• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯
পশুপাখির বিষয়ে ইসলাম যা বলে

পশুপাখিকে কষ্ট দেওয়া গুনাহের কাজ

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

পশুপাখির বিষয়ে ইসলাম যা বলে

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০৪ অক্টোবর ২০১৮

আজ বিশ্ব প্রাণী দিবস। প্রাণীর অধিকার রক্ষা ও কল্যাণার্থে প্রতিবছর বিশ্বব্যাপী ৪ অক্টোবর পালিত হয় বিশ্ব প্রাণী দিবস। যুক্তরাজ্যভিত্তিক ন্যাচার ওয়াচ ফাউন্ডেশন দিবসটি সারা বিশ্বে পালন করে থাকে। মানুষের পোষা প্রাণীসহ চারপাশের নানা প্রাণী দৈনন্দিন জীবনে আমাদের অনেক উপকার করে। গাধা বোঝা টানে। কুকুর অনেকের বাড়ি পাহারা দেয়। গাভি দুধ দেয়। ঘোড়া, ভেড়া, ছাগল, বিড়ালসহ বিভিন্ন প্রাণী নানা কাজে লাগে। সেই অবদানকে মনে রাখা ও প্রাণীদের প্রতি সদয় হওয়াই হচ্ছে প্রাণী দিবসের উদ্দেশ্য। অনেক উপকার করা সত্ত্বেও আমরা অনেক সময় এসব প্রাণী নিধনসহ অনেক অমানবিক আচরণ করে থাকি। প্রাণী হিসেবে তাদের যে বেঁচে থাকার অধিকার, সে অধিকার নিশ্চিতে জনসচেতনতার উদ্দেশ্যে ১৯৩১ সালে ইতালির ফ্লোরেন্স শহরে পরিবেশ বিজ্ঞানীদের এক সম্মেলনে ৪ অক্টোবর বিশ্ব প্রাণী দিবস হিসেবে ঘোষণা করা হয়।

ইসলাম ধর্মমতে, পশুপাখির সঙ্গে যথাসম্ভব দয়াশীল আচরণ করতে হবে। এদের সঙ্গে যথেচ্ছ ব্যবহার করা যাবে না। পশুপাখির অঙ্গহানি করা নিষিদ্ধ। হজরত ইবনে ওমর (রা.) থেকে বর্ণিত, ‘রসুলুল্লাহ (সা.) ওই ব্যক্তিকে অভিশাপ দিয়েছেন, যে প্রাণীদের অঙ্গচ্ছেদ করে।’ (বুখারি : ৫১৯৫) পশুপাখিকে অহেতুক নিশানা বানানো ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহর জমিনে তাদের অবাধ বিচরণের সুযোগ দিতে হবে। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি অহেতুক কোনো চড়ুই পাখি মেরে ফেলল, কিয়ামতের দিন পাখিটি আল্লাহর কাছে এই বলে নালিশ করবে যে, হে আল্লাহ, অমুক ব্যক্তি আমাকে অহেতুক হত্যা করেছে।’ (নাসায়ি, ইবনে হিব্বান)

যেসব প্রাণী প্রতিপালন করা হয়, সেগুলোর সুস্থতা ও খাবার-দাবারের ব্যাপারে সর্বোচ্চ সতর্কতা অবলম্বন করা ওয়াজিব। মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘এসব বাক্শক্তিহীন প্রাণীর ব্যাপারে আল্লাহকে ভয় করো। সুস্থ অবস্থায় এগুলোতে আরোহণ করো, সুস্থ অবস্থায় আহার করো।’ (আবু দাউদ : ২৫৪৮)

পশুপাখির প্রতি আমাদের দৃষ্টিভঙ্গি কেমন হবে? ইসলাম ধর্মমতে, পশুপাখির প্রতি নম্রতা প্রদর্শন ইবাদতের পর্যায়ভুক্ত। পশুপাখিকে কষ্ট দেওয়া গুনাহের কাজ। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, ‘একবার এক পিপাসাকাতর কুকুর কূপের পাশে ঘোরাঘুরি করছিল। পিপাসায় তার প্রাণ বের হওয়ার উপক্রম হয়ে গিয়েছিল। হঠাৎ বনি ইসরাইলের এক ব্যভিচারী নারী তা দেখতে পায়। সে নিজের পায়ের মোজা খুলে কুকুরটিকে পানি পান করায়। এ কারণে তার অতীত পাপ ক্ষমা করে দেওয়া হয়।’ (বুখারি : ৩৪৬৭)

অন্য হাদিসে এসেছে, ‘একজন মহিলা একটি বিড়ালকে বেঁধে রেখেছিল। সে তাকে খাবার দিত না আবার ভূখণ্ডে বিচরণ করে খাবার সংগ্রহের সুযোগও দিত না। এ কারণে তাকে জাহান্নামে নিক্ষেপ করা হয়েছে।’ (বুখারি : ৩৩১৮)

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads