• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

হতাশাগ্রস্ত হওয়া মুমিনের কাজ নয়

  • জহির উদ্দিন বাবর
  • প্রকাশিত ২৮ ফেব্রুয়ারি ২০১৯

ব্যক্তি, সামাজিক ও রাষ্ট্রীয় জীবনে কখনো কখনো হতাশার কালো ধোঁয়া আচ্ছন্ন করে ফেলতে পারে। তবে সত্যিকার মুমিন যারা, তারা কখনো হতাশ হতে পারেন না। আল্লাহতায়ালা কোরআনে স্পষ্ট ঘোষণা করেছেন, ‘তোমরা ভগ্নোৎসাহ হয়ো না, দুশ্চিন্তাগ্রস্ত হয়ো না। তোমরাই হবে বিজয়ী, যদি হও সত্যিকারের ইমানদার’ (সুরা আলে ইমরান-১৩৯)।

রাসুলের (সা.) জীবনেও বিভিন্ন সময় অন্তহীন সমস্যা ও বিপদ এসেছে, কিন্তু তিনি ইমানের সঙ্গে দৃঢ়ভাবে তা মোকাবেলা করেছেন। আল্লাহর ওপর আস্থা ও বিশ্বাস রেখেছেন। মানুষের সঙ্গে আল্লাহর সব আচরণই কোনো না কোনো মঙ্গলের জন্য। আল্লাহতায়ালা মানুষের জন্য যা ভালো মনে করেন তা-ই দেন।

বিপদ-আপদের মাধ্যমে আল্লাহ মুমিনদের পরীক্ষা করেন; তাদের সংশোধন হওয়ার সুযোগ করে দেন। এসব মুহূর্তে ভেঙে পড়া মুমিনের কাজ নয়। বিপদে ধৈর্য ধারণ এবং আল্লাহর সাহায্য কামনা করাই হলো মুমিনের পরিচয়। এজন্য বিপদের মুহূর্তে একমাত্র আল্লাহকেই আশ্রয় হিসেবে গ্রহণ করতে হবে। তার সাহায্য ছাড়া দুনিয়ার কোনো কিছুই মানুষকে বিপদ থেকে উদ্ধার করতে পারবে না। মুমিনদের উচিত সবসময় আল্লাহর কাছে সাহায্য প্রার্থনা করা। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমরা আল্লাহর রহমত থেকে নিরাশ হয়ো না। অবশ্যই আল্লাহ সব পাপ ক্ষমা করে দেবেন। নিশ্চয় তিনি ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু’ (সুরা জুমার-৫৩)।

দুনিয়ায় যত নবী-রাসুল এসেছেন, তাদের প্রত্যেকেই দুনিয়া জোড়া বিপদকে মাথায় নিয়েও তাদের পথে অটল ছিলেন। হতাশা কখনো তাদের পথরোধ করে দাঁড়াতে পারেনি। কারণ তারা জানতেন আল্লাহর বিশালতার সামনে এ ধরনের আপদ-মুসিবত একেবারেই তুচ্ছ। হিজরতের সময় হজরত আবু বকর সিদ্দিকের (রা.) কথার জবাবে আল্লাহর রাসুল (সা.) বলেছিলেন, ‘আমরা দু’জন মাত্র নই, বরং আমাদের সঙ্গে আল্লাহ আছেন।’ মানুষ যত বড় ত্রুটি-বিচ্যুতিই করুক না কেন, আল্লাহ গাফুরুর রাহিমের সামনে তা সামান্য। তিনি পাহাড়সম ত্রুটিও মাফ করে দিতে পারেন। আশার মধ্যেই মানুষ বেঁচে থাকে। আশার কারণে মানুষ কাজ করে, কথা বলে, পথ চলে। আশা মানুষের শারীরিক ও মানসিক শক্তির চাকাকে সচল রাখে। এজন্য হতাশাগ্রস্ততা থেকে বাঁচার জন্য আল্লাহর সাহায্য চাইতে হবে। ইতিবাচক মানসিকতা চর্চা করলে মানুষ আশাবাদী হয়; বেঁচে থাকে হতাশার অভিশাপ থেকে।

 

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads