• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
ইসলামী ধাঁচের বিজ্ঞাপন নির্মাণ ও প্রচার

ইসলামী চিন্তাবিদদের মতামত

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ইসলামী ধাঁচের বিজ্ঞাপন নির্মাণ ও প্রচার

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০৭ সেপ্টেম্বর ২০১৮

দিন দিন আধুনিক হচ্ছে দেশ। আধুনিক হচ্ছে মানুষ। প্রতিদিনই বাড়ছে নিত্যনতুন পণ্যের ব্যবহার। কয়েক দিন আগেও যে পণ্য সবাই আধুনিক হিসেবে ব্যবহার করেছেন। মাত্র কয়েক দিন পরেই সেটাকে ছুড়ে ফেলছে ওল্ড প্রোডাক্ট হিসেবে। আর এই ক্ষেত্রে পিছিয়ে নেই ইসলামী বিভিন্ন প্রোডাক্টও। একই প্রোডাক্ট বাজারে আসছে বিভিন্ন ডিজাইনে। প্রতিদিনই পরিবর্তন হচ্ছে প্রোডাক্টের ডিজাইন। আর এই প্রোডাক্ট সেল করার জন্য আসছে বিভিন্ন প্রকার অ্যাডভারটাইজ। এমনকি অনেক সাধারণ পণ্যের অ্যাডও তৈরি করা হচ্ছে ইসলামের ধাঁচে।

এসব বিষয় নিয়ে কথা হয় দেশের স্বনামধন্য দীনি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান জামিয়া রাহমানিয়া আরাবিয়ার প্রিন্সিপাল ও বেফাকুল মাদারিসিল আরাবিয়ার যুগ্ম মহাসচিব মাওলানা মাহফুজুল হকের সঙ্গে। তিনি বলেন, যেকোনো প্রোডাক্টের অ্যাড কোম্পানির মালিকরা তৈরি করতেই পারেন। সেই ক্ষেত্রে প্রোডাক্টটি ইসলামী প্রোডাক্ট হতে পারে আবার অন্য যেকোনো প্রোডাক্টও হতে পারে। কিন্তু বর্তমানে বিভিন্ন কোম্পানি তাদের পণ্য বেশি সেল করার জন্য ইসলামের বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অ্যাড তৈরি করছে। এটা ঠিক নয়। নিজের পণ্য বেশি সেল করার জন্য ইসলামের বিধিবিধান নিয়ে অ্যাড তৈরি করা কোনোভাবেই ঠিক নয়। যারা এ ধরনের কাজ করছেন আমি তাদের বিরত থাকতে বলব।

তিনি আরো বলেন, মানুষের মধ্যে দিন দিন নৈতিকতার অবক্ষয় ঘটছে। মানুষ আসলে কী করছে সে নিজেই বুঝতে পারছে না। অর্থ উপার্জন করা মানুষের প্রয়োজন। আর একজন মানুষ বেঁচে থাকতে হলে তাকে অর্থ উপার্জন করতেই হবে। কিন্তু এই অর্থ উপার্জন করতে গিয়ে অন্য কাউকে আঘাত করা যাবে না। যারা ইসলামী বিভিন্ন বিষয় নিয়ে অ্যাড তৈরি করছে তাদের সতর্ক করা আমাদের দায়িত্ব। তবে আমি ব্যক্তিগতভাবে তাদের সতর্ক করার কোনো উদ্যোগ গ্রহণ করিনি। 

ইসলামিক ইনস্টিটিউটের মহাপরিচালক ও বর্তমান সময়ের একজন আলোচিত সেরা কবি, ইসলামিক সংগীত শিল্পী মুহিব খান বলেন, ‘সাহিত্য-সংস্কৃতি কিংবা নাটক-সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনে এমন কিছুর উপস্থাপন করা উচিত নয় যা আমাদের সামাজিক ও ধর্মীয় মূল্যবোধের সঙ্গে সাংঘর্ষিক। এসব ক্ষেত্রে ধর্মের নামে যারা অধর্মের চর্চা করছে তাদের শাস্তির আওতায় নিয়ে আসা দরকার।’ তিনি আরো বলেন, বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে সেন্সরবোর্ড কড়াকড়ি হলে এসব সমস্যা সমাধান করা সম্ভব। তবে সাহিত্য-সংস্কৃতি, নাটক-সিনেমা এবং বিজ্ঞাপনের ক্ষেত্রে উত্তম এবং ইতিবাচকভাবে ইসলামের ভাবধারা, মূল্যবোধ, পরিভাষা ও আচরণের প্রচার হলে সেটাকে আমরা অবশ্যই সাধুবাদ জানাব।

অ্যাডের বিষয়ে আরো কথা হয় লেখক, গবেষক ও মুহাদ্দিস মাওলানা মুহাম্মদ যাইনুল আবিদীনের সঙ্গে। তিনি বলেন, ব্যবসায়ীরা তাদের বিভিন্ন পণ্য বিক্রি করার জন্য অ্যাড দেবে সেটাই স্বাভাবিক। পণ্য বিক্রি করার জন্য প্রাচার-প্রসারের বিষয়ে ইসলামে কোনো বাধা নেই। যদি সেই প্রচার না জায়েজ পন্থায় হয় সেটা আলাদা করা। কিন্তু জায়েজ পন্থায় প্রচার-প্রসার করার বিষয়ে ইসলামে কোনো বাধা নেই। তবে হ্যাঁ, কেউ যদি ইসলামের বিভিন্ন বিষয়ে অ্যাড তৈরি করে, তাহলে সেটা দেখে বলতে হবে।

আপনার প্রার্থনার মতোই ভেদাভেদ নেই রবি কলরেটেও! এই শিরোনামে গত কিছুদিন যাবৎ মোবাইল অপারেটর রবির একটি বিজ্ঞাপন নিয়ে তুমুল বিতর্কের সৃষ্টি হয়েছে। অনেকেই বলছেন, রবির সেই বিজ্ঞাপনে ইসলাম ধর্মের শিক্ষার ভুল উপস্থাপন করে দেখানো হয়েছে। বিজ্ঞাপনটির চিত্রায়ণ ও বক্তব্যের ভাষা ছিল অবাস্তব। সবচেয়ে বেশি ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া দেখা গেছে তাদের কলরেটের সঙ্গে ইবাদতের তুলনার বিষয়টি। এ ছাড়াও রুহ আফজা, লাইফবয় হ্যান্ডওয়াশ, সানসিল্ক শ্যাম্পুসহ বেশকিছু বহুজাতিক কোম্পানি তাদের পণ্যের বিজ্ঞাপনে ধর্মের বিভিন্ন বিষয় ব্যবহার করায় উদ্বেগ প্রকাশ করেছে আলেম সমাজ।

লেখক : কন্ট্রিবিউটর, পথ ও পাথেয়, বাংলাদেশের খবর

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads