• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
ইসলাম ও ব্যক্তিত্ব

ইসলাম ও ব্যক্তিত্ব

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

ইসলাম ও ব্যক্তিত্ব

  • প্রকাশিত ০৭ মার্চ ২০১৯

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) থেকে বর্ণিত রসুল (সা.) বলেছেন, প্রত্যেক সন্তানই ‘ফিতরত’-এর ওপর জন্মগ্রহণ করে থাকে। অতঃপর তার মাতা-পিতা নিজেদের সংস্রব দ্বারা তাকে ইয়াহুদি করে দেয়, বা নাসরানি করে দেয় অথবা অগ্নি উপাসক করে দেয় (বুখারি মুসলিম)। এই হাদিসে ‘ফিতরত’-এর ব্যাখ্যায় হাদিস বিশেষজ্ঞরা লিখেছেন, প্রত্যেক শিশুই জন্মগতভাবে ইসলাম কবুলের যোগ্যতা নিয়ে পৃথিবীতে আসে। কিন্তু পরিবেশ, বিশেষত তার মাতা-পিতা তার সেই যোগ্যতাকে প্রকাশ হতে দেয় না, তাই সে ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের অনুসারী হয়ে যায়।

সমাজের নিয়ম অনুযায়ী অধিকাংশ ক্ষেত্রেই দেখা যায় শিক্ষিত পরিবারের সন্তানরা শিক্ষিত হয়। ধার্মিক পরিবারের সন্তানরা ধার্মিক হয়। মুসলমান পরিবারের সন্তানরা মুসলমান হয়। হিন্দু পরিবারের সন্তানরা হিন্দু হয়। কদাচিৎ এক-দুটি ব্যতিক্রমও হতে দেখা যায়। এই ব্যতিক্রমের মূলে রয়েছে কোনো বিশেষ কারণ। ধর্মীয় কিতাবাদি অধ্যয়ন কিংবা কোনো ধার্মিক মানুষের সংস্পর্শে এসে মানুষ ব্যক্তিত্ববান ধর্মপরায়ণ হয়ে যায়। আবার অপরাধ পাপাচারে লিপ্ত ব্যক্তিত্বহীন মানুষের সংস্পর্শে এসে অনেকে ব্যক্তিত্ব হারায়। ধর্মকর্ম ভুলে যায়। সবার জানা একটি প্রবাদ হচ্ছে- ‘সৎসঙ্গ স্বর্গবাস, অসৎ সঙ্গ সর্বনাশ।’

সামাজিক জীব হিসেবে ব্যক্তিমানুষের ব্যক্তিত্বের উৎস প্রধানত দুটি। একটি হলো জন্মগত এবং অপরটি হলো সমাজ ও সংস্কৃতিগত। ব্যক্তিমানুষের সামগ্রিক ব্যক্তিত্বের বিকাশ সাধন হয় তার উত্তরাধিকার সূত্রে প্রাপ্ত জৈব বৈশিষ্ট্য এবং সমাজ সংস্কৃতির উপাদানগুলোর সংযুক্তির ফলে। ব্যক্তি মানুষের মনোভাব, মূল্যবোধ, চিন্তা-চেতনা, আচার-আচরণ সংক্ষেপে তার সমগ্র ব্যক্তিত্ব নির্ধারিত হয় সমাজ সংস্কৃতির দ্বারা। অর্থাৎ সমাজ সংস্কৃতির ওপর মানুষের ব্যক্তিত্ব নির্ভরশীল। সুতরাং ইসলামী চিন্তাবিদগণ কোরআন ও হাদিসের আলোকে এই সিদ্ধান্তে উপনীত হন যে, শৈশবেই যদি শিশুর পিতা-মাতা তাকে ধর্মীয় রীতিনীতি অনুসারে গড়ে তোলেন এবং বিধিবিধান মেনে চলতে সাহায্য করেন, তাহলে ওই শিশুর মধ্যে আত্মনির্ভরতা, আত্মবিশ্বাস, সাহস, স্বাধীনভাবে কর্ম ও চিন্তা করার ক্ষমতা দেখা দেয়। এর ফলে শিশু স্থির ব্যক্তিত্ব অর্জন করে। পরিবার, বিদ্যালয় ও সামাজিক পরিবেশ যদি মনোরম, নৈতিক, ধার্মিক, সুস্থ সাংস্কৃতিক হয় তাহলে প্রতিটি শিশুও সে অনুযায়ী ব্যক্তিত্ববান হয়ে বেড়ে ওঠে। আর পরবর্তী জীবনে আমাদের আচরণে আমরা তা-ই প্রকাশ করি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads