• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার

নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

নারী ও সংখ্যালঘুদের অধিকার

  • মাহবুব আলম
  • প্রকাশিত ০৬ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

নারীদের অধিকারের ব্যাপারে ইসলামই সর্বপ্রথম বাস্তব ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ করেছে। সম্পত্তির উত্তরাধিকার, বিবাহ, সম্মান প্রভৃতি ক্ষেত্রে তাদের যথাযথ অধিকার সুনিশ্চিত করা হয়েছে।

স্ত্রীর প্রতি আচরণ বিষয়ে পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, ‘নারীদের তেমনি ন্যায়সঙ্গত অধিকার আছে, যেমন আছে তাদের ওপর পুরুষদের।’ (সুরা বাকারা : ২২৮)

ইসলাম মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত ঘোষণা করে নারীর মর্যাদা সমুন্নত করেছে। শরিয়তের সীমার মধ্যে থেকে নারীর অর্থনৈতিক কর্মকাণ্ডে সম্পৃক্ত হওয়ার অধিকারেরও স্বীকৃতি দিয়েছে ইসলাম। পবিত্র কোরআনে আল্লাহতায়ালা এ ব্যাপারে বলেছেন, ‘তোমরা তা কামনা কোরো না, যা দ্বারা আল্লাহ তোমাদের কাউকে কারো ওপর মর্যাদা প্রদান করেছেন, পুরুষদের জন্য রয়েছে ওই অংশ, যা তাদের অর্জন, আর নারীদের জন্যও ওই অংশ, যা তাদের অর্জন।’ (সুরা নিসা  : ৩২) অন্যদিকে ইসলামী রাষ্ট্রে অমুসলিমদের ন্যায়সঙ্গত অধিকারও অক্ষুণ্ন রাখা হয়েছে। ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের জীবন ও সম্পত্তি, ইজ্জত-সম্মান, চাকরি ইত্যাদির নিরাপত্তার অধিকার নিশ্চিত করা হয়েছে। তাদের সামাজিক, রাজনৈতিক ও শিক্ষা গ্রহণের অধিকার রয়েছে। মদিনা সনদে ধর্মীয় সংখ্যালঘুদের মদিনায় বসবাসের অধিকার দিয়েছিল। এমনকি তাদের একটি অংশ বিশ্বাসঘাতকতা করা সত্ত্বেও বাকি অংশের প্রতি অন্যায় আচরণ করা হয়নি।

অমুসলিমদের ধর্মীয় উপাস্যদের নিন্দাবাদ ও গালমন্দকে কোরআন দ্ব্যর্থহীন ভাষায় নিষিদ্ধ ঘোষণা করেছে, ‘আল্লাহ ছাড়া অন্যান্য দেব-দেবীর উপাসনা যারা করে, তাদের উপাস্যদের তোমরা গালাগাল কোরো না।’ (সুরা আনআম : ১০৮) রসুল (সা.) বলেছেন, ‘অমুসলিমদের জীবন আমাদের জীবনের মতোই এবং তাদের সম্পদ আমাদের সম্পদের মতোই।’ রসুল (সা.) আরো বলেছেন, ‘সাবধান! যদি কেউ কোনো মুআহিদের (চুক্তিবদ্ধ অমুসলিম নাগরিক) প্রতি জুলুম করে বা তাকে তার অধিকার থেকে কম দেয় কিংবা সাধ্যাতিরিক্ত কোনো কাজ তার ওপর চাপিয়ে দেয় অথবা তার ইচ্ছার বিরুদ্ধে তার থেকে কোনো মালামাল নিয়ে যায়, তাহলে কিয়ামতের দিন আমি তার বিরুদ্ধে থাকব।’ (আবু দাউদ, মিশকাত, পৃ. ৩৫৪)

মূলত রসুলুল্লাহ (সা.)-এর নেতৃত্বে প্রতিষ্ঠিত মদিনা রিপাবলিকে ৬২২ খ্রিস্টাব্দে প্রণীত ইসলামী রাষ্ট্রের লিখিত সংবিধানে জাতি-ধর্ম-বর্ণ নির্বিশেষে সবার অধিকার ও মর্যাদার ঘোষণা দেওয়া হয়েছে। ইসলাম ঘোষিত সর্বজনীন, শাশ্বত ও চিরন্তন মানবাধিকারের নীতিসমূহ সর্বকালের ও সর্বযুগের বিপন্ন মানবতার মুক্তির প্রকৃত দিকনির্দেশক। ইসলাম শুধু মৌলিক মানবাধিকার সনদের ঘোষণা দিয়েই ক্ষান্ত হয়নি, বরং ইসলামের সোনালি ইতিহাসে তার সফল বাস্তবায়নও করেছে।

 

লেখক : গবেষক ও শিক্ষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads