হাদিসে কুদসিতে এরশাদ হয়েছে, আল্লাহপাক বলেন, গুনাহগারদের কান্নাকাটির আওয়াজ, তসবি জপকারীদের আওয়াজ অপেক্ষা আমার কাছে অধিক প্রিয় (তাফসির রুহুল মাআনী খণ্ড ৩০, পৃষ্ঠা ৫৩৩)। অন্যত্র আল্লাহপাক বলেন, ‘আল্লাহ রাব্বুল আলামীন তওবাকারীকে ভালোবাসেন এবং যারা পবিত্র থাকে তাদেরও ভালোবাসেন’ (সুরা বাকারা : আয়াত ২২২)।
অপর আয়াতে আল্লাহপাক বলেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা আল্লাহর কাছে তওবা কর বিশুদ্ধ তওবাই নিশ্চয়ই তোমাদের প্রতিপালক তোমাদের সৎকর্মগুলো মোচন করে দেবেন এবং তোমাদের দাখিল করবেন জান্নাতে, যার পাদদেশে নদী প্রবাহিত’ (সুরা তাহরিম : আয়াত ৮)।
উল্লেখিত আয়াতসমূহ ছাড়াও এমন অসংখ্য আয়াত রয়েছে যেসব আয়াতের সারমর্ম হলো গুনাহগার ব্যক্তি আল্লাহপাকের কাছে যখন নিজের অতীতের গুনাহের জন্য ক্ষমা চায় আল্লাহপাক তাকে ক্ষমা করে দেন এবং নিজের প্রিয় বান্দা হিসেবে কবুল করে নেন।
তাছাড়া হাদিস শরিফে রসুলে কারিম (সা.) পাপী ব্যক্তির পাপ মোচনের সুসংবাদ দিয়েছেন। হজরত আবদুল্লাহ ইবনে মাসউদ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, মহানবী (সা.) এরশাদ করেছেন, গুনাহ থেকে যে ব্যক্তি তওবা করে সে এমন নিষ্পাপ শিশুর মতো হয়ে যায় যেন তার কোনো গুনাহই ছিল না এবং সে কখনো কোনো অন্যায়ই করেনি (ইবনে মাজাহ্ হাদিস ৪২৫০ বায়হাকি, হাদিস ৭১৭৮ মুনযিরী, হাদিস ৪৫০৪)।
আল্লাহতায়ালা প্রত্যেক এমন পাপীর জন্যও তওবার দুয়ার খোলা রেখেছেন যে ব্যক্তি বার বার পাপ করছে। সুতরাং এমন ব্যক্তির জন্য এ পাপ পরিত্যাগপূর্বক কলুষমুক্ত জীবনে পরিবর্তিত করতে কোনো বাধা নেই। কেননা হাদিস শরিফে ইরশাদ হয়েছে, পাপী ব্যক্তির পাপ যদি এত অধিকও হয় যে, তা আকাশ ছুঁয়ে যায় তবু সে যখন আল্লাহপাকের কাছে তওবা করে আল্লাহপাক তাকে ক্ষমা করে দেন। (ইবনে মাজাহ)
অপর হাদিসে ইরশাদ হয়েছে, হজরত আনাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, আমি শুনেছি রাসুল সাল্লাল্লাহ আলাইহি ওয়াসাল্লাম বলতেন, আল্লাহপাক বলেছেন, হে আদম সন্তান যতক্ষণ পর্যন্ত তুমি আমার কাছে দোয়া করতে থাকবে এবং আমার কাছে আশা করতে থাকবে, তোমার যত গুনাহই হোক না কেন আমি তা মাফ করে দেব। আমি কারো পরোয়া করি না। হে আদম সন্তান! তোমার গুনাহ যদি আকাশের মেঘমালা পর্যন্ত পৌঁছে যায়, অতঃপর তুমি আমার কাছে ক্ষমা চাও আমি তোমাকে ক্ষমা করে দেব (তিরমিযি পৃষ্ঠা ১৯৪, খণ্ড-২)।
লেখক : ইসলামী চিন্তাবিদ
