• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

দান-খয়রাত সম্পর্কে ইসলাম যা বলে

  • মাওলানা শাহ আবদুস সাত্তার
  • প্রকাশিত ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ধনাঢ্য বিত্তবান, অর্থ-বৈভবে পূর্ণ অঢেল সম্পদের মালিকসহ সামর্থ্যবানদের দুস্থ, নিঃস্ব, গরিব, এতিম, মিসকিন, আশ্রয়হীন, পঙ্গু অসহায়দের দুঃখ-কষ্ট মোচনে ও সাহায্য-সহযোগিতায় দান-খয়রাত এবং সেবাযত্ন করা অত্যন্ত সওয়াবের কাজ। ইসলামের নির্দেশনা হলো— যে বা যারা অঢেল ধন-সম্পদ ও অর্থ সঞ্চয় করেছে, তারা যেন ইহজগৎ বা দুনিয়া ত্যাগ করার আগেই আল্লাহর নামে ‘ফি সাবিলিল্লাহ’ দান-খয়রাত করে যেতে থাকে। আমাদের মহানবী হজরত মোহাম্মদ (সা.)-এর কাছে কেউ কিছু চাইলে তাঁর কাছে যা থাকত, তা-ই তিনি দান করে দিতেন। এমনকি নিজের অতি প্রয়োজনকে তুচ্ছ মনে করে পরিবার-পরিজনসহ অভুক্ত থেকেও গরিব, এতিম, মিসকিন ও অসহায়-অভাবী মানুষদের আহার করাতেন। এভাবে আল্লাহর পেয়ারা নবী (সা.) দান-খয়রাতের মাধ্যমে বিশ্বব্যাপী মানবতার সেবার এক উজ্জ্বল দৃষ্টান্ত স্থাপন করেন।

আল্লাহতায়ালা পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি দানপ্রার্থীকে ধমক দিও না।’ পবিত্র কোরআনে তিনি আরো ঘোষণা করেছেন, ‘কোনো কিছু দানপ্রার্থীকে দান বা খয়রাত দেওয়া হোক বা না হোক, কোনো ধরনের কষ্টদায়ক কথা বলার চেয়ে একটি মিষ্টি মধুর কথা বলাই উত্তম।’ আল্লাহপাকের উক্ত বাণীতে স্পষ্টত বোঝা যায়, অভাব অভিযোগের তাড়নায় যারা এসেছে তারাও আমাদের মতো রক্তমাংসে গড়া মানুষ। এদেরও ক্ষুধা রয়েছে, চাহিদা রয়েছে। আল্লাহপাক পবিত্র কোরআনে আবারো এরশাদ করেছেন, ‘হে ঈমানদারগণ, তোমরা কোনো সায়েল অর্থাৎ দানগ্রহীতাকে কোনো রূপ খোটা বা কষ্ট দিয়ে তোমাদের দান-খয়রাত-সাহায্য ও সেবাকে বরবাদ করে দিও না। এখানে বলা আবশ্যক, ‘ডান হাতে দান করলে বাম হাতও যেন না জানে’ এটাই ইসলামের আদর্শ। এ ব্যাপারে হাদিসে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা রয়েছে।

দানশীলতা মানব চরিত্রের মহৎ গুণ যা মানুষের হূদয়কে কৃপণতার অভিশাপ থেকে মুক্ত ও সতেজ রাখে। এ সম্পর্কে আল্লাহতায়ালা আরো বলেছেন, ‘যাদের মন দিল কৃপণতা বখিল থেকে মুক্ত তারাই হবে সত্যিকার সাফল্যমণ্ডিত’। উল্লেখ করা যেতে পারে, দান-খয়রাতের বেলায় আমরা কেউ কেউ অনেক সময় নিজেদের ব্যবহূত অকেজো-অযোগ্য পুরনো জিনিসপত্র দান-খয়রাত করে নিজেদের দাতা হিসেবে নাম জাহিরের অপচেষ্টা চালাই। এতে নেকি বা সওয়াব প্রাপ্ত হওয়া তো দূরের কথা, বরং দান-খয়রাত, সাহায্য সেবার মর্যাদাকে ক্ষুণ্ন করা হয়।

 

লেখক : সভাপতি, বাংলাদেশ সিরাত মিশন, ঢাকা, বাংলাদেশ

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads