• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

জীবিকা উপার্জনের প্রয়োজনীয়তা

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ০৪ ডিসেম্বর ২০১৮

মানব জীবনে জীবিকার প্রয়োজনীয়তা অনস্বীকার্য। নিজ নিজ যোগ্যতা অনুযায়ী জীবিকার জন্য পরিশ্রম ও চেষ্টা-তদবির করা প্রতিটি মানুষের কর্তব্য। আল্লাহপাক হলেন রিজিকদাতা। তবে রিজিক অন্বেষণ করার দায়িত্ব তিনি বান্দার ওপর অর্পণ করেছেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করা হয়েছে, ‘সালাত সমাপ্ত হলে তোমরা পৃথিবীতে ছড়িয়ে পড়বে এবং আল্লাহর অনুগ্রহ (রিজিক) সন্ধান করবে।’ (সুরা জুমুআ, ৬২ : ১০) অন্য একটি আয়াতে আল্লাহপাক আরো ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা জীবনোপকরণ কামনা কর আল্লাহর কাছে এবং তাঁরই ইবাদত কর আর তাঁর প্রতিই কৃতজ্ঞতা প্রকাশ কর।’ (সুরা আনকাবুত, আয়াত : ১৭) হজরত উমর ইবন খাত্তাব (রা.) বলেন, তোমাদের কেউ যেন জীবিকার অন্বেষণ ছেড়ে অলসভাবে বসে না থাকে। অর্থাৎ বৈধ জীবিকার কোনো একটির অবলম্বন করা প্রতিটি মানুষের জন্য একান্ত প্রয়োজন।

ইসলামে উপার্জনের গুরুত্ব অনেক। তবে তা হালাল উপায়ে হওয়া আবশ্যক। পবিত্র কোরআন ও হাদিসে এ সম্পর্কে বিশেষ তাগিদ দেওয়া হয়েছে। পবিত্র কোরআনে আল্লাহপাক ইরশাদ করেছেন, ‘হে মানবজাতি! পৃথিবীতে যা কিছু বৈধ ও পবিত্র খাদ্যবস্তু তা থেকে তোমরা আহার কর এবং শয়তানের পদাঙ্ক অনুসরণ করো না। নিশ্চয়ই সে তোমাদের প্রকাশ্য শত্রু।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৬৮) রসুলুল্লাহ (সা.) একটি হাদিসে বলেছেন, হালাল রুজি সন্ধান করা ফরজের পর একটি ফরজ। তিনি অন্য আরেকটি হাদিসে বলেছেন, আল্লাহপাক পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া অন্য কিছু কবুল করেন না। আহারের ব্যাপারে তিনি নবী-রসুলগণকে যেরূপ হুকুম করেছেন, মুমিনদেরও অনুরূপ হুকুম করেছেন। তিনি নবী-রসুলগণকে সম্বোধন করে পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘হে রসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু থেকে আহার কর ও সৎকর্ম কর; তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আমি সবিশেষ অবহিত।’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৫১) তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, ‘হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে হালাল রিজিক দান করেছি তা থেকে আহার কর।’ (সুরা বাকারা, ২:১৭২)

তারপর রসুলুল্লাহ (সা.) একজন ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করে বলেন, ‘এক ব্যক্তি দীর্ঘ পথ সফর করে উশকোখুশকো অবস্থায় উভয় হাত আসমানের দিকে উঠিয়ে মোনাজাত করে বলল, ‘হে আমার রব! হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রভু!’ অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় বস্তু হারাম, তার লেবাস-পোশাক হারাম এবং হারাম মালের দ্বারাই তার জীবন লালিত-পালিত। এ অবস্থায় ওই ব্যক্তির দোয়া কেমন করে কবুল হবে। অন্য একটি হাদিসে এসেছে, যে দেহ হারাম মাল দ্বারা লালিত-পালিত, তা কখনো জান্নাতে যাবে না এবং জাহান্নামই এর জন্য উপযুক্ত ঠিকানা। উপরোক্ত আয়াত ও হাদিসের আলোকে হালাল উপার্জনের গুরুত্ব ও হারাম উপার্জনের অপকারিতা সুস্পষ্টভাবে প্রতীয়মান হয়।

 

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads