• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
নামাজে মনোযোগ সৃষ্টির উপায়

নামাজ হচ্ছে মুমিনের মিরাজ

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

নামাজে মনোযোগ সৃষ্টির উপায়

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ১১ সেপ্টেম্বর ২০১৮

একাগ্রতা ছাড়া কোনো কাজই ভালো করে করা সম্ভব নয়। সে ক্ষেত্রে নামাজ হচ্ছে খুব বেশি গুরুত্বপূর্ণ। কেউ যদি নামাজে দাঁড়ায় অথচ তার নামাজে কোনো প্রকার একাগ্রতা না থাকে, তাহলে এই নামাজ তার কোনো কাজে আসবে না। বরং এই নামাজ কিয়ামতের দিন তার বিরুদ্ধে সাক্ষী দেবে।

প্রথম কাজ হচ্ছে- পরিপূর্ণভাবে পবিত্রতা অর্জন করা। পবিত্রতার ক্ষেত্রে যদি কোনো ত্রুটি থেকে যায়, তাহলে নামাজে মনোযোগ আসবে না। কারণ, সেখানে শয়তান থেকে যাবে। শয়তান এসে অসওয়াসা দেওয়ার চেষ্টা করবে। পবিত্রতার ত্রুটি নিয়েই নামাজে মনোযোগ নষ্ট করবে শয়তান।

দ্বিতীয় কাজ হচ্ছে- নামাজে ‘হুজুরে দিল’ বা অন্তরের উপস্থিতি ধরে রাখা; এটি নামাজের প্রাণ। মানুষের মন কখনো বেকার থাকে না; হয় নামাজে থাকে, না হয় অন্যত্র ঘুরে বেড়ায়। নামাজে দাঁড়ালে শয়তান বার বার মানুষের মন ছিনিয়ে নিয়ে যেতে চায়, কিন্তু মানুষকে তা ধরে রাখতে হয়। নামাজ হচ্ছে মুমিনের মিরাজ। নামাজের মাধ্যমেই মানুষ আল্লাহর সঙ্গে কথা বলে। সুতরাং নামাজে পূর্ণ মনোযোগ ধরে রাখা একান্তই কর্তব্য।

তৃতীয় কাজ হচ্ছে- নামাজে যা কিছু পড়া হয় তার অর্থ বুঝতে চেষ্টা করা। এটি অন্তরের উপস্থিতিকে আরো দৃঢ় করে। নামাজে সুরা ফাতিহা, অন্যান্য সুরা ও তাসবিহগুলোর অর্থ যখন জানা হয়ে যাবে তখন তা ভালোভাবে অনুধাবনের চেষ্টা করতে হবে।

চতুর্থ কাজ হচ্ছে- নামাজে মহান আল্লাহর মহত্ত্ব ও সম্মানের প্রতি খেয়াল রাখা। সাধারণত দুটি কারণে মনে আল্লাহর মহত্ত্ব ও ভালোবাসা সৃষ্টি হয়। এক. আল্লাহপাকের প্রতাপ ও মাহাত্ম্যের জ্ঞান লাভ করলে; যার এ জ্ঞান নেই, তার মন আল্লাহর সামনে নত হয় না। দুই. নিজের অজ্ঞতা-হীনতা-নীচতা-সীমাবদ্ধতা সম্পর্কে জানা থাকলে মানুষ আল্লাহকে মন থেকে ভক্তি-শ্রদ্ধা করতে পারে।

পঞ্চম কাজ হচ্ছে- নামাজ পড়তে হবে আল্লাহর নবীর (সা.) দেখানো সুন্নাত অনুযায়ী। নামাজ নিজের ইচ্ছামতো আদায় করলে চলবে না। মন চাইল যেভাবে-সেভাবে আদায় করলেন, নামাজই হবে না। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) এবং উমর উল খাত্তাব (রা.) বর্ণনা করেন, কোনো ব্যক্তি ৬০ বছর পর্যন্ত নামাজ আদায় করে থাকে, তার কাছ থেকে আল্লাহপাক একটা সিজদাহও কবুল করেননি। জানতে চাওয়া হলো, হে আবু হুরায়রা, এটা কীভাবে সম্ভব? তিনি বলেন, সালাতের রুকু, সিজদাহ এগুলো কোনোটাই পরিপূর্ণভাবে আদায় করেনি।

ইবাদতকে অভ্যাসে রূপান্তরিত করলে চলবে না। ইবাদতকে তার পর্যায়ে রাখতে হবে। নবীর (সা.) সুন্নাহ অনুযায়ী যদি নামাজ আদায় করা যায় তাহলে এমনিতেই এর মধ্যে মনোসংযোগ চলে আসবে।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads