• মঙ্গলবার, ১৯ মার্চ ২০২৪, ৫ চৈত্র ১৪২৮
ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম

ইসলামের শিক্ষা হলো, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ২২ অক্টোবর ২০১৮

ইসলাম শান্তি ও সম্প্রীতির ধর্ম। ইসলাম নিজেদের মতো অন্যদেরও ভালোবাসতে উদ্বুদ্ধ করে। ইসলাম মানুষকে নিজের, স্বজনের, সমাজের, স্বদেশের তথা বিশ্ববাসীর কল্যাণের জন্য সক্রিয় ভূমিকা পালনে ও ত্যাগ স্বীকারের প্রেরণা জোগায়। আর এতেই বিশ্ববাসীর জীবনধারায় নেমে আসে প্রশান্তি আর বিদূরিত হয় অশান্তি, হিংসা, বিদ্বেষ এবং হানাহানি। ইসলামের শিক্ষা হলো, মানুষে মানুষে কোনো ভেদাভেদ নেই। সাদা-কালো সব মানুষই আল্লাহর বান্দা। সমগ্র মানবজাতি একই পরিবারভুক্ত। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, সব সৃষ্টি আল্লাহর পরিবারের ন্যায়।

বস্তুত মানব জাতি একটি দেশের মতো। কেননা আমরা সবাই আদম (আ.) ও হাওয়ার (আ.) সন্তান। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, হে মানুষ! আমি তোমাদেরকে সৃষ্টি করেছি একজন পুরুষ ও একজন স্ত্রী থেকে, পরে তোমাদেরকে বিভক্ত করেছি বিভিন্ন জাতি ও গোত্রে, যাতে তোমরা একে অপরের সঙ্গে পরিচিত হতে পার। তোমাদের মধ্যে আল্লাহর নিকট সে ব্যক্তিই অধিক মর্যাদাসম্পন্ন যে অধিক মুত্তাকী। নিশ্চয়ই আল্লাহ সব কিছু জানেন, সব খবর রাখেন। (সুরা : হুজুরাত, আয়াত : ১৩)।

মানুষের দৈনন্দিন জীবনযাপনে প্রাণী ও প্রাকৃতিক সম্পদ আবশ্যক। তাই পৃথিবীতে শান্তি ও সমৃদ্ধির লক্ষ্যে ইসলাম শুধু মানুষের প্রতিই সদয় ব্যবহারের নির্দেশ দেয়নি, উপরন্তু প্রাণীর পরিচর্যা, প্রাকৃতিক সম্পদ ও উদ্ভিদের যথার্থ ব্যবহার সম্পর্কেও ইসলাম গুরুত্ব আরোপ করেছে। রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, যারা দয়া করে, দয়াময় আল্লাহ তাদের প্রতি দয়া করেন। তোমরা পৃথিবীবাসীদের প্রতি দয়া কর, তাহলে আকাশবাসী (আল্লাহ) তোমাদের প্রতি দয়া করবেন। (তিরমিজি)।

হজরত আবদুল্লাহ ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত- একদিন তিনি রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে আরাফার ময়দান থেকে মুজদালিফার দিকে যাচ্ছিলেন। তখন নবী করিম (সা.) তার পেছনে উট হাঁকানো এবং প্রহারের আওয়াজ শুনতে পেলেন। তিনি তাদের দিকে ফিরে চাবুক দিয়ে ইশারা করে বললেন, হে লোকসকল! তোমরা ধীর-স্থিরভাবে চল। কেননা উট দৌড়িয়ে নিয়ে যাওয়া কোনো নেকির কাজ নয়। (মিশ্কাত)।

মোটকথা সব সৃষ্টি জড়, অজড়, প্রাণী ও প্রকৃতি সবাই ইসলামের উদারতায় উদ্ভাসিত। ইসলাম শুধু বিশ্বাসভিত্তিক ধর্ম নয়, বরং তা বিশ্বাস ও কর্মের এক সুষম সমন্বয়ের বাস্তব অভিব্যক্তি। সে জন্যই বৈরাগ্য ইসলামে নিষিদ্ধ। আল্লাহপাক ইরশাদ করেন : আমি জিন ও ইনসানকে শুধু ইবাদতের জন্যই সৃষ্টি করেছি। (সুরা : যারিয়াত, আয়াত : ৫৬)। উল্লিখিত আয়াতে যে ইবাদতের কথা ব্যক্ত হয়েছে, সে ইবাদত শুধু নামাজ, রোজা, হজ, জাকাত ইত্যাদিতে সীমাবদ্ধ নয়। বরং উপরোক্ত আমলের আগে-পরে কর্মমুখর মুহূর্তগুলোতেও আল্লাহকে বেশি বেশি স্মরণ করতে হবে, যেন বৈষয়িক লোভ-লালসায় পড়ে কেউ পদভ্রষ্ট ও বিপদগামী না হয়ে যায়। প্রতিদিনের সব কাজকর্মে আল্লাহ্র নির্দেশ পালন ও রসুলুল্লাহ (সা.)-এর আদর্শের অনুসরণই হলো উল্লিখিত আয়াতে ইবাদতের মূল তাৎপর্য।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads