• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

আল্লাহর ফয়সালায় খুশি থাকতে হবে

  • মুফতি মুহাম্মদ আল আমিন
  • প্রকাশিত ১৩ জানুয়ারি ২০১৯

আমাদের হায়াত-মউতের মালিক আল্লাহ। রিজিকের মালিক আল্লাহ। ভালো-মন্দের মালিক আল্লাহ। উপকার অপকার করার ক্ষমতা একমাত্র আল্লাহর। এই বিশ্বাস সবার অন্তরে থাকতে হবে। তাই যে কোনো বিপদ-আপদে বা খুশির মুহূর্তে আল্লাহর সিদ্ধান্তে খুশি থাকতে হবে। এটা ইমানের দাবি। হজরত সাদ (রা.) হতে বর্ণিত রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, মানুষের সৌভাগ্য হলো, আল্লাহর সিদ্ধান্তের ওপর খুশি থাকা। আর মানুষের দুর্ভাগ্য হলো, আল্লাহর কাছে কল্যাণ কামনা না করা। আর এটাও মানুষের দুর্ভাগ্য যে, আল্লাহর সিদ্ধান্তে অসন্তোষ প্রকাশ করা। (আহমদ, তিরমিজি)

হজরত জাবের (রা.) থেকে উল্লেখ হয়েছে, একবার তিনি নজদ এলাকায় এক যুদ্ধের অভিযানে নবী করিম (সা.)-এর সঙ্গে ছিলেন। যখন রসুল (সা.) প্রত্যাবর্তন করলেন, তখনো তিনি তার সঙ্গে ছিলেন। সাহাবারা দ্বিপ্রহরকালে কাঁটাওয়ালা বৃক্ষপূর্ণ একটি উপত্যকায় পৌঁছলেন। রসুল (সা.) একটি বাবলা গাছের নিচে অবতরণ করে গাছের শাখায় তার তরবারিখানা ঝুলিয়ে রাখলেন। এদিকে আমরাও শুয়ে পড়লাম। এমন সময় রসুল (সা.) আমাদের ডাকতে লাগলেন। আমরা গিয়ে দেখলাম, তার কাছে এই বেদুঈন ব্যক্তি। রসুল (সা.) বললেন, আমি ঘুমিয়ে পড়েছিলাম, সে সুযোগে এ লোকটি আমার ওপর আমার তরবারিটি উত্তোলন করেছিল। আমি হঠাৎ জাগ্রত হয়ে দেখলাম তার হাতে কোষমুক্ত তরবারি। সে আমাকে লক্ষ্য করে বলল, বল, এখন আমার হাত থেকে কে তোমাকে রক্ষা করবে? আমি বললাম, আল্লাহ, আল্লাহ, আল্লাহ— তিনবার। এতে তরবারিখানা নিচে পড়ে গেল। তখন রসুল (সা.) তরবারিখানা নিজের হাতে তুলে নিয়ে বললেন, এখন কে তোমাকে আমার হাত থেকে রক্ষা করবে? তখন বেদুঈন বলল, আমি আশা করি, আপনি উত্তম তরবারি ধারণকারী হবেন। অর্থাৎ আমাকে মার্জনা করবেন। তখন রসুল (সা.) বললেন, তুমি এ সাক্ষ্য দাও যে, আল্লাহ ছাড়া কোনো উপাস্য নেই এবং আমি নিশ্চয়ই আল্লাহর রসুল। এতে বেদুঈন বলল, আমি এটা বলব না; কিন্তু আপনার সঙ্গে এ ওয়াদা করছি যে, আমি আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করব না এবং ওইসব লোকের সঙ্গেও থাকব না যারা আপনার বিরুদ্ধে যুদ্ধ করে। অতঃপর রসুল (সা.) তাকে ছেড়ে দিলেন। সে তখন তার সঙ্গীদের কাছে ফিরে এসে বলল, আমি মানবজাতির শ্রেষ্ঠ ব্যক্তির কাছ থেকে তোমাদের কাছে ফিরে এসেছি। (বুখারি)

আমাদের স্মরণে রাখতে হবে মহানবী (সা.)-এর উপদেশ, তুমি কখনো কারো কাছে কিছু চাইতে ইচ্ছা করলে আল্লাহর কাছেই চাইবে এবং কখনো কারো সাহায্য চাইতে হলে আল্লাহর সাহায্যই চাইবে। জেনে রেখো, সমগ্র সৃষ্টি একত্র হয়ে তোমার কোনো উপকার করতে চাইলে, আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া তোমার কোনো উপকার করতে সক্ষম হবে না। পক্ষান্তরে, সমগ্র সৃষ্টি একযোগে তোমার কোনো ক্ষতি করতে চাইলে আল্লাহর নির্ধারিত পরিমাণ ছাড়া ক্ষতি করতে পারবে না। (আহমদ, তিরমিজি)

 

লেখক : খতিব, সমিতি বাজার মসজিদ, নাখালপাড়া, ঢাকা

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads