• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ধর্ম

ইসলামে মানবতাবোধের শিক্ষা

  • ড. আবদুল বারী আস-সুবাইতি
  • প্রকাশিত ১০ মার্চ ২০১৯

মানুষ যখনই নামাজ-ইবাদত ও দোয়ার মাধ্যমে আল্লাহর নৈকট্য লাভ করে, তখন তার মানবিক মূল্যবোধ জেগে ওঠে এবং তার নৈতিক স্পৃহা চাঙ্গা ও সজীব হয়ে ওঠে। আল্লাহতায়ালার মোরাকাবা বা ঐশী তত্ত্বাবধান ও পর্যবেক্ষণের মাধ্যমে ইসলাম সর্বত্র পরিপূর্ণ ও পূর্ণাঙ্গ মানবতা পৌঁছে দিতে চায়। আল্লাহতায়ালা ইরশাদ করেন, ‘বরং মানুষ নিজের ব্যাপারে নিজেই চক্ষুষ্মান। যদিও সে অজুহাত পেশ করতে চায়।’ (সুরা কিয়ামাহ : ১৫-১৫) মানুষ যখন নিজের প্রবৃত্তিকে নিজে শাসন করে ও মনের ওপর নিজের কর্তৃত্ব প্রতিষ্ঠা করে, তখন প্রবৃত্তি মানুষের অনুসরণে বাধ্য হয়। আর তার মানবতাবোধও আলো ঝলমলে হয়ে দীপ্তি ছড়াতে থাকে দিকে দিকে।

ইসলাম যে মানবতার কথা বলে, তা সব গোত্র-শ্রেণি, জাত-বর্ণ ও সব স্তরকে শামিল করে। তাদের মাঝে কোনো ভেদাভেদ রাখে না ইসলাম, যাতে করে মানুষ পরস্পরের সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়ে উঠতে পারে। একে অপরের মাঝে সহমর্মিতা বজায় থাকে এবং সবাই ভ্রাতৃপ্রতিম হয়ে জীবনযাপন করতে পারে। আর পৃথিবীতে আল্লাহর প্রতিনিধিত্বের দায়িত্ব সঠিকভাবে পালন করতে পারে। ইসলাম যে মানবতার কথা বলে তার অন্যতম দাবি হচ্ছে, পারস্পরিক সাহায্য-সহযোগিতা, যৌথ দায়িত্ব, ভালোবাসা-সৌহার্দ্য ও সহিষ্ণুতা-সহমর্মিতার বিনির্মাণ, হিংসা-বিদ্বেষ, দৌরাত্ম্য ও প্রতিশোধের দমন, জুলুম-অত্যাচারের বিরোধিতা এবং গরিব-দুঃখীর সহযোগিতা করা। রসুল (সা.) মানবতার ডাক দিয়ে বলেছেন, ‘হে আল্লাহর বান্দারা, তোমরা সবাই ভাই ভাই হয়ে যাও।’

ইসলামে মানবতাকে সর্বোচ্চ স্থান দেওয়া হয়েছে এবং মানবতার সামগ্রিক উন্নতি ও অগ্রগতি লাভে সব ধরনের উপায়-উপকরণের ব্যবস্থা রয়েছে ইসলামে। তার মধ্যে মা-বাবার সেবা-যত্ন, ভরণ-পোষণ, খরচপাতি ও তাদের সঙ্গে মাধুর্যতাপূর্ণ আচার-আচরণ ইত্যাদি এবং মা-বোন, স্ত্রী-কন্যা সর্বোপরি নারীর যথাযথ অধিকার রক্ষা অন্যতম। কোরআন মানুষকে সর্বোৎকৃষ্ট মানবতাবোধের অনুপ্রেরণা দেয়। মানুষকে যথাযথ মান-সম্মান ও কদর করতে শেখায়। অনুরূপভাবে মানুষের আবেগ-অনুভূতিকে লক্ষ্যচ্যুত হওয়া থেকে রক্ষা করতে ভাবায়। অনর্থক ও নিন্দনীয় সব পারস্পরিক বিরোধিতা থেকে বেঁচে থাকার প্রেরণা জোগায়। মানুষকে সুবোধ ও দৃষ্টিশীল করে তোলে। বিবেক-বুদ্ধিতে চেতনা ফিরিয়ে আনে। ফলে তার সামনে সরল-সঠিক পথ স্পষ্ট হয়ে ওঠে এবং ন্যায়-নীতি ও ইনসাফ প্রতিষ্ঠা পায়। রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘হে আল্লাহ! তোমার কাছে সন্তুষ্টি ও অসন্তুষ্টি উভয় অবস্থায় সত্য কথা বলার তৌফিক কামনা করছি।’

 

ভাষান্তর : মুহাম্মদ মিনহাজ উদ্দিন

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads