গোঁফ ছোট রাখা এবং দাড়ি লম্বা রাখা মুসলমানদের ধর্মীয় প্রতীক। দাড়ি রাখা কোনো ফ্যাশন নয়, এটি ইবাদত। এটি মহানবী (সা.)-সহ সব নবীর সুন্নত। সুন্নাহসম্মত দাড়ি কোনো ব্যক্তি মুসলিম হওয়ার অন্যতম নিদর্শন।
রসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তোমরা দাড়ি লম্বা করো এবং গোঁফ ছোট করো।’ রসুল (সা.) নিজেও দাড়ি রাখতেন। তাঁর দাড়ি ছিল কালো, গভীর, ঘন ও প্রশস্ত। তাঁর বক্ষ মোবারক দাড়িতে ভরে যেত। ইসলাম ধর্মমতে, দাড়ি রাখা ওয়াজিব। সুতরাং এক মুষ্টির নিচে দাড়ি কাটা বা ছাঁটা হারাম।
দাড়ি না রাখার অসংখ্য ক্ষতি রয়েছে— এক. দাড়ি মুণ্ডানো বা ছোট করা মুশরিক, অগ্নিপূজক ও বিধর্মীদের অভ্যাস। আর মুসলমানদের জন্য বিধর্মীদের সাদৃশ্য অবলম্বন করা হারাম। মহানবী (সা.) ইরশাদ করেন, ‘যে ব্যক্তি অন্য কোনো জাতির সাদৃশ্য (বেশভূষা, আকার-আকৃতি) অবলম্বন করে, সে ওই জাতির অন্তর্ভুক্ত বলে গণ্য হবে’ (জামে ছগির, ২/৮)।
দুই. দাড়িবিহীন চেহারা নারীজাতির চেহারার সঙ্গে সামঞ্জস্য রাখে। এ ধরনের সামঞ্জস্য অবলম্বন করা হারাম।
তিন. এর ফলে আল্লাহ ও তাঁর রসুলের অবাধ্যতা প্রদর্শন হয়। আল্লাহ বলেন, ‘তোমাদের মধ্যে যদি কেউ আল্লাহ ও তাঁর রসুলকে অমান্য করে, তার জন্য রয়েছে জাহান্নামের আগুন, সেখানে তারা চিরকাল থাকবে’ (সুরা জিন, ২৩)।
চার. দাড়ি না রাখার মাধ্যমে আল্লাহর সৃষ্টির পরিবর্তন ও বিকৃতি ঘটানো হয়। আল্লাহ বলেন, ‘আল্লাহর সৃষ্টির কোনো পরিবর্তন নেই’ (সুরা রুম, ৩০)।
পাঁচ. দাড়ি না রাখলে অবিশ্বাসীদের অনুসরণ করা হয়। অথচ আল্লাহতায়ালা অবিশ্বাসীদের অনুসরণ করতে নিষেধ করেছেন, ‘এরপর আমি তোমাকে প্রতিষ্ঠিত করেছি দ্বীনের বিশেষ বিধানের ওপর। সুতরাং তুমি এর অনুসরণ করো; অজ্ঞদের খেয়ালখুশির অনুসরণ করো না’ (সুরা জাসিয়া, ১৮)।
ছয়. দাড়ি না রাখলে দৃষ্টিশক্তি হ্রাস পায়।
সাত. সুরা-কিরাত শুদ্ধ থাকলেও আজান-ইকামতের যোগ্যতা ও সুযোগ থাকে না।
আট. নবীজির অন্তরে আঘাত দেওয়া হয়।
নয়. অন্যান্য পাপ একবার করলে একবারই গুনাহ লেখা হয়। কিন্তু দাড়ি না রাখলে সবসময় গুনাহ লেখা হতে থাকে। কেননা এটা গুনাহে জারিয়া বা চলমান গুনাহের অন্তর্ভুক্ত।
দশ. কবরে মুনকার-নাকিরের প্রশ্ন-উত্তর কঠিন হয়ে যায়।
লেখক : ইসলামবিষয়ক চিন্তাবিদ