• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

ইসলামে রাষ্ট্রনীতির গুরুত্ব

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০৩ ডিসেম্বর ২০১৮

ইসলামের বহু শাখা-প্রশাখার মধ্যে রাষ্ট্রনীতিও অন্যতম শাখা। তাওরাতেও এ সম্পর্কে বিধিবিধান রয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, আমি তাওরাত নাজিল করেছি। তাতে ছিল পথ নির্দেশ ও আলো।

সব নবী, যারা মুসলিম ছিল, সে অনুযায়ী এ ইহুদি হয়ে যাওয়া লোকদের যাবতীয় বিষয়ের ফায়সালা করত। আর এভাবে রব্বানী ও আহবারও (এরি ওপর তাদের ফায়সালার ভিত্তি স্থাপন করত)।  কারণ তাদেরকে আল্লাহর কিতাব সংরক্ষণের দায়িত্ব দেওয়া হয়েছিল এবং তারা ছিল এর ওপর সাক্ষী।

কাজেই (হে ইহুদি গোষ্ঠী!) তোমরা মানুষকে ভয় কর না বরং আমাকে ভয় কর এবং সামান্য তুচ্ছ মূল্যের বিনিময়ে আমার আয়াত বিক্রি করা পরিহার কর। আল্লাহর নাজিল করা আইন অনুযায়ী যারা ফায়সালা করে না তারাই কাফের। (সূরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৪)। অন্য একটি আয়াতে আরো ইরশাদ করা হয়েছে, আমি তাদের জন্য তাতে বিধান দিয়েছিলাম যে, প্রাণের বদলে প্রাণ, চোখের বদলে চোখ, নাকের বদলে নাক; কানের বদলে কান, দাঁতের বদলে দাঁত এবং যখমের বদলে অনুরূপ যখম। তারপর কেউ তা ক্ষমা করলে তাতে তারই পাপ মোচন হবে। আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুসারে যারা বিধান দেয় না তারাই জালিম। (সূরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৫)

রাসুলুল্লাহ (সা.)-কে সম্বোধন করে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, আমি আপনার প্রতি সত্যসহ কিতাব অবতীর্ণ করেছি এর পূর্বে অবতীর্ণ কিতাবের সমর্থক ও সংরক্ষকরূপে। সুতরাং আল্লাহ যা অবতীর্ণ করেছেন সে অনুসারে আপনি তাদের বিচার নিষ্পত্তি করবেন এবং যে সত্য আপনার নিকট এসেছে তা ত্যাগ করে তাদের খেয়াল-খুশির অনুসরণ করবেন না। (সূরা : মায়িদা, আয়াত : ৪৮),

তিনি আরো ইরশাদ করেন, তবে কি তারা জাহিলি যুগের বিধি-বিধান কামনা করে? বিশ্বাসী সম্প্রদায়ের জন্য বিধান দানে আল্লাহ অপেক্ষা কে শ্রেষ্ঠতর? (সূরা মায়িদা, ৫: ৫০)।

উপরোক্ত আয়াতসমূহে হজরত মুসা (আ.)-এর শরিয়াত, হজরত ঈসা (আ.)-এর শরিয়াত এবং আমাদের শেষ নবী হজরত মুহাম্মাদ (সা.)-এর শরিয়াতের উল্লেখ রয়েছে। উক্ত তিনটি শরিয়াতেরই সম্মিলিত সিদ্ধান্ত এই যে, রাষ্ট্রনীতিসহ সব বিষয়ে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানমতে ফায়সালা করতে হবে। অতএব রাষ্ট্রীয় বিষয়ে কোনো ফায়সালা দেওয়ার পূর্বে সে সম্বন্ধে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধান অনুসন্ধান করা শাসকের জন্য অপরিহার্য। কেননা এগুলো জানা ব্যতিরেকে জনগণের মাঝে ন্যায়ের শাসন ও সুবিচার প্রতিষ্ঠা করা সম্ভব নয়। পক্ষান্তরে যারা রাষ্ট্রীয় ব্যাপারে আল্লাহর অবতীর্ণ বিধানের অনুসরণ করেন না, তাদের কাফির, জালিম এবং ফাসিক বলে আখ্যায়িত করা হয়েছে। যদিও উলামায়ে কিরামের মতে এই কুফরি প্রকৃত কুফরির সমপর্যায়ের নয় এবং এতে সংশ্লিষ্ট ব্যক্তি ইসলামের সীমানা থেকে খারিজ হয়ে যায় না; যদি তার আকিদা-বিশ্বাসের মধ্যে কোনো বিভ্রান্তি না থাকে।

 

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads