• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

ধর্ম

অপচয়কারীকে আল্লাহ পছন্দ করেন না

  • আবু রোকাইয়া
  • প্রকাশিত ২০ জানুয়ারি ২০১৯

আমাদের সমাজে বিয়ে বা সুন্নতে খাৎনার অনুষ্ঠান হয়ে থাকে। আমরা আত্মীয়-স্বজন বা বন্ধু-বান্ধবের আমন্ত্রণে বিভিন্ন সময় দাওয়াত খেতে যাই। খাবার টেবিলে বসার পর অপেক্ষায় থাকি কখন খাবার পরিবেশন করা হবে। সেই খাবার খাওয়ার সময় অনেকে পাতে তুলে নেন রোস্ট বা খাসির রেজালা। কিন্তু দেখা যায় পরে আর শেষ করতে পারেন না। পাত থেকে তুলে উচ্ছিষ্ট হিসেবে অন্য প্লেটে ফেলে দেন। এটা খুবই খারাপ। এতে যে শুধু কবিরা গুনাহ হচ্ছে তা-ই নয়, সামাজিকভাবেই তা দৃষ্টিকটু।

এ প্রসঙ্গে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘তোমরা অপচয় করো না। অপচয়কারীকে আল্লাহ ভালোবাসেন না।’ খাবার নষ্ট করার আগে কেউ ভাবে না যে, কত মানুষ এখনো না খেয়ে আছে। একসময় আমাদের বলা হতো মাছে-ভাতে বাঙালি। সেদিন আর নেই। মাছ আগের মতো পাওয়া যায় না।

আগে ধানের মৌসুমে ফসলের ক্ষেতে পানিতে ভরে থাকত, আর এখন আমাদের পাওয়ার পাম্প ব্যবহার করতে হয়। কৃষক আর আগের মতো ফসল ফলাতে পারছে না। তার পরও আমরা অনেক সময়ই খাবারের অপচয় করি।

হজরত রসুল (সা.) বলেন, ‘কারো কাছ থেকে মাটিতে খাবার পড়ে গেলে সে যেন সেটা তোলে, ধুলো ঝেড়ে খেয়ে ফেলে, শয়তানের জন্য না রেখে দেয়।’ নবী করিম (সা.) খাবার শেষে হাত চেটে খেতে বলেছেন, কারণ খাবারের কোন অংশে বরকত রয়েছে, সেটা মানুষ জানে না। আমরা অপচয় করছি বলেই হয়তো রাব্বুল আলামিন আমাদের বরকত উঠিয়ে নিচ্ছেন। খাদ্য উৎপাদন কমছে।

এখন খাবার সংরক্ষণ করতে ফরমালিন মেশানো হচ্ছে। খাবারের দাম বৃদ্ধি পাচ্ছে। আমাদের ফরমালিনবিরোধী অভিযানে অংশ নিতে হয়। কী দুর্ভাগ্য? এতে করে খাবারের স্বাদও হ্রাস পাচ্ছে দিন দিন। এসবের জন্য দায়ী কে? আমরাই তো অপচয় করে বরকত কমাচ্ছি। এ পৃথিবীতে সর্বশ্রেষ্ঠ মানব ছিলেন হজরত রসুল (সা.)। তিনি ও তাঁর পরিবার একটানা তিনদিনও পেটপুরে খেতে পারেননি বলে শোনা যায়। তাঁর উম্মত হয়ে আমরা কোন মুখে খাবার অপচয় করি?

পরম করুণাময় আল্লাহর অশেষ দয়া যে, আমরা বেশিরভাগ মানুষই চাইলে ভালোমন্দ খেতে পারি। পরিশেষে বলছি, প্রেম-ভালোবাসা ছাড়াও বেঁচে থাকা যায়; কিন্তু খাদ্য ছাড়া বাঁচা যায় না। সুতরাং খাবারের অপচয় থেকে সংযত থাকি।

 

লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads