ইসলাম নারী জাতিকে এক করুণ অমানবিক অবস্থা থেকে উদ্ধার করে তাদের মানুষ হিসেবে যথাযোগ্য অধিকার এবং সম্মানজনক মর্যাদা নিশ্চিত করেছে। প্রতি বছরই কোনো না কোনো প্রতিপাদ্য বিষয়কে সামনে রেখে আন্তর্জাতিক নারী দিবস উদযাপিত হয়। বিশ্বের নারীরা এদিন নিজেদের গভীরভাবে উপলব্ধি করতে চেষ্টা করেন। পবিত্র কোরআনে নারীদের অধিকার ও মর্যাদা সম্পর্কে বলা হয়েছে, ‘আর পুরুষদের যেমন স্ত্রীদের ওপর অধিকার রয়েছে, তেমনিভাবে স্ত্রীদেরও নিয়ম অনুযায়ী পুরুষদের ওপর অধিকার রয়েছে। আর নারীদের ওপর পুরুষদের শ্রেষ্ঠত্ব রয়েছে। আর আল্লাহ হচ্ছেন পরাক্রমশালী, বিজ্ঞ। (সুরা আল-বাকারা, আয়াত ২২৮)
একমাত্র ইসলামই মাতা, কন্যা, স্ত্রী প্রভৃতি হিসেবে নারীদের বিশেষ মর্যাদা ও অধিকার প্রদান করেছে। এ সম্পর্কে পবিত্র কোরআন মজিদে বলা হয়েছে, ‘যখন তাদের কন্যাসন্তানের সুসংবাদ দেওয়া হয়, তখন তাদের মুখ কালো হয়ে যায় এবং অসহ্য মনস্তাপে ক্লিষ্ট হতে থাকে। তাকে শোনানো সুসংবাদের দুঃখে সে লোকদের কাছ থেকে মুখ লুকিয়ে থাকে। সে ভাবে, অপমান সহ্য করে তাকে থাকতে দেবে, না তাকে মাটির নিচে পুঁতে ফেলবে। শুনে রাখো, তাদের ফয়সালা খুবই নিকৃষ্ট।’ (সুরা আন-নাহল, আয়াত ৫৮-৫৯)। স্ত্রী হিসেবেও ইসলাম নারীর অধিকার সংরক্ষণ করেছে। পবিত্র কোরআনে বলা হয়েছে, তারা তোমাদের পরিচ্ছদ এবং তোমরাও তাদের পরিচ্ছদ। (সুরা আল-বাকারা, আয়াত ১৮৭)
ইসলাম বিয়ের ব্যাপারে সুস্পষ্ট বিধান প্রদান করেছে। বহুবিয়ে প্রথাকে নস্যাৎ করার জন্য চারজন পর্যন্ত স্ত্রী গ্রহণের অনুমতি দেওয়া হলেও সে ক্ষেত্রে কিছু শর্ত আরোপ করা হয়েছে; যার কারণে ইচ্ছা করলেই একাধিক স্ত্রী গ্রহণের প্রবণতা রোধ হয়ে যায়। প্রত্যেক স্ত্রীর ওপর সুবিচার করার ক্ষমতা ও সামর্থ্য না থাকলে একটি বিয়ে করার নির্দেশ জারি রাখা হয়েছে। স্বামী-স্ত্রীর বিবাহ বিচ্ছেদকে ইসলাম নিরুৎসাহিত করেছে। মহানবী (সা.) বলেছেন, এটি শরিয়তে জায়েজ হলেও আল্লাহতায়ালা পছন্দ করেন না। আর তা হচ্ছে তালাক।’ নারীরা হচ্ছে মায়ের জাতি। মায়ের মর্যাদা সম্পর্কে মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘মায়ের পদতলে সন্তানের জান্নাত।’ একজন সাহাবি নবী করিম (সা.)-কে জিজ্ঞেস করলেন- আমার কাছে খেদমত পাওয়ার সবচেয়ে বেশি হকদার কে? রসুল (সা.) বললেন, তোমার মা।
সাহাবি বললেন, তারপর কে? রসুল এবারো বললেন, তোমার মা। সাহাবি বললেন, তারপর কে? রসুল (সা.) বললেন, তোমার পিতা এবং তারপর পর্যায়ক্রমে তোমার আত্মীয়-স্বজন (বুখারি, মুসলিম, তিরমিজি ও আবু দাউদ শরিফ)।
লেখক : ইসলামবিষয়ক গবেষক