়াত করানোর নির্দেশ দিতেন তিনি। বঙ্গবন্ধুর নির্দেশেই মাওলানা শেখ উবায়দুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদীর কোরআন তেলাওয়াতের মাধ্যমে ঐতিহাসিক ৭ মার্চের ভাষণ শুরু হয়েছিল।

২০. আওয়ামী ওলামা লীগ গঠনের আদেশ দিয়েছিলেন বঙ্গবন্ধু : মাওলানা অলিউর রহমান ছিলেন আওয়ামী ওলামা লীগের প্রতিষ্ঠাতা সভাপতি। বঙ্গবন্ধুর পরামর্শ ও ঐকান্তিক ইচ্ছায় ১৯৬৬ সালে মাওলানা অলিউর রহমানের হাত ধরেই আওয়ামী ওলামা লীগ প্রতিষ্ঠিত হয়। বঙ্গবন্ধু যখন ১৯৬৬ সালে ৬ দফা ঘোষণা করেন, তখন পাকিস্তান সরকারের বেতনভুক্ত বহু আলেম-উলামা ছয় দফাকে ইসলামবিরোধী বলে ঘোষণা দেন। সেই সময় মাওলানা অলিউর রহমান ‘ইসলামী শরিয়তের দৃষ্টিতে ছয় দফা’ নামক একটি বই লিখে বঙ্গবন্ধুর ছয় দফার কোনো দাবিই যে ইসলামী শরিয়ার বিরোধী নয় তা প্রমাণ করেন। ‘মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মাওলানা অলিউর রহমান : জীবন ও সাহিত্য’ গ্রন্থে আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী লিখেছেন, বঙ্গবন্ধুর উৎসাহে অলিউর রহমান ছিলেন ধর্ম মন্ত্রণালয়ের স্বপ্নদ্রষ্টা ও প্রস্তাবকারী। ‘স্বতন্ত্র ধর্ম দফতর একটি জাতীয় প্রয়োজন’ নামে তিনি একটি গ্রন্থও লিখেছিলেন।

বঙ্গবন্ধু ছিলেন একজন ইসলামপ্রিয় ব্যক্তিত্ব। ধর্মপ্রাণ মুসলমান। ইসলামসহ সব ধর্মকে তিনি শ্রদ্ধার নজরে দেখতেন। মুসলিম হিসেবে ইসলাম ধর্মের নানাবিধ আনুষ্ঠানিকতায় অংশগ্রহণ করতেন তিনি। বিভিন্ন ছবিতে দেখা যায়, বঙ্গবন্ধু তার পুত্র শেখ রাসেলকে নিয়ে ঈদের জামাত শেষে মোনাজাত করছেন এবং নামাজান্তে মুসলিমদের সঙ্গে কোলাকুলি করছেন। ব্যক্তিগত জীবনেও ধার্মিক মানুষ ছিলেন বঙ্গবন্ধু। ১৯৭২ সালের ১৮ জানুয়ারি এক সাক্ষাৎকারে তিনি বলেছেন, আমি বাঙালি, আমি মুসলমান- একবারই মরে, বারবার মরে না। নিয়মিত পাঁচ ওয়াক্ত নামাজ পড়তেন এবং রোজা রাখতেন তিনি। ৩২ নম্বর বাড়ির একজন কর্মচারীর কাছ থেকে জানা যায়, নিয়মিত তাহাজ্জোদ নামাজও পড়তেন বঙ্গবন্ধু।

জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অধ্যাপক মিল্টন বিশ্বাস ‘বঙ্গবন্ধু ও ধর্ম নিরপেক্ষতা’ শিরোনামের একটি প্রবন্ধে লিখেছেন, জাতীয় সংসদে এক ভাষণে বঙ্গবন্ধু শেখ মুজিবুর রহমান বলেছেন, বাংলাদেশ হবে ধর্মনিরপেক্ষ রাষ্ট্র। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্মহীনতা নয়। মুসলমান মুসলমানের ধর্ম পালন করবে। অন্য সম্প্রদায় তাদের ধর্ম স্বাধীনভাবে পালন করবে, যে কথাটি ইসলামেও স্বীকৃত।

তিনি আরো বলেন, এ মাটিতে ধর্মহীনতা নেই, ধর্মনিরপেক্ষতা আছে। এখানে ধর্মের নামে ব্যবসা ও লুটপাট করে খাওয়া চলবে না। ধর্মের নামে রাজনীতি করে রাজাকার, আলবদর পয়দা করা বাংলার বুকে আর চলবে না।

বঙ্গবন্ধু চেয়েছেন কেউ যাতে অন্য কারো ধর্মকে অবমাননা না করেন। কারণ ইসলাম ধর্ম অন্য ধর্মকে শ্রদ্ধা করার কথা বলেছে। বাংলাদেশে ইসলামের এ প্রকৃত বাণী ও মাহাত্ম্য প্রতিষ্ঠা করতে এবং মানুষের কাছে পৌঁছে দিতে অবদান রেখেছেন বঙ্গবন্ধু।

এ ছাড়া ঢাকা আলিয়া মাদরাসার এক অনুষ্ঠানে বঙ্গবন্ধু বলেছিলেন, আমাদের দেশে পাকিস্তান আমলে ইসলামবিরোধী বহু কাজ হয়েছে। রেসের নামে জুয়াখেলা রাষ্ট্রীয়ভাবে স্বীকৃত ছিল, আলেম সমাজ কোনো দিন এর প্রতিবাদ করেননি। ঢাকা শহরের বিভিন্ন জায়গায় প্রকাশ্যে জুয়াখেলা চলত, এগুলো বন্ধ করার কোনো আন্দোলন আপনারা করেননি। আমি ক্ষমতায় এসে প্রথমেই ঘোড়দৌড়সহ শহরের আনাচেকানাচে গড়ে ওঠা জুয়াড়িদের আড্ডা বন্ধ করিয়েছি। আমি ধর্মনিরপেক্ষতার কথা বলি। ধর্মনিরপেক্ষতা মানে ধর্ম বিরোধিতা নয়। আমি মুসলমান, আমি ইসলামকে ভালোবাসি। আপনারা আমাকে সাহায্য করুন, দেখবেন এ দেশে ইসলামবিরোধী কর্মকাণ্ড কখনই হবে না।

[তথ্যসূত্র— ১. কিছু স্মৃতি, কিছু কথা, শহিদুল ইসলাম, হক কথা, ৭ নভেম্বর ২০১৫। ২. অগ্নীগর্ভে একুশ, সৈয়দ হাদী তর্কবাগীশ, একুশের সংকলন। ৩. কে এই মাওলানা, ৬ষ্ঠ পর্ব, তামিম রায়হান, আমারব্লগ, ১১ নভেম্বর ২০১২ ইংরেজি। ৪. আলেম মুক্তিযোদ্ধার খোঁজে, শাকের হোসেন শিবলি। ৫. মুক্তিযোদ্ধা শহীদ মাওলানা অলিউর রহমান : জীবন ও সাহিত্য, আবদুল্লাহ বিন সাঈদ জালালাবাদী। ৬. বাংলাদেশ আওয়ামী লীগ, চাঁদপুর জেলা শাখার সদস্য ড. মোহাম্মদ হাসান খান রচিত প্রবন্ধ। ৭. ড. মুহাম্মদ আবদুল মুনিম খান, ইত্তেফাক, ইসলাম প্রচার ও প্রসারে বঙ্গবন্ধুর ভূমিকা। ৮. বঙ্গবন্ধু ও ধর্মনিরপেক্ষতা, মিল্টন বিশ্বাস, অধ্যাপক, বাংলা বিভাগ, জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়, কালের কণ্ঠ। ৯. সৈয়দ আনোয়ার আবদুল্লাহ, বঙ্গবন্ধুর অন্য জীবন, আওয়ারইসলামটোয়েন্টিফোর.কম।]

লেখক : সাংবাদিক

mirajrahmanbd@gmail.com

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads