• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
অবৈধ উপার্জন সম্পর্কে ইসলাম কী বলে

অবৈধ উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বা উপার্জন করা হারাম

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

অবৈধ উপার্জন সম্পর্কে ইসলাম কী বলে

  • ওয়ালি উল্লাহ সিরাজ
  • প্রকাশিত ১৯ ডিসেম্বর ২০১৮

হালাল উপায়ে উপার্জন করা ফরজ এবং হারাম ও অবৈধ উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য বা উপার্জন করা হারাম। অবৈধ উপায়ে ব্যবসা-বাণিজ্য করে যে অর্থসম্পদ হাসিল করা হয়, তা আহার করে নামাজ-রোজা আদায় করলে তা আল্লাহর দরবারে কবুল হয় না। তার দোয়াও কবুল হয় না। এমনকি এ অবৈধ সম্পদ দ্বারা কোনো নেককাজ করলে তাও আল্লাহর কাছে গ্রহণযোগ্য হয় না। সর্বোপরি উপরোক্ত ব্যক্তি আল্লাহর রহমত থেকে বঞ্চিত থাকবে। রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, কোনো ব্যক্তি যদি অবৈধ পন্থায় হারাম মাল লাভ করে সাদাকা করে, তবু তা গ্রহণযোগ্য হবে না। এভাবে সে যদি এই মাল থেকে নিজের প্রয়োজনে খরচ করে, তাতেও বরকত হবে না। যদি সে হারাম মাল ত্যাজ্য সম্পদ হিসাবে রেখে যায়, তবে তা তাকে জাহান্নাম পর্যন্ত পৌঁছে দেবে। আল্লাহপাক মন্দকে মন্দের মাধ্যমে দূরীভূত করেন না (অর্থাৎ হারাম মালের সাদাকা কারো পাপ মোচনের কারণ হিসেবে বিবেচিত হয় না)। কিন্তু তিনি মন্দকে সৎকর্মের দ্বারা পরিচ্ছন্ন করেন। কেননা কোন নাপাক অপর নাপাককে মেটাতে পারে না।

অপর এক হাদিসে আছে, রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আল্লাহপাক পবিত্র। তিনি পবিত্র ছাড়া অন্য কিছু কবুল করেন না। আহারের ব্যাপারে তিনি নবী-রসুলগণকে যেরূপ হুকুম করেছেন, মুমিনদেরও অনুরূপ হুকুম করেছেন। তিনি নবী-রসুলগণকে সম্বোধন করে ইরশাদ করেছেন, হে রসুলগণ! তোমরা পবিত্র বস্তু হতে আহার কর ও সৎকর্ম কর; তোমরা যা কর সে সম্পর্কে আমি সবিশেষ অবহিত’ (সুরা মুমিনুন, আয়াত : ৫১)। তিনি আরো ইরশাদ করেছেন, হে মুমিনগণ! আমি তোমাদের যে হালাল রিজিক দান করেছি তা থেকে আহার কর (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৭২)।

অন্য হাদিসে এসেছে, যে দেহ হারাম মাল দ্বারা লালিত-পালিত, তা কখনো জান্নাতে যাবে না ; বরং জাহান্নামই এর উপযুক্ত ঠিকানা। এতে এ কথা প্রতীয়মান হয় যে, অবৈধ পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য জায়েজ নেই। অনুরূপভাবে অপসংস্কৃতির মাধ্যমে উপার্জন করাও জায়েজ নেই। যেমন গান-বাজনা, সিনেমা, থিয়েটার, সার্কাস ইত্যাদি। এগুলোর মাধ্যমে অর্থ উপার্জন করা জায়েজ নয়।

একটি হাদিসের শেষাংশে তিনি জনৈক ব্যক্তির অবস্থা সম্পর্কে আলোচনা করে বলেন : এক ব্যক্তি দীর্ঘ পথ সফর করে উশকো-খুশকো অবস্থায় উভয় হাত আসমানের দিকে উঠিয়ে মোনাজাত করে বলল, হে আমার রব! হে আমার প্রতিপালক! হে আমার প্রভু! অথচ তার খাদ্য হারাম, তার পানীয় বস্তু হারাম, তার লেবাস-পোশাক হারাম এবং হারাম মালের দ্বারাই তার জীবন লালিত-পালিত। এ অবস্থায় এ ব্যক্তির দোয়া কেমন করে কবুল হবে?

এতে এটা প্রতীয়মান হয়, অবৈধ পদ্ধতিতে ব্যবসা-বাণিজ্য জায়েজ নয়। অনুরূপভাবে অপসংস্কৃতির মাধ্যমে উপার্জন করাও জায়েজ নেই। যেমন গান-বাজনা, সিনেমা, থিয়েটার, সার্কাস ইত্যাদি।

লেখক : আলেম ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads