• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
ইসলামে দান-সদকার গুরুত্ব

দান শুধু অর্থ বা সম্পদ প্রদানে সীমাবদ্ধ নয়

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ইসলামে দান-সদকার গুরুত্ব

  • প্রকাশিত ১৪ অক্টোবর ২০১৮

মো. এহছানুল হক মোজাদ্দেদী

ইসলাম ধর্মে দান বা সদকার গুরুত্ব অপরিসীম। দান করার জন্য ধনী হওয়ার প্রয়োজন নেই, সুন্দর একটা ইচ্ছাই যথেষ্ট। দান শুধু অর্থ বা সম্পদ প্রদানে সীমাবদ্ধ নয়। কারো শুভ কামনা, সুন্দর ব্যবহার, সুপরামর্শ, পথহারাকে পথ দেখানো, পথ থেকে অনিষ্টকারী বস্তু সরিয়ে ফেলা— এ জাতীয় সব কর্মই দান। দান সম্পর্কে পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘মুমিনগণ! তোমাদের ধন-সম্পদ ও সন্তান-সন্ততি যেন তোমাদের আল্লাহর স্মরণ থেকে গাফেল না করে। যারা এ কারণে গাফেল হয়, তারাই তো ক্ষতিগ্রস্ত। আমি তোমাদের যা দিয়েছি, তা থেকে মৃত্যু আসার আগেই ব্যয় কর। অন্যথায় সে বলবে, হে আমার পালনকর্তা, আমাকে আরো কিছুকাল অবকাশ দিলেন না কেন? তাহলে আমি সদকা করতাম এবং সৎকর্মীদের অন্তর্ভুক্ত হতাম।’ (সুরা মুনাফিকুন : ৯-১০)।

দান-সদকার গুরুত্ব বোঝাতে গিয়ে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘খেজুরের একটি টুকরা দান করে হলেও তোমরা জাহান্নামের আগুন থেকে বাঁচার চেষ্টা কর।’ (বোখারি ও মুসলিম)। হজরত উকবা বিন আমের (রা.) থেকে বর্ণিত- নবী করিম (সা.) বলেছেন, ‘নিশ্চয়ই দান-সদকা কবরের আজাব বন্ধ করে দেয়। আর কিয়ামতের দিন বান্দাকে আরশের ছায়ার নিচে জায়গা করে দেয়।’ (তাবরানি ও বায়হাকি)। হজরত আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত- হাদিসে রসুল (সা.) বলেছেন, ‘মানুষের জীবদ্দশায় এক দিরহাম দান করা, তার মৃত্যুর পর এক শত দিরহাম দান করার চেয়ে উত্তম।’ (আবু দাউদ মিশকাত)। হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত- হাদিসে রসুল (সা.) আরো বলেন, ‘দান সম্পদ কমায় না, দান দ্বারা আল্লাহপাক বান্দার সম্মান বৃদ্ধি ছাড়া কমায় না। কেউ আল্লাহর সন্তুষ্টির জন্য বিনয় প্রকাশ করলে আল্লাহপাক তাকে বড় করেন।’ (মুসলিম)।

হজরত আবু হুরাযরা (রা.) থেকে বর্ণিত- রসুল (সা.) বলেছেন, ‘এমন কোনো দিন যায় না যে দিন দু’জন ফেরেশতা পৃথিবীতে আগমন করেন না, তাদের একজন দানশীল ব্যক্তির জন্য দোয়া করতে থাকেন এবং বলেন, হে আল্লাহ! আপনি দানশীল ব্যক্তিকে উত্তম বদলা দিন। দ্বিতীয় ফেরেশতা কৃপণের বিরুদ্ধে আল্লাহর কাছে অভিশাপ করে বলেন, হে আল্লাহ! কৃপণকে ধ্বংস ও বরবাদ করুন।’ (বোখারি-মুসলিম)।

রসুল (সা.) বলেছেন, ‘দানকারী আল্লাহর নিকটতম, বেহেশতের কাছাকাছি এবং মানুষের ঘনিষ্ঠ হয়ে থাকে, আর দূরে থাকে ভয়াবহ দোজখ থেকে। পক্ষান্তরে কৃপণ অবস্থান করে আল্লাহ থেকে দূরে, বেহেশতের বিপরীতে এবং মানুষের শুভকামনা থেকে দূরে অথচ দোজখের একান্ত সন্নিকটে। জাহেল দাতা, বখিল আবেদের চেয়ে আল্লাহর কাছে অবশ্যই বেশি প্রিয়।’ (তিরমিজি)। তাই আমাদের সবার উচিত গরিব-দুঃখী, অভাবী আত্মীয়স্বজন ও আপনজনদের বেশি দান-সদকা করা। আল্লাহপাক আমাদের তাওফিক দান করুন। আমিন।

লেখক : গবেষক ও টিভির ইসলামী উপস্থাপক

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads