• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ধর্ম

এতিম, দুস্থ ও মজলুমের প্রতি দায়িত্ব ও কর্তব্য

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০২ ডিসেম্বর ২০১৮

ইসলামী জীবন বিধানে মুসলমানরা পরস্পর ভাই ভাই। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, মুমিনরা একে অন্যের ভাই। (সুরা হুজুরাত, আয়াত : ১০) একটি হাদিসে এসেছে, রসুলুল্লাহ (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক মুসলমান পরস্পর ভাই ভাই। তিনি আরো বলেছেন, সমগ্র সৃষ্টি আল্লাহর পরিজন। আল্লাহর কাছে প্রিয় হলো যে তার সৃষ্টির প্রতি সদয় আচরণ করে। ইসলাম সব মানুষের সঙ্গে সদাচারের শিক্ষা দেয়। বিশেষ করে সমাজের এতিম, দুস্থ, অসহায় ও মজলুম মানুষকে সহায়তা দানের প্রতি ইসলাম অধিক গুরুত্ব আরোপ করে। আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনের বিভিন্ন স্থানে সমাজের সব মানুষকে এতিম, দুস্থ ও মজলুম মানুষের প্রতি কর্তব্য ও দায়িত্ব পালনের জন্য উদ্বুদ্ধ করে বিভিন্নভাবে নির্দেশ দিয়েছেন। এতিমের হক আদায় না করা ও মিসকিনদের খাবার না দেওয়ার প্রতি ভর্ৎসনা করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, তুমি কি এমন লোককে দেখেছ, যে দীনকে অস্বীকার করে? সে তো ওই ব্যক্তি যে এতিমকে রূঢ়ভাবে তাড়িয়ে দেয়, আর সে মিসকিনদের খাবারদানে মানুষকে অনুৎসাহিত করে। (সুরা মাউন, আয়াত : ১-৩)

এতিমদের সম্মান না করার অর্থ তাদের প্রাপ্য আদায় না করা এবং তাদের প্রয়োজনীয় ব্যয়ভার বহন না করা। যারা দুনিয়ার জীবনে এতিম, মিসকিন ও বন্দিদের উপকার করে, আল্লাহতায়ালা তাদের আখিরাতে জান্নাত ও জান্নাতের বহু নিয়ামত দেবেন বলে ঘোষণা করেছেন। এতিম ও মিসকিনদের প্রতি সহায়তা দান জান্নাতি মানুষের স্বভাব। ইসলাম অসহায় ও দুস্থ মানুষের প্রতি সহানুভূতি দেখানোর জন্য বিশেষভাবে উদ্বুদ্ধ করে। প্রত্যেক মানুষকে ইসলাম শিক্ষা দেয় পরস্পরকে ভালোবাসতে। অন্তত কেউ যেন অন্যকে কোনোভাবে কষ্ট না দেয় এবং কারো প্রতি জুলুম-অত্যাচার না করে, সেই মনোভাবাপন্ন করে গড়ে তোলে। আল-কোরআন আজকের মুসলিম উম্মাহকে লক্ষ্য করে বলেছে, তোমরা শ্রেষ্ঠ জাতি! তোমাদের আবির্ভাব হয়েছে মানুষের কল্যাণের জন্য। (সুরা আলে ইমরান, আয়াতে : ১১০)

মুসলমানরা আবির্ভূত হয়েছে সব মানুষের সঠিক ও প্রকৃত কল্যাণ সাধনের জন্য। এ হচ্ছে মুসলিম উম্মাহর সামগ্রিক দায়িত্ব। আর প্রত্যেক মুসলমান ব্যক্তিগত পর্যায়েও মানুষের কল্যাণ সাধনে আত্মনিয়োগ করবে। কমপক্ষে অন্তত কেউ যেন কষ্ট না পায়; অথবা কারো প্রতি যেন কোনো জুলুম না হয়, তার প্রতি সচেতন থাকা মুসলমান মাত্রেরই কর্তব্য। মজলুমকে সাহায্য করা এবং জালিমকে বাধা দেওয়া ঈমানি দায়িত্ব। কোনো মুসলমান যদি এর বিপরীত করে অর্থাৎ মজলুমকে জালিমের হাত থেকে রক্ষার চেষ্টা না করে, অথবা জালিমকে বাধা না দেয়; তবে সে ব্যক্তি ইসলামের অবারিত নিয়ামত থেকে বঞ্চিত হবে।

 

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads