• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
নারীর জন্য জরুরি কিছু মাসয়ালা

ছবি : সংগ‍ৃহীত

ধর্ম

নারীর জন্য জরুরি কিছু মাসয়ালা

  • সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন
  • প্রকাশিত ১৪ মে ২০১৯

রোজা শুধু মুসলিম পুরুষের জন্য নয়, নারীর জন্যও। তাই নারীর জন্য রমজান মাসসংক্রান্ত জরুরি কিছু মাসয়ালা গবেষণার ফসল হিসেবে সংক্ষিপ্ত আকারে এখানে উল্লেখ করা হলো।

১. রমজান মাসে সুবহে সাদিকের পর যদি কোনো মহিলার হায়েজ, নেফাস বন্ধ হয়ে যায় এবং সে এই সময়ের মধ্যে কোনো কিছু পানাহার না করে এমতাবস্থায় যদি সে রোজার নিয়ত করে তাহলে ওই দিনের রোজা শুদ্ধ হবে না বরং পরবর্তী সময়ে উক্ত রোজার কাজা করতে হবে, কারণ সে দিনের শুরুলগ্নে অপবিত্র ছিল।

২. পবিত্র অবস্থায় রোজা রাখার পর যদি হায়েজ শুরু হয় বা সন্তান প্রসব হয়, তাহলে রোজা ভেঙে যাবে এবং পরে তা কাজা করতে হবে। চাই সেটা ফরজ বা নফল রোজা হোক।

৩. রমজান মাসে মহিলাদের পিরিয়ডে রোজা না রাখলে অথবা রোজা রাখার পর পিরিয়ড শুরু হলে তার জন্য পানাহার করা বৈধ। তবে অন্য লোকদের সামনে পানাহার করা উচিত নয়। দিনের বেলায় যদি ঋতু বন্ধ হয়ে স্বাভাবিক হয়ে ওঠে, তাহলে দিনের বাকি অংশে রোজাদারের মতো পানাহার ও যৌনাচার বর্জন করা ওয়াজিব। (আহসানুল ফাতাওয়া : ৪/৪২০)

৪. হায়েজ (মাসিক), নেফাসের (প্রসব-পরবর্তী স্রাব) সময়গুলোতে রোজা রাখা নিষেধ, তবে পরবর্তী সময়ে এ দিনগুলোর রোজার কাজা করতে হবে।

৫. যদি কেউ পূর্ণ ১০ দিন ১০ রাত পর, রাতের শেষভাগে গিয়ে পবিত্র হয় এবং তখন রাতের এতটুকু সময়ও হাতে নেই যার মধ্যে একবার ‘আল্ল­াহু আকবার’ বলতে পারে, তবুও পরের দিনের রোজা ওয়াজিব। আর যদি ১০ দিনের কম সময়ে হায়েজ বন্ধ হয় এবং এতটুকু রাত অবশিষ্ট থাকে, যার মধ্যে তাড়াহুড়া করে গোসল করে নিতে পারে তবে একবারো ‘আল্ল­াহু আকবার’ বলা যায় না, তবুও পরের দিনের রোজা ওয়াজিব হবে। এমতাবস্থায় গোসল না করে থাকলে গোসল ছাড়াই রোজার নিয়ত করে নেবে।

৬. দুধ পান করানোর দ্বারা মহিলাদের রোজা ও অজু ভাঙে না। রোজা এ জন্য ভাঙে না, দুধ বের হওয়াই স্বাভাবিক। রোজা তো পানাহার ও যৌনাচার থেকে বিরত থাকার নাম। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৫/৪০৮)

৭. গর্ভবতী বা স্তন্যদানকারিণী রোজাদার মহিলার যদি রোজা রাখার কারণে বাচ্চার বা তার প্রাণহানি, মা মারাত্মক স্বাস্থ্যহানির প্রবল আশঙ্কা হয়, তবে রোজা ভেঙে ফেলা জায়েজ; অন্যথায় জায়েজ হবে না।

৮. কোনো নারীর হেফজ করা অবস্থায় হায়েজ এসে গেলে এবং মুখস্থ করার জন্য তেলাওয়াতের প্রয়োজনীয়তা দেখা দিলে বা কোনো হাফেজা মেয়ের হায়েজ অবস্থায় কোরআন হেফজ করার জন্য তেলাওয়াত জারি রাখতে চাইলে মনে মনে তেলাওয়াত করবে, মুখে উচ্চারণ করবে না।

৯. হায়েজ, নেফাস অবস্থায় কোরআন তেলাওয়াত ছাড়া যাবতীয় জিকির-আজকার, দোয়া-দরুদ ও তাসবিহ-তাহলিল পাঠ করা জায়েজ আছে। এমনকি দোয়ার নিয়তে কোরআনের আয়াতও পাঠ করা জায়েজ আছে।

১০. ইস্তিহাজা (অসুস্থতাজনিত কারণে দেখা দেওয়া স্রাব, নিয়মিত পিরিয়ডকালীন সময়ের বেশি সময়ে যা দেখা দেয়) অবস্থায় রোজা রাখা সহিহ এবং জরুরি। রোজা না রাখার অনুমতি নেই।

১১. বাচ্চা জন্ম দেওয়ার পর প্রসূতি অথবা রুগ্ণ দুর্বল মহিলা, যে রোজা রাখতে পারে না, এমতাবস্থায় তার পক্ষে ফিদইয়া দেওয়া যথেষ্ট নয়। যদি ফিদইয়া দিয়ে দেয় এবং পরে সুস্থ হয় এবং রোজা রাখার সক্ষমতা এসে যায়, তাহলে ওই রোজার কাজা করা জরুরি। (ফাতাওয়া দারুল উলুম : ৬/৪৭৮)

১২. ইস্তিহাজা অবস্থায় মহিলারা নিজ ঘরে ওয়াজিব, সুন্নত ও নফল ইতিকাফ করতে পারবে, তাতে কোনো অসুবিধা নেই।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads