• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
নবীজি (সা.)-এর রওজা মোবারকের কিছু তথ্য

নবীজি (সা.)-এর রওজা মোবারক

ছবি : ইন্টারনেট

ধর্ম

নবীজি (সা.)-এর রওজা মোবারকের কিছু তথ্য

  • সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন
  • প্রকাশিত ০৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

মদিনার মসজিদে নববীতে সবুজ গম্বুজের নিচে চিরনিদ্রায় শায়িত আছেন আমাদের প্রিয় মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)। বর্তমানে তাঁর রওজাটি চারদিকে সুরক্ষিত বেষ্টনীতে আবদ্ধ। যে কারণে সরাসরি দেখার কোনো সুযোগ নেই। কিন্তু এই রওজা জিয়ারত করতে প্রতিনিয়ত বিশ্বের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে অসংখ্য মুসলমান ছুটে আসেন রসুলুল্লাহ (সা.)-এর কর্মময় জীবনের শেষ ১০ বছরের অবস্থানস্থল মদিনাতুল মুনাওয়ারায়।

এ নিবন্ধে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা সম্পর্কিত সাধারণের অজানা কিছু তথ্য পেশ করা হলো—

ইন্তেকালের স্থানেই শায়িত

রসুলুল্লাহ (সা.) যে জায়গায় ইন্তেকাল করেছেন, ঠিক সে জায়গাতেই তাঁকে শায়িত করা হয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর ইন্তেকালের পর অনেকেই তাঁকে তাঁর মিহরাবের কাছে শায়িত করার কথা বলেন, আবার অন্যরা তাঁকে জান্নাতুল বাকীতে দাফনের পরামর্শ দেন। কিন্তু হজরত আবু বকর (রা.) বলেন, তিনি রসুলুল্লাহকে (সা.) বলতে শুনেছেন একজন নবী যেখানেই ইন্তেকাল করেন, সেখানেই তাঁকে দাফন করতে হয়। হজরত আবু বকরের (রা.) এ কথা অনুযায়ী তখন আয়েশার (রা.) কামরায় রসুলুল্লাহর (সা.) ইন্তেকালের স্থানেই কামরার মেঝেতে কবর খনন করা হয় এবং সেখানেই তাঁকে দাফন করা হয়।

আয়েশা (রা.)-এর ঘর

রসুলুল্লাহ (সা.)-কে তাঁর ইন্তেকালের পর উম্মুল মুমিনিন হজরত আয়েশার (রা.) ঘরে দাফন করা হয়। অর্থাৎ রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজার কামরাটি হজরত আয়েশা (রা.)-এর ঘর ছিল। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর অন্যান্য স্ত্রীর মতোই মসজিদে নববীর আঙ্গিনায় অবস্থিত ছোট এই ঘরটিতে আয়েশা (রা.) বসবাস করতেন। এই কামরাগুলো তখন মূল মসজিদ থেকে বিচ্ছিন্ন ছিল। পরবর্তীকালে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা মসজিদে নববীর মূল মসজিদের অভ্যন্তরে সংযুক্ত হয়।

প্রবেশপথে সোনালি গ্রিলের বেষ্টনী

রসুলুল্লাহ (সা.) এবং খলিফা হজরত আবু বকর (রা.) ও হজরত উমর (রা.)-এর রওজার কামরাটির প্রবেশপথ স্থায়ীভাবে সোনালি গ্রিলে তৈরি বেষ্টনী দিয়ে বন্ধ করে দেওয়া হয়েছে। রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজার কামরায় প্রবেশের এখন কোনো সুযোগ নেই।

গ্রিলের তিন ছিদ্রপথ

রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজাগাহের কক্ষটি চারপাশে বেষ্টনীতে আবদ্ধ থাকায় রসুলুল্লাহ (সা.) এবং তাঁর দুই সঙ্গীর রওজা বাইরে থেকে দেখার কোনো সুযোগ নেই। শুধু কামরাটির প্রবেশপথের গ্রিলে তিনটি ছিদ্রপথ রয়েছে, যা দিয়ে রসুলুল্লাহ (সা.) এবং তার দুই সঙ্গীর রওজা সরাসরি দেখা যায়। বাম থেকে প্রথম বড় ছিদ্রপথ দিয়ে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা, মাঝের ছিদ্রপথে হজরত আবু বকর (রা.)-এর রওজা এবং সর্বডানের ছিদ্রপথে হজরত উমর (রা.)-এর রওজা দেখা যায়।

দেওয়ালে ঘেরা

রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজা শরিফের দেয়াল কালো পাথরে তৈরি এবং এই দেয়াল রসুলের ও তার দুই সঙ্গীর রওজাকে আবেষ্টন করে রেখেছে। ৯১ হিজরিতে খলিফা হজরত উমর ইবনে আবদুল আজিজ (র.)-এর দেয়াল নির্মাণ করেন, যেন কেউ রসুল (সা.)-এর রওজায় প্রবেশ করতে না পারেন।

মাটির গভীর থেকে পরিবেষ্টন

সুলতান নূরউদ্দীন জঙ্গী গলিত সিসা দিয়ে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর রওজার চারপাশকে মাটির গভীর থেকে আবদ্ধ করে দেন। বিভিন্ন সময়ে দুষ্কৃতিকারীরা রওজা থেকে রসুলুল্লাহ (সা.)-এর মোবারক লাশ চুরি করার চেষ্টা করলে সুলতান এই বেষ্টনী তৈরি করেন।

মহান রাব্বুল আলামিন আমাদের বাইতুল্লাহর হজ নসিব করুন এবং নবীজির (সা.) রওজা মোবারক জিয়ারতের তাওফিক দান করুন।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads