• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

ধর্ম

অত্যাচারের কুফল

  • ফিরোজ আহমাদ
  • প্রকাশিত ০৬ এপ্রিল ২০১৯

হামান, কারূন, লুত, ফেরাউন, আবু জেহেল আজ আর দুনিয়ায় বেঁচে নেই। কিন্তু আবু জেহেলের মতো কিছু প্রভাব-প্রতিপত্তিশালীর দ্বারা অত্যাচার-অনাচার ও নির্যাতনের ঘটনা অহরহ ঘটছে। পত্রিকান্তরে প্রায়ই মধ্যযুগীয় কায়দায় বর্বর এসব নির্যাতনের ঘটনার খবর পাওয়া যায়। নারী, পুরুষ, শিশু ও বৃদ্ধ কেউ নির্যাতন থেকে রেহাই পাচ্ছেন না। সমাজে অত্যাচার-নির্যাতন বেড়ে গেলে আল্লাহর পক্ষ থেকে আজাব-গজব নেমে আসে। আর আল্লাহর শাস্তিই সবচেয়ে কঠিন। অত্যাচারী বহুজাতি গোষ্ঠীকে আল্লাহ সমূলে ধ্বংস করে দিয়েছেন। কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘তোমার পালনকর্তার পাকড়াও এমনই কঠিন যে, যখন তিনি অত্যাচারে লিপ্ত জনপদগুলোকে পাকড়াও করেন, তখন অবশ্যই তার পাকড়াও হয় অত্যন্ত বেদনাদায়ক কঠোর’ (সুরা হুদ : ১০২)। পবিত্র কোরআনে আরো ইরশাদ হয়েছে, ‘আর আমি আদ ও সামুদকে (ধ্বংস করেছিলাম) তাদের বাড়িঘরই তোমাদের জন্য সুস্পষ্ট প্রমাণ। শয়তান তাদের কাজকে তাদের সামনে আকর্ষণীয় করে রেখেছিল। অথচ তারা নিদারুণ বিচক্ষণ ছিল। কারূন, ফেরাউন এবং হামানকেও (ধ্বংস করেছি)’ (সুরা আনকাবুত : ৩৮-৩৯)।

যারা আল্লাহর বিধানের বিপরীত আচরণ করে, তারাই সীমা লঙ্ঘনকারী। আল্লাহ সীমা লঙ্ঘনকারীদের ভালোবাসেন না। সীমা লঙ্ঘনকারীদের সামাজিক অত্যাচারের শাস্তি হিসেবে আল্লাহ দুনিয়ার জমিনে ঝড়, অতিবৃষ্টি, খরা, ভূমিকম্প ও বজ্রপাত দিয়ে থাকেন। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘সীমা লঙ্ঘনকারীদের বলা হবে, তোমরা যা করতে তার শাস্তির স্বাদ নাও। তাদের পূর্ববর্তীরা মিথ্যা বলেছিল, তাই শাস্তি তাদের গ্রাস করেছিল তাদের অজ্ঞাতসারে, তাই আল্লাহ তাদের পার্থিব জীবনে লাঞ্ছিত করেন, আর তাদের পরকালের শাস্তিও হবে কঠিন। যদি তারা জানত’ (সুরা জুমার : ২৫-২৬)।

সামাজিক ন্যায়বিচার ইসলামী সমাজব্যবস্থার অন্যতম ভিত্তি এবং সামাজিক শৃঙ্খলা ও নিরাপত্তা বিধানের প্রধান পূর্বশর্ত। সমাজে যখন ন্যায়বিচার প্রতিষ্ঠিত হয়, তখন শান্তি ও স্থিতিশীলতা ফিরে আসে। মহান আল্লাহতাআলা বলেন, ‘হে ইমানদাররা! তোমরা (সর্বদাই) ইনসাফের ওপর প্রতিষ্ঠিত থেকো এবং আল্লাহতায়ালার জন্য সত্যের সাক্ষী হিসেবে নিজেকে পেশ করো।

মেশকাত শরিফে হজরত আলী (রা.) থেকে বর্ণিত হয়েছে— হজরত রসুল (সা.) ইরশাদ করেছেন, ‘তুমি অত্যাচারিত ব্যক্তির বদদোয়া থেকে নিজেকে বাঁচিয়ে রাখ। কেননা সে আল্লাহর দরবারে তার হক লাভের জন্য প্রার্থনা করে।’

আমাদের সামনে কেবল জাহেলিয়াত যুগের কানুন, ফেরাউন কিংবা আবু জেহেলের নিদর্শনই নয়; বরং বর্তমান পৃথিবীর অনেক অত্যাচারী শাসকেরও নির্মম পতন পরিলক্ষিত হয়। সুতরাং মুমিন মুসলমান হিসেবে তা থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া কর্তব্য। আসুন, আমরা তওবা করি। আল্লাহ আমার প্রার্থনা কবুল করুন।

 

লেখক : প্রাবন্ধিক ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads