• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

রসুল (সা.)-এর মিরাজ

  • মুহাম্মদ আবদুল হামিদ
  • প্রকাশিত ০৩ এপ্রিল ২০১৯

মিরাজ শব্দটির অর্থ সিঁড়ি, ঊর্ধ্বারোহণ বা উর্ধ্বারোহণের বাহন। আল্লাহতায়ালা রসুল (সা.)-কে এক রাতে বা রাতের কিছু অংশে মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত, এরপর সেখান থেকে সপ্তাকাশ, সিদরাতুল মুনতাহা, জান্নাত ও জাহান্নাম এবং ঊর্ধ্বজগতের অন্যান্য বড় বড় নিদর্শন দর্শনের উদ্দেশ্যে জাগ্রত অবস্থায় সশরীরে রাত্রিবেলা ভ্রমণ করান। মহান আল্লাহতায়ালা তাঁর প্রিয় হাবিবকে যত মুজিজা দান করেছেন, সেগুলোর মধ্যে অন্যতম বিস্ময়কর মুজিজা হলো মিরাজ। এজন্যই মিরাজের আয়াতের শুরুতেই আল্লাহপাক ‘সুবহানাল্লাহ’ শব্দটি ব্যবহার করেছেন, যা কেবল অত্যাশ্চর্য ঘটনার ক্ষেত্রেই ব্যবহার করা হয়ে থাকে। মিরাজ রসুলুল্লাহ (সা.)-এর জীবনের শ্রেষ্ঠ মুজিজা। মহান আল্লাহতায়লা কোরআনের সুরায়ে বনি ইসরাঈল এবং সুরায়ে নাজমে মিরাজের বর্ণনা দিয়েছেন। একাধিক বিশুদ্ধ হাদিসে মিরাজের ঘটনার বিস্তারিত বিবরণও বর্ণিত হয়েছে।

নবী করিম (সা.)-এর মাক্কি জীবনের শেষলগ্নে নবুওতের দশম বছরে রজব মাসের ২৭ তারিখ রাতে মিরাজের মহিমান্বিত ও বিস্ময়কর ঘটনা সংঘটিত হয়। আল্লাহর নির্দেশে ফেরেশতারা ‘বোরাক’ তথা আল্লাহর কুদরতি দ্রুতগতিসম্পন্ন বৈদ্যুতিক বাহনের মাধ্যমে নিয়ে যান মসজিদে হারাম থেকে মসজিদে আকসা পর্যন্ত। তারপর ঊর্ধ্বলোকে পরিভ্রমণে মহানবী (সা.) বিশ্বস্রষ্টার নভোমণ্ডলের অপরূপ দৃশ্যাবলি দেখেন। সপ্তাকাশে ফেরেশতারা তাকে অভ্যর্থনা জানান এবং নবীগণের সঙ্গে সাক্ষাৎ করেন। জান্নাত-জাহান্নাম পরিদর্শন  করেন। তিনি আল্লাহর বিধি-বিধান, ভাগ্যলিপি অবিরাম লিখে চলছে যে কলম, সেটাকেও লিখনরত দেখতে পান। ফেরেশতাদের গমনাগমনের শেষ সীমানা সিদরাতুল মুনতাহা দেখেন। সেখান থেকেই একটি দিগন্তবেষ্টিত সবুজ রঙের কুদরতি বাহন ‘রফরফে’ আরোহণ করে আরশে মোয়াল্লার সন্নিকটে এবং আল্লাহর দরবারে হাজির হন। সেখানে আল্লাহতায়ালার সঙ্গে সাক্ষাৎ ও কথোপকথন হয়।

আল্লাহ নিজে তাঁকে সালাম জানান এবং তুহফা (আত্তাহিয়্যাতু) প্রদান করে সম্মানিত করেন। আল্লাহতায়ালা রসুল (সা.)-কে খলিল ও হাবিবরূপে গ্রহণ করেন। রসুলুল্লাহ (সা.) আল্লাহর নৈকট্য, সান্নিধ্য ও দিদার লাভ করেন এবং করুণা ও শুভেচ্ছার নিদর্শনস্বরূপ মিরাজ রজনীর উপহার হিসেবে আল্লাহর বান্দাদের জন্য পাঁচ ওয়াক্ত নামাজের হুকুম নিয়ে ওই রাতেই গৃহে প্রত্যাবর্তন করেন। মিরাজের অন্যতম উপহার হলো পাঁচ ওয়াক্ত ফরজ নামাজ। নামাজের মাধ্যমেই উম্মত দুনিয়া ও আখিরাতের সর্বোচ্চ নিয়ামত লাভ করতে পারবে। মু’মিনের মিরাজ হচ্ছে নামাজ। মুসলিম উম্মাহর জন্য রসুল (সা.)-এর মিরাজ অত্যন্ত গুরুত্ব ও তাৎপর্যপূর্ণ।

 

লেখক : শিক্ষক, জামেয়া ইসলামিয়া আনওয়ারে মদিনা মাদরাসা, সিলেট

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads