• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
আজান চালু হলো যেভাবে

হজরত বেলাল (রা.) উচ্চকণ্ঠে আজান দিতে থাকেন

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

আজান চালু হলো যেভাবে

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

ইসলামের সূচনালগ্নে মুসলমানরা কোনো কাজই প্রকাশ্যে করতে পারতেন না। প্রকাশ্যে নামাজ পড়তে পারতেন না। কাবাঘর জিয়ারত করতে পারতেন না। সেই সময়ে নামাজের জন্য সবাইকে প্রকাশ্যে আহ্বান করার বিষয় তো ছিল খুবই বিপজ্জনক। তাই মুসলমানরা একে অপরকে গোপনে নামাজের জন্য ডাকতেন। মদিনায় আগমনের পর রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে একটি সভা আহ্বান করা হলো। সে সভায় উপস্থাপন করা হলো, নামাজের জন্য সবাইকে কীভাবে আহ্বান করা যায়। সাহাবায় কেরামের পরামর্শ সভায় চারটি প্রস্তাব উপস্থাপিত হয় : ১. ঝাণ্ডা ওড়ানো; ২. আগুন প্রজ্বলন; ৩. শিঙ্গা বাজানো; এবং ৪. ঢোল বাজানো।

পরামর্শ সভার এই চারটি প্রস্তাবই প্রত্যাখ্যান করা হয়। কারণ ঝাণ্ডা ওড়ালে সব মানুষ তা বাড়ি বা দূর থেকে দেখতে পাবে না। দ্বিতীয়ত, আগুন প্রজ্বলন অগ্নি উপাসকদের কাজ। তৃতীয়ত, শিঙ্গা বাজানো খ্রিস্টানদের কাজ। আর চতুর্থত, ঢোল বাজানো ইহুদিদের কাজ। এ কারণে সেদিন সমাধান ছাড়াই পরামর্শ সভার মূলতবি ঘোষণা করা হয়।

সাহাবায় কেরাম এ বিষয়টি নিয়ে চিন্তা করতে করতেই যার যার বাড়ি চলে গেলেন। ওই রাতেই হজরত আবদুল্লাহ ইবনে যায়িদ (রা.) স্বপ্নযোগে আজানের বাক্যগুলো শুনতে পান। প্রত্যুষে সাহাবি আবদুল্লাহ ইবনে যায়িদ (রা.) নবী করিম (সা.)-এর নিকট এসে স্বপ্নের ঘটনা বিস্তারিতভাবে বর্ণনা করেন। ঘটনা শুনে নবী করিম (সা.) বললেন, এটি সত্য স্বপ্ন। রসুলুল্লাহ (সা.) বাক্যগুলো হজরত বেলাল (রা.)-কে শিখিয়ে দিতে বললেন। হজরত বেলাল (রা.) উচ্চকণ্ঠে আজান দিতে থাকেন।

আজান শুনে হজরত ওমর (রা.) নবী (সা.)-এর দরবারে দৌড়ে এসে বললেন, ‘হে আল্লাহর রসুল (সা.)! ওই সত্তার শপথ যিনি আপনাকে সত্য রসুল হিসেবে প্রেরণ করেছেন। অবশ্যই আমি অবিকল এ বাক্যগুলোই স্বপ্নে দেখেছি।’ ওই রাতে একই স্বপ্ন সাহাবিদের মধ্য থেকে ১৪ জনই দেখেন। যার মাধ্যমে নিয়মিত হজরত বেলাল (রা.) নামাজের জন্য আজান দিতেন।

ফজরের আজানের বাড়তি বাক্য ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম’ সম্পর্কে জানা যায় যে, একদিন ফজরের সময় হজরত বেলাল (রা.) আজান দিতে মসজিদে এলেন, তখন তাকে একজন সাহাবি বললেন, নবী (সা.) ঘুমে আছেন। তখন হজরত বেলাল (রা.) উচ্চকণ্ঠে বললেন, ‘আস-সালাতু খাইরুম মিনান নাওম। অর্থাৎ ঘুম থেকে নামাজ উত্তম।’

আর এভাবেই সর্বপ্রথম আজানের প্রচলন হয়। আজানের আওয়াজ শোনার সঙ্গে সঙ্গে মুসলমানরা মসজিদে জামাতে নামাজ আদায়ে একত্রিত হয়। আজান প্রচলন হওয়ার এই ঘটনা ঘটে হিজরি সনের প্রথম বর্ষে।

লেখক : সাংবাদিক

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads