• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
বিপদ হলে ধৈর্য হারাবেন না

সব সময় মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে হবে

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

বিপদ হলে ধৈর্য হারাবেন না

  • প্রকাশিত ২৪ সেপ্টেম্বর ২০১৮

মো. আবু তালহা তারীফ

অনেক সময় বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট আমাদের ঘিরে ফেলে। তখন আমরা ধৈর্য হারিয়ে ফেলি। বর্তমানে একটু লক্ষ করলে দেখা যায় দুনিয়ায় অনেকেই নামাজ রোজা পরিহার করে জীবনের রুটিনকে ইসলামের বহির্ভূতভাবে তৈরি করে আনন্দ উল্লাসে জীবন অতিবাহিত করছে। আর মুসলমানরা খুব দুঃখ-দুর্দশার মধ্য দিয়ে জীবন অতিবাহিত করে চলেছে। মনে হয় কারাগারের কষ্টের মধ্যে জীবন যাপন করছে। একটি হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘দুনিয়া হলো মুমিনদের জন্য কারাগারস্বরূপ ও কাফেরদের জন্য জান্নাতস্বরূপ’ (মুসলিম)।

বিপদ-আপদ, সুখ-দুঃখ সব কিছুই আল্লাহর দান আর সকল কিছুর মধ্যে আল্লাহপাকের কল্যাণ রয়েছে। বিপদ-আপদ, দুঃখ-কষ্ট যাই কিছু আসুক না কেন তাতে হতাশ হওয়ার কিছু নেই। দুঃখ-কষ্ট ও বিপদ-আপদের মাধ্যমে আল্লাহপাক বান্দার পাপ মোচন করে থাকেন। রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মুমিনদের ওপর যেকোনো বিপদ-আপদ আসুক না কেন এমনকি একটা কাঁটাও যদি তার পায়ে বিঁধে থাকে, তবে তার মাধ্যমে মুমিনের পাপ মোচন হয়’ (মুসলিম)।

মানুষকে সতর্ক করার জন্য আল্লাহপাক বিপদ-আপদ দিয়ে থাকেন। মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘মানুষের কৃতকর্মের কারণেই দুনিয়ায় বিপর্যয় ও বিপদ-আপদ দেখা দেয়, যাতে করে তাদের কিছু কৃতকর্মের স্বাদ আস্বাদন করানো যায়, হয়তো তারা বিরত হবে’ (সূরা : রুম, আয়াত-৪১)।

বিপদ-আপদ হওয়ার অরেকটি কারণ হতে পারে এটি, আর সেটা হচ্ছে কে প্রকৃত মুমিন আর কে প্রকৃত মুমিন নয়— এটি পরীক্ষা করার জন্য। বিপদের সময় যে ইসলামের পথে অটল থাকতে পারে না, সে প্রকৃত মুমিন নয়। মহান আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘অবশ্যই এদের পূর্ববর্তীদেরও পরীক্ষা করেছিলেন, আল্লাহ অবশ্যই প্রকাশ করবেন কারা সত্যবাদী কারা মিথ্যাবাদী’ (সূরা: আনকাবুত, আয়াত-২)।

জীবনে বিপদ-আপদ দুঃখ-কষ্ট যখনই আসুক না কেন মানুষের কর্তব্য হলো ধৈর্য ধারণ করার মাধ্যমে তার মোকাবেলা করা। কোনো পরিস্থিতিতেই ধৈর্য হারিয়ে না ফেলা। আল্লাহপাক বিপদ দিয়েছে সুতরাং তার নিকট দোয়া করতে থাকা। হজরত সাদ ইবনে আবি ওয়াক্কাস (রা.) থেকে বর্ণিত, রাসুল (সা.) দুঃখ-কষ্টের সময় বলতেন, ‘লা ইলাহা ইল্লা আনতা সুবহানাকা ইন্নি কুনতু মিনাজ জোয়ালিমিন’ অর্থাৎ ‘তুমি ছাড়া আর কোনো মামুদ নাই তোমার পবিত্রতা বর্ণনা করছি, নিশ্চয়ই আমি সীমালঙ্ঘনকারী’ (জামে তিরমিজী)।

সর্বোপরি জীবন যে অবস্থায়ই চলুক না কেন। কোনো রকমের বিচলিত না হয়ে সব সময় মহান আল্লাহতায়ালার দরবারে শুকরিয়া আদায় করতে হবে। রাসুল (সা.) বলেন, ‘মুমিনের বিষয়টা বড়ই অদ্ভুত! যখন তার সুখের কিছু হয় আর সে শোকর আদায় করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণকর আবার যদি কোনো কষ্টের কিছু হয় আর সে সবর করে— ধৈর্য ধারণ করে, সেটাও তার জন্য কল্যাণ বয়ে আনে (মুসলিম)।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads