• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
সুন্দর সমাজ গঠনে রমজানের শিক্ষা

ছবি : সংগৃহীত

ধর্ম

সুন্দর সমাজ গঠনে রমজানের শিক্ষা

  • সৈয়দ ফয়জুল আল আমীন
  • প্রকাশিত ০৩ জুন ২০১৯

প্রশিক্ষণের মাস রমজানে মুসলমানরা আত্মশুদ্ধি, ধৈর্য, সহানুভূতি ও ব্যাপক প্রশিক্ষণের সুযোগ লাভ করে। এই এক মাসের প্রশিক্ষণই পরবর্তী এগারো মাসের চালিকাশক্তি হিসেবে কাজ করে। মহান মাবুদ মানুষকে সব ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড ও বিবাদ-বিসংবাদ সৃষ্টি না করে সাম্যের মহাবাণীতে একাকার হয়ে শান্তিপূর্ণ সমাজব্যবস্থা প্রতিষ্ঠার জন্য বিশেষ সুযোগ করে দিয়েছেন। রমজান মাসে পারস্পরিক দ্বন্দ্ব, সংঘাত ও দুষ্কর্ম এ মাসে অনেক কমে আসে। ফলে মানুষ কাম-ক্রোধ, লোভ-লালসা, মদ-মোহ, ক্ষুধা, তৃষ্ণা, জটিলতা ও যাবতীয় পাপ-পঙ্কিলতাকে বশীভূত করে থাকে। রোজার বদৌলতেই সর্বপ্রকার অন্যায়, অনাচার, গিবত করা, মিথ্যা বলা, অশ্লীল গালাগাল ও অন্যান্য দুষ্কর্ম থেকে পরিত্রাণ পাওয়া যায়। এ মাসে রোজাব্রত পালনে ব্যক্তি চরিত্র যেমন হয়ে ওঠে মহান, তেমনি আদর্শবান ব্যক্তিদের সমন্বয়ে গড়ে ওঠে একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাজ। বিত্তশালী ব্যক্তি রোজাব্রত পালনে সকাল থেকে সন্ধ্যা অবধি অনাহারে কাটিয়ে ক্ষুধার মর্মজ্বালা উপলব্ধি করে বলেই অর্ধাহারে, অনাহারে ক্লিষ্ট দরিদ্রসমাজ বিত্তবানদের থেকে সহানুভূতি লাভ করে সমাজে প্রতিষ্ঠিত হবার প্রয়াস পায়। পারস্পরিক হূদ্যতায় ভরে ওঠে সমাজ।

রমজান থেকে আমাদের শিক্ষা নেওয়া উচিত। রমজানের গুরুত্বপূর্ণ একটি শিক্ষা হলো, ভ্রাতৃত্ববোধ জাগ্রত করা, উম্মাহর সামগ্রিক উন্নয়ন ও সমৃদ্ধির জন্য প্রতিটি মানুষের মাঝে এ মহান গুণের অধিকারী হওয়া জরুরি। বর্তমান সময়ের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় ভ্রাতৃত্ববোধের বিকল্প নেই। আর এ গুণ সিয়াম সাধনার মাধ্যমে অর্জন করা সহজ হয়। রমজান আমাদের আরো শিক্ষা দেয়, নৈতিক উৎকর্ষ সাধন, খোদাপ্রীতি ও স্বদেশানুরাগ। আর এগুলো রমজানের রোজা পালনে অধিক পরিমাণে অর্জিত হয়।

হজরত আবু হুরায়রা (রা.) বর্ণিত হাদিসে মহানবী (সা.) বলেন, ‘যে ব্যক্তি তোমার সঙ্গে অসৎ আচরণ করে, তুমি তার সঙ্গে সদাচরণ করবে। তাহলে তুমি হবে প্রকৃত মুসলমান।’ তেমনি কোরআন মজিদেও আল্লাহর রসুল (সা.)-কে মহত্তম চরিত্রের অধিকারী বলে যে ঘোষণা করা হয়েছে, সে প্রসঙ্গেও মুহাদ্দিসিনে কেরাম বলেন, অপকারীকেও উপকার করা রসুলুল্লাহ (সা.)-এর সেই মহত্তম চরিত্রের অংশ। কেননা তিনি (সা.) নিজেই এরশাদ করেছেন, ‘যে তোমার সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করে, তুমি তার সঙ্গে সম্পর্ক স্থাপন কর। যে তোমার সঙ্গে অন্যায় আচরণ করে, তুমি তাকে ক্ষমা করে দাও। যে তোমার সঙ্গে মন্দ আচরণ করে, তুমি তার সঙ্গে সদাচরণ কর।’

মোটকথা, মহানবীর (সা.) নির্দেশিত এই নৈতিক মানদণ্ডে উন্নীত হলে তাকে মুহসিন বা ইহসানকারী বলা যায় এবং সে-ই উপযুক্ত হয় আল্লাহতায়ালার বিশেষ অনুগ্রহের। ইহসানের আরেক অর্থ সুন্দর করা। যে কোনো ইবাদত কর্তব্য সুন্দর করে সম্পাদন করা এ হিসেবে ইহসান। যে ইবাদতের যেসব নিয়মকানুন রয়েছে, সেগুলো মেনে চললে সেটি সুন্দর হয়। রমজানের সিয়াম সাধনাসহ এর পরিপূর্ণ বাস্তবায়নের মাধ্যমেই একটি সুষ্ঠু ও সুন্দর সমাজ গড়ে তোলা সম্ভব।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads