• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ইসলামী শিষ্টাচার

সালামের মাধ্যমে পারস্পরিক ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও বন্ধুত্ব বৃদ্ধি পায়

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ইসলামী শিষ্টাচার

  • প্রকাশিত ০৯ অক্টোবর ২০১৮

এহছানুল হক মোজাদ্দেদ

আমাদের প্রিয় নবী রসুলুল্লাহ (সা.) উম্মতের জন্য আদব তথা শিষ্টাচারের সব নিয়মই শিখিয়ে গেছেন। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর শেখানো শিষ্টাচার তথা আদবের মধ্যে রয়েছে চলাফেরা, খাদ্য-পানীয় গ্রহণ, পোশাক-পরিচ্ছদ, নিদ্রা, স্ত্রীর ভালোবাসা ও দাম্পত্য জীবনের আদবসহ আরো অনেক বিষয়। এমনকি তিনি টয়লেটে যাওয়ার শিষ্টাচারও শিখিয়েছেন উম্মতকে। হজরত সালমান ফারসি (রা.) বলেন, ‘মুশরিকরা আমাদের বলে, এ কেমন কথা! তোমাদের নবী তোমাদেরকে সবকিছুই শিক্ষা দেন, এমনকি টয়লেটের নিয়মও! তিনি বললেন, হ্যাঁ! তিনি আমাদের পায়খানা-পেশাবের সময় কিবলামুখী অথবা কিবলাকে পেছন দিয়ে বসতে নিষেধ করেছেন। ডান হাতে ঢিলা-কুলুপ ব্যবহার, তিনটির কম পাথর ঢিলা হিসেবে ব্যবহার অথবা হাড় কিংবা গোবর দিয়ে ঢিলা ব্যবহার থেকে বিরত থাকার নির্দেশ দিয়েছেন।’ (মুসলিম)

ইসলাম সমাজের সব মানুষকে সালামের মাধ্যমে একে-অপরকে অভিবাদন জানানোর প্রতি উদ্বুদ্ধ করেছে। এর ফলে পারস্পরিক ভালোবাসা, সম্প্রীতি ও বন্ধুত্ব বৃদ্ধি পায়। রসুলুল্লাহ (সা.) বলছেন, ‘তোমরা ততক্ষণ জান্নাতে প্রবেশ করবে না যতক্ষণ না ঈমান আনয়ন করো এবং তোমরা ততক্ষণ মুমিন হতে পারবে না যতক্ষণ না তোমরা পরস্পর পরস্পরকে ভালোবাস। আমি কি তোমাদের এমন কিছু বলে দেব না যা করলে তোমরা পরস্পরকে ভালোবাসতে পারবে? তোমরা পরস্পরের মধ্যে সালাম প্রসার  করো।’ (মুসলিম) কেউ যদি কাউকে সালাম বলে তবে তার জন্য সালামের জবাব দেওয়া ওয়াজিব। আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘যখন তোমরা সালাম ও অভিবাদনপ্রাপ্ত হও, তখন তোমরা তার চেয়ে শ্রেষ্ঠতর সম্ভাষণ করো অথবা একইভাবে অভিবাদন করো। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব বিষয়ে হিসাব গ্রহণকারী।’ (সুরা নিসা, আয়াত : ৮৬) কে প্রথমে সালাম বলবে? নবী (সা.) বলেছেন, ‘একজন আরোহী পথচারীকে সালাম বলবে, একজন পথচারী বসা ব্যক্তিকে সালাম বলবে এবং ছোট দল বড় দলকে সালাম বলবে।’ (মুসলিম)

ইসলাম ঘরে প্রবেশের আদব সম্পর্কে বলেছে, ‘হে ঈমানদারগণ! তোমরা নিজেদের ঘর ছাড়া অন্য কারো ঘরে অনুমতি না নিয়ে এবং তাদের সালাম না করে প্রবেশ করো না।’ (সুরা নূর, আয়াত-২৭)

খাওয়া-দাওয়ার আদব সম্পর্কে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘আল্লাহর নাম নিয়ে ডান হাতে খাও এবং নিজের সামনে থেকে খাও।’ (বুখারি) ইবনে আব্বাস (রা.) বর্ণনা করেছেন, রসুলুল্লাহ (সা.) পাত্রের মধ্যে শ্বাস ত্যাগ করতে বা ফুঁ দিতে নিষেধ করেছেন। (আবু দাউদ)

এভাবেই রসুল (সা.) আমাদের জীবনের প্রতিটি ক্ষেত্রে শিষ্টাচার কী হবে, তা হাতে-কলমে শিখিয়ে গেছেন। এসব মেনে চললে আমাদের দুনিয়ার জীবন যেমন ঈমানের আলোয় আলোকিত হবে, তেমনি আখিরাতেও সুন্নাহের আলোকে নবীজীর সঙ্গে সরাসরি জান্নাত নসিব হবে। আল্লাহপাক আমাদের কোরআন সুন্নাহর আলোকে জীবন পরিচালনা করার তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : গবেষক ও টিভির ইসলামী উপস্থাপক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads