• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা

সাম্প্রদায়িকতা কোনো ধর্মের শিক্ষা হতে পারে না।

ছবি : ইন্টারনেট

ধর্ম

ধর্ম ও সাম্প্রদায়িকতা

  • প্রকাশিত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

বাংলার রুমি সৈয়দ আহমদুল হক

বাংলাদেশে চারটি ধর্মীয় সম্প্রদায় বাস করে। এ সম্প্রদায়গুলির নাম হলো- মুসলিম সম্প্রদায়, হিন্দু সম্প্রদায়, বৌদ্ধ সম্প্রদায় ও খ্রিস্টান সম্প্রদায়। যুগ যুগ ধরে এরা পরস্পর পরস্পরের সাথে সম্প্রীতিতে বাস করে আসছে। মুসলিম রাজত্বের ছয়শত বছরের অধিক কালের মধ্যে বিরাট রকমের কোনো সাম্প্রদায়িক দাঙ্গার কথা আমরা ইতিহাসে পড়িনি। ইংরেজদের হাতে এ দেশের শাসন ক্ষমতা চলে গেলে সাম্প্রদায়িকতার সূচনা হয়। সাম্প্রদায়িকতা বলতে আমরা বুঝি সাম্প্রদায়িক ভেদবুদ্ধি ও সংকীর্ণতা। এতে পরস্পর পরস্পরের মধ্যে হিংসা ও বিদ্বেষ জন্মে এবং পরিণামে খুন-খারাবি হতে পারে। এটা যখন কোনো সম্প্রদায়ের মধ্যে দেখা দেয় এবং এই সম্প্রদায় যদি সংখ্যাগরিষ্ঠ বা অধিকতর শক্তিশালী হয়, তখন তার মাঝে সংখ্যালঘিষ্ঠ সম্প্রদায়ের উপর অত্যাচার করার প্রবণতা জন্মে। সাম্প্রদায়িকতা কোনো ধর্মের শিক্ষা হতে পারে না। সংক্ষেপে বলতে গেলে, মুসলিম সম্প্রদায়ের নীতিমালায় রয়েছে : তাদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে, যারা মানুষের উপর অত্যাচার করে আর পৃথিবীতে অহেতুক বিদ্রোহ করে বেড়ায়। (আল-কুরআন, ৪২:৪২) অবশ্যই অত্যাচারীদের জন্য কঠিন শাস্তি রয়েছে। (আল-কুরআন, ১৪:২২) আল্লাহ অত্যাচারীদের পছন্দ করেন না। (আল-কুরআন, ০৩:১৪০) উপরের আয়াতে কারিম হতে বোঝা যাবে, আল্লাহ তা’আলা মানুষের উপর অত্যাচার করতে মানা করেছেন। এখান্মোনুষ বলতে সমস্ত মানব জাতিকেই বোঝানো হয়েছে। কেবল মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টানদের উপর জুলুম বা অত্যাচার করতে মানা করা হয়েছে, তা নয়। আল্লাহর সৃষ্ট কোনো মানুষের উপরই জুলুম বা অত্যাচার করা চলবে না। অত্যাচারীদের জন্য আল্লাহ কঠিন শাস্তি রেখেছেন। ভারতবর্ষে বাবরি মসজিদ ধ্বংস করা, বোম্বে, মাদ্রাজ, দিল্লি, বসনিয়া ও হার্জিগোভিনায় এবং প্যালেস্টাইনে মুসলমানদের উপর অত্যাচার করা, বাংলাদেশে হিন্দু বা বৌদ্ধদের উপর অত্যাচার করা এবং পার্বত্য চট্টগ্রামে রাজনীতির নাম দিয়ে মুসলমান বা উপজাতীয়দের উপর অত্যাচার করা মানবতাবিরোধী জঘন্যতম কাজ।  আল্লাহ তাআলা বলেন, তিনি মানুষকে এক পুরুষ ও এক নারী হতে সৃষ্টি করেছেন এবং পরে তাদেরকে জাতি ও গোত্রে বিভক্ত করা হয়, পরে তোমাদের বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যতে তোমরা একে অপরের সাথে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে ওই ব্যক্তিই আল্লাহর নিকট অধিক মর্যাদাসম্পন্ন, যে সবচেয়ে বেশি সদাচারী। আল্লাহ সবকিছু জানেন, সমস্ত খবর রাখেন।’ (আল-কুরআন, ৪৯:১৩)

কুরআন পাকের উপরোক্ত আয়াতের ন্যায় আর একটি স্পষ্ট, পরিষ্কার ও সরল বাণী কোথাও আছে কিনা আমার জানা নেই। আল্লাহ জাতি ও গোত্র সৃষ্টি করেছেন পরস্পরকে চেনার জন্য; হানাহানি, মারামারি বা বিদ্বেষ সৃষ্টি করার জন্য নয়। এ কথার পরও যদি আমাদের চেতনা না হয়, তাহলে বুঝতে হবে আমরাই আমাদের ধ্বংসের পথ সুগম করে দিচ্ছি। আল্লাহ তাআলা আরও বলেন,  আমি প্রত্যেক সম্প্রদায়ের জন্য নির্ধারিত করে দিয়েছি ধর্মগত আচার ও অনুষ্ঠানাদি, যা তারা অনুসরণ করে। সুতরাং তারা যেন এই ব্যাপারে তোমার সাথে বিতর্ক না করে। তুমি তাদেরকে তোমার প্রতিপালকের দিকে আহ্বান করো। তুমি তো সরল পথেই প্রতিষ্ঠিত। (আল-কুরআন, ২২:৬৭) উপরোক্ত আয়াতে কারিম হতে এটাও বোঝা যাবে যে, প্রত্যেক সম্প্রদায়ের ধর্মগত যে আচার-অনুষ্ঠানাদি আছে, তাও আল্লাহ নির্ধারিত করে দিয়েছেন। মুসলমানদের জন্য মুসলমান ধর্ম শ্রেষ্ঠ। হিন্দুরা হিন্দু ধর্ম, বৌদ্ধরা বৌদ্ধ ধর্ম এবং খ্রিস্টানরা খ্রিস্টান ধর্ম পালন করবেন, কেউ কারও সঙ্গে বিতর্কে নামার কোনো প্রয়োজন নেই। হিন্দু ধর্মের গীতায় রয়েছে, যে যথা মাং প্রপদ্যান্তে তাংস্তথৈব ভজাম্যহম, মম বর্ত্মানুবর্তস্তে মনুষ্যা ঃ পার্থ সর্বশঃ (শ্রী গীতা, জ্ঞানযোগ, শ্লোক-১১, পৃ. ১২৮)

যে আমাকে যেভাবে উপাসনা করে, আমি তাকে সেভাবেই তুষ্ট করি। মনষ্যগণ সর্বপ্রকারে আমার পথেরই অনুসরণ করে। অর্থাৎ, মানুষ যে পথই অনুসরণ করুক না কেন, সব পথেই আমাতে পৌছতে পারে। এক্ষেত্রে হিন্দুধর্ম ও মুসলমান ধর্মের মধ্যে যে অপূর্ব মিল রয়েছে, তা সহজেই বোধগম্য। মৌলানা জালালুদ্দিন রুমি বলেন, হার নাবী ও হারআলী রা’ মাসলাকীস্ত/লীক তা’ হাক্ক মী বারাদ জোমলে ইয়েকীস্ত- প্রত্যেক নবী ও প্রত্যেক ওলির একটি একটি পথ রয়েছে। যেহেতু সব পথই আল্লাহ পর্যন্ত নিয়ে যায় (উদ্দেশ্যের দিক হতে) সকলেই এক। (মসনতি) উপরে উদ্ধৃত গীতার ভাষ্য লিখতে গিয়ে প্রসিদ্ধ ঔপন্যাসিক বঙ্কিম চন্দ্র বলেন, ‘ইহাই প্রকৃত হিন্দুধর্ম, হিন্দু ধর্মের তুল্য উদার ধর্ম আর নাই, আর এই শ্লোকের তুল্য মকাবাক্য আর নাই।’

গীতা শাস্ত্রী জগদীশ চন্দ্র ঘোষ উপরোক্ত শ্লোকের ভাষ্যে বলেন, ‘বর্তমান যুগ ধর্ম সমন্বয়ের যুগ। ভগবান শ্রী রামকৃষ্ণ সমন্বয় ধর্মের প্রধান উপদেষ্টা ও পথ প্রদর্শক। ‘যত মত তত পথ’- ইহাই তাঁহারই উপদেশ। পৃথিবীতে হিন্দু, বৌদ্ধ, মুসলমান, খ্রিস্টান- কত রকম ধর্মমত প্রচলিত আছে। গীতার এই একটি শ্লোকের তাৎপর্য বুঝিলে প্রকৃতপক্ষে ধর্মগত পার্থক্য থাকে না। হিন্দুর হূদয়ে ধর্ম বিদ্বেষ থাকিতে পারে না।’ বৌদ্ধ ধর্মের মূলনীতি হলো অহিংসা। বৌদ্ধ ধর্মের ত্রিপিটকে আটটি সৎ পথের কথা বলা হয়েছে। এগুলি হলো : ১. সৎ দর্শন, ২. সৎ আকাঙ্ক্ষা ৩. সৎ কথন ৪. সৎ আচরণ ৫. সৎ জীবন-যাপন ৬. সৎ প্রচেষ্টা, ৭. সৎ মনোযোগ ৮. সৎ ধ্যান। কেউ যদি এই আট পথের পথিক হয়, তাহলে তো তার মধ্যে সাম্প্রদায়িকতা ও হিংসা-বিদ্বেষের কথা থাকতে পারে না। খ্রিস্টধর্মে প্রেমকে বড় করে দেখানো হয়েছে। বাইবেলে বলা হয়েছে, ঈশ্বরই প্রেম।’ খ্রিস্টধর্ম প্রেমের ধর্ম। খ্রিস্টানেরা মনে করেন, প্রত্যেকের মধ্যেই খ্রিস্ট বিরাজ করছেন। ক্ষুদ্রতমের মধ্যেও তিনি আছেন। বাইবেলের মথি পুস্তকের ২৫তম অধ্যায়ের ৩৫ থেকে ৪৫ নং শ্লোকসমূহের ভাষ্যে তা পাওয়া যাবে। যারা জাতি-ধর্ম নির্বিশেষে মানুষকে সাহায্য করে, তাদেরকে অনন্ত জীবনে প্রবেশ করানো হবে। যিশুখ্রিস্ট নিজেকে দুঃখীজনের সঙ্গে এক মনে করতেন। ক্ষুধিত, পীড়িত বা পিপাসিত ব্যক্তি যিশুখ্রিস্ট ছাড়া আর কেউ নন। যারা অনন্ত জীবন লাভ করবে, তাদেরকে লক্ষ্র করে ঈশ্বর বলবেন, ‘আমি ক্ষুধিত হয়েছিলাম, তোমরা আমাকে আহার দিয়েছিলে; পিপাসিত হয়েছিলাম আর আমাকে পান করায়েছিলে, অতিথি হয়েছিলাম, আমাকে আশ্রয় দিয়েছিলে, বস্ত্রহীন হয়েছিলাম আর আমাকে বস্ত্র পরায়েছিলে, পীড়িত হয়েছিলাম, আমাকে তত্ত্বাবধান করেছিলে, কারাগারস্থ হয়েছিলাম, আমার নিকট এসেছিলে (বাইবেল, পৃ. ৯৬)। এতে বোঝা যায়, যিশুখ্রিস্ট প্রত্যেক মানবদেহে বিরাজ করছেন, খ্রিস্টান ধর্মের এই ধারণাকে হিন্দুদের ‘ঘটে ঘটে নিরঞ্জন’ ধারণার সঙ্গে তুলনা করা যায়।

দুঃখের বিষয়, সেদিন এক পত্রিকায় পড়লাম, কোনো একজন বক্তা বলেছেন, যারা ‘সাম্প্রদায়িকতা করো না’ বলে উপদেশ দেয়, তারা মুসলমান নয়। ‘নাউজুবিল্লাহ!’ এতে বোঝা যায় যেন ইসলাম এবং সাম্প্রদায়িকতা এক। বক্তা যদি সাম্প্রদায়িকতার অর্থে সম্প্রদায় বিশেষের প্রতি আনুগত্য বোঝান, তাহলে আপত্তির কোনো কারণ থাকতে পারে না। কেননা মুসলমান, হিন্দু, বৌদ্ধ বা খ্রিস্টান যারা যার সম্প্রদায়ের প্রতি অনুগত থাকবে, এটা তো স্বাভাবিক। কিন্তু তিনি যদি সাম্প্রদায়িকতার অর্থে সম্প্রদায়গত সংখীর্ণতা, হিংসা, বিদ্বেষ ইত্যাদিকে বোঝান, তাহলে এটা হবে মারাত্মক ও বিপজ্জনক ভুল। হিংসা বা বিদ্বেষের উপর কোনো ধর্মমত প্রতিষ্ঠিত হতে পারে না। বক্তা যদি রাজনীতিক হন, তাহলেও বলতে হবে, এরূপ কথা রাজনীতির দিক থেকেও গ্রহণযোগ্য নয়। এরূপ মনোভাব নিয়ে জার্মানির হিটলার দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ লাগিয়ে দিয়েছিলেন। ইহুদিরা যতই ঘৃণ্য হোক, তারা মানুষ। ঐ যুদ্ধে যারা ইহুদি নিধনে সহায়তা করেছিলেন, এখনও তাদের বিচার হচ্ছে। বাংলার বাইরে পৃথিবীর নানা স্থানে মুসলমানদের উপর নির্যাতন চলছে। হয়তোবা এটা ইহুদি এবং তাদের দোসরদের চক্রান্তের ফল। ভারতবর্ষে মুসলমান রয়েছে এবং হিন্দুও রয়েছে। ওখানকার হিন্দুরা যদি মুসলমানদের উপর অত্যাচার করে তাহলে বাংলাদেশের হিন্দুদের উপর মুসলমানদের অত্যাচার করা কোনো কারণেই যুক্তিযুক্ত হতে পারে না। তুরস্কে, ইরানে ও সিরিয়ায় অনেক খ্রিস্টান ও ইহুদি রয়েছে। একথা কি কেউ কোনো দিন শুনেছে যে, যেহেতু প্রতিবেশী দেশ প্যালেস্টাইন, বসনিয়া ও হার্জিগোভিনায় ুখ্রিস্টান ও ইহুদিরা মুসলমানদের উপর অত্যাচার চালাচ্ছে, সেজন্য তুরস্ক, ইরান বা সিরিয়া তাদের দেশের ইহুদি ও খ্রিস্টানদের উপর অত্যাচার চালায়? এসব যারা করে, তারা দেশে অমঙ্গল ডেকে আনে। শেখ সাদি বলেন, মাদে রোখসাতে যোলম দার হীচ হাল/কে খুরশীদে মোলকাত নাইয়া বাদ যঙাভাল- কোনো অবস্থাতেই কারও উপর অত্রাচার করো না। কেননা অত্যাচার করলে তোমার সাম্রাজ্যের সূর্য অস্ত যাবে। ( শেখ সাদির পান্দুনামা, পৃ. ৪) বাংলাদেশের স্বাধীনতা রক্ষা করতে হলে এসব অসৎকর্ম থেকে বিরত থাকতে হবে। আমার সন্দেহ হয়, কোনো কোনো পরাশক্তির যে গোপন সংস্থা পৃথিবীর নানা স্থানে তাদের স্বার্থে কাজ করে যাচ্ছে, এরা হয়তো বা তাদের এজেন্ট, না হয় এক বিরাট ভুলের শিকার। ইহুদিরা শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে তাদের অসৎ কার্যকলাপের জন্য ঘৃণিত জাতি হিসে বে চিহ্নিত হয়ে আসছে। তথাপি যেহেতু তারা মানুষ, সেহেতু ষোড়শ শতাব্দীর নাট্যকার শেক্সপিয়ার তাদের উপর অত্যাচার সম্বন্ধে বলতে গিয়ে কি বলেছেন, দেখুন : Hath not a Jew eyes? Hath not x Jew hanfs, organs, dimmensions, senses, affections, passions, fed with the same food, hurt with the same weapons, subject to the same diseases, healed by the same means, warmed and cooled by the same winter and summer, as a Christian is? If you prick us. do we not bleed? If you tickle us. do we not lough? If you poison us do we not die? And if you wrong us. shall we not revenge? (SHYLOCK. The Merchent of Venice Shakespeare)

একজন ইহুদির কি চক্ষু নেই? ইহুদির কি হাত নেই, অঙ্গ নেই, মাত্রা নেই, ইন্দ্রিয় নেই, স্নেহ নেই, রোষ বা ক্রোধ নেই? তাদের কি একই খাদ্য খাওয়ানো হয় না? তারা কি একই রকম অস্ত্রে আঘাতপ্রাপ্ত হয় না? তারা কি একইরকম রোগে রোগাক্রান্ত হয় না? তারা কি একই উপায়ে রোগমুক্ত হয় না? শীতে বা গ্রীষ্মে তাদের শরীর কি একইভাবে ঠাণ্ডা বা গরম হয় না? তোমরা যদি আমাদের খোঁচা মার, আমাদের কি রক্তপাত হয় না? তোমরা যদি আমাদের কাতুকুতু দাও, তাহলে আমরা কি হাসি না? তোমরা যদি আমাদেরকে বিষ প্রয়োগ করো, তাহলে আমর া কি মরি না? তোমরা যদি আমাদের অত্যাচার করো, তাহলে আমরা কি প্রতিশোধ গ্রহণ করবো না?

এখানে শেক্সপিয়ার মানবাধিকারকেই বড় করে দেখেছেন, মানুষকে বড় করে দেখেছেন, কোনো সম্রদায় বা ধর্মাবলম্বীকে লক্ষ্য করে তিনি কথা বলেননি। তিনি বলতে চেয়েছেন, শুনহ মানুষ ভাই, সবার উপরে মানুষ সত্য তাহার উপরে নাই।

গুটি কতক লোককে একথাও বলতে শোনা যাচ্ছে, যেহেতু ধর্ম সাম্প্রদায়িকতা ও সংকীর্ণতার প্রশ্রয় দেয়, লোকের বুদ্ধিবৃত্তিকে সীমাবদ্ধ করে রাখে এবং একডিট ছক কাটা খাঁজে পরিচালিত করে, তাই অধর্মী হওয়াই ভালো। এসব কথা যে কত বড় মুর্খতার পরিচায়ক, তা বলার অপেক্ষা রাখে না। ধর্ম কোনো দিন জ্ঞান-বিজ্ঞানের প্রসরতপাকে ধারণ করে না। জ্ঞান-বিজ্ঞানে, দর্শনশাস্ত্রে, রসায়নশাস্ত্রে, পদার্থবিজ্ঞানে, অংশশাস্ত্রে, জ্যোতির্বিজ্ঞানে, সাহিত্যে, ইতিহাসে, প্রকৌশলবিদ্যায়- বলতে গেলে বিশ্ব সভ্যতার প্রত্যেক ক্ষেত্রে ধর্মের অবদান অপরিসীম। বিশ্ব সভ্যতায় যাদের অবদান রয়েছে, তাদের প্রায় সকলেই আস্তিক। নাস্তিকতার শিকার রাশিয়া আজ খান খান হয়ে গেছে। ইমাম খোমেনির কথায়- তাদের সাম্যবাদ আজ যাদুঘরে স্থান পেয়েছে। পৃথিবীর সমস্ত সমুদ্রের জল যদি বিশ্ব সভ্যতায় রয়েছে তার ব্যাখ্যা শেষ হবে না। ধর্মের জয় হোক, অধর্মের ক্ষয় হোক, আল্লাহ রাব্বুল আলামিনের কাছে এই প্রার্থনাই করি।

লেখক : প্রতিষ্ঠাতা, আল্লামা রুমি সোসাইটি

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads