• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
ইসলামে বিবেক বিশ্বাসের মর্যাদা

ইসলাম গ্রহণ করতে কাউকে বাধ্য করা যাবে না

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ইসলামে বিবেক বিশ্বাসের মর্যাদা

  • প্রকাশিত ২০ সেপ্টেম্বর ২০১৮

গাজী মুহাম্মদ জাহাঙ্গীর আলম জাবির

মানুষকে আল্লাহপাক বিবেক দান করেছেন। বিবেক দিয়ে চিন্তা করেই মানুষ সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, কর্তব্য নির্ধারণ করে। ব্যক্তি তার নিজের কল্যাণ-অকল্যাণ, ভালো-মন্দ, করণীয়-বর্জনীয় সম্পর্কে সিদ্ধান্ত নিয়ে থাকে। বিবেকের মাধ্যমে মানুষ যখন কোনো বিষয় সম্পর্কে সব দিক বিবেচনায় নিয়ে সিদ্ধান্ত গ্রহণ করে, তখন তার মনের মধ্যে যে বিষয়টি সক্রিয় থাকে সেটি হচ্ছে তার বিবেক। বিবেককে বাধাগ্রস্ত করলে মানুষের স্বাধীন সত্তাও বাধাগ্রস্ত হয়। বিবেকের স্বাধীনতার অধিকারের অর্থ হচ্ছে বিবেককে স্বাধীনভাবে কাজ করতে দেওয়ার অধিকার। ইসলাম মানুষের বিবেক ও বিশ্বাসের পূর্ণ অধিকার দান করেছে। কোনো কিছুই তার ওপর চাপিয়ে দেওয়া হয়নি বা আরোপ করা হয়নি। আল্লাহ মানুষকে সৃষ্টিই করেছেন ভালো এবং মন্দের জ্ঞান দিয়ে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘শপথ প্রাণের এবং যিনি তা সুবিন্যস্ত করেছেন, তার। অতঃপর তাকে তার অসৎ কর্ম ও সৎ কর্মের জ্ঞানদান করেছেন।’ (সুরা : আশশামস, আয়াত : ৭-৮)

ইসলাম মানুষের মুক্তি ও কল্যাণের একমাত্র আদর্শ হওয়া সত্ত্বেও আল্লাহপাক মানুষকে ইসলাম পালনে বাধ্য করেননি। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘দ্বীনের ব্যাপারে কোনো জবরদস্তি নেই। সত্যপথ ভ্রান্তপথ থেকে সুস্পষ্ট হয়ে গেছে।’ (সুরা : আল-বাকারা : ২৫৬) অর্থাৎ সত্যপথ তো সেটাই, যেদিকে ইসলাম মানবতাকে আহ্বান জানিয়েছে এবং আল্লাহর নবী-রসুল ও আসমানি গ্রন্থের মাধ্যমে সত্য-মিথ্যা সুস্পষ্ট করে দিয়ে ভ্রান্ত ধারণা ও পথসমূহকে পৃথক করে দিয়েছে। আল্লাহপাকের অভিপ্রায় এবং মুসলমানদের প্রচেষ্টা তো এই যে, সব মানবতা যেন ইসলাম প্রদর্শিত সত্য সুন্দর ও কল্যাণের পথ গ্রহণ করে নেয়। কিন্তু এ বিষয়ে কারো ওপর কোনোরূপ বলপ্রয়োগের অবকাশ নেই।

প্রত্যেকে বিবেক-বুদ্ধি দিয়ে সত্য ও সুন্দরকে গ্রহণ করবে। ইসলাম গ্রহণ করতে কাউকে বাধ্য করা যাবে না। জোর করে কাউকে কোনো কিছু গ্রহণ করতে বাধ্য করলে ওই জিনিসের শ্রেষ্ঠত্বের প্রমাণ হয় না, বরং স্বতঃস্ফূর্তভাবে যদি কোনো কিছু কেউ বরণ করে নেয়, তাহলেই তার বিশেষত্ব ও মহত্ত্ব ফুটে ওঠে। ধর্মাবলম্বী কারো সঙ্গে অহেতুক কূটতর্কে জড়িয়ে পড়া, তাদের হেয়প্রতিপন্ন করা এবং তাদের সম্মানিত ব্যক্তিত্বদের গালমন্দ করার পরিস্থিতি যাতে সৃষ্টি না হয়, সে ব্যাপারে সতর্ক করে দেওয়া হয়েছে মুসলমানদের। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘তোমরা উত্তম পন্থা ছাড়া কিতাবধারীদের সঙ্গে অহেতুক বাদানুবাদে লিপ্ত হবে না।’ (সুরা : আনকাবুত, আয়াত : ৪৬)

বর্তমান বিশ্বে যত যুদ্ধ সংঘটিত হচ্ছে, তার মূল কারণ অনুসন্ধান করলে দেখা যাবে— ধর্মীয় কারণ। একই কারণে অসংখ্য সাম্প্রদায়িক দাঙ্গা ও বিভীষিকাময় অধ্যায়ের জন্ম নিচ্ছে। ইসলাম তাই এসব জিনিসকে কঠোরভাবে নিষিদ্ধ করেছে। ইসলাম সহনশীলতা ও উদারতার ধর্ম। আল্লাহপাক আমাদের সবাইকে সঠিকভাবে ইসলাম জানার ও মানার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads