• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮

ধর্ম

আশুরায় আমল

  • প্রকাশিত ০৬ সেপ্টেম্বর ২০১৯

আশুরার দিনে রোজা রাখা সহিহ হাদিস দ্বারা প্রমাণিত একটি আমল। তবে আশুরা উপলক্ষে দুদিন রোজা রাখতে হয়। মহররমের ১০ তারিখের আগে বা পরে একদিন বাড়িয়ে রোজা রাখা মুস্তাহাব। আরেকটি আমল বর্ণনা সূত্রে দুর্বল হাদিস দ্বারা প্রমাণিত। তা হলো, আশুরার দিনে খাবারে প্রশস্ততা। যথাসম্ভব ভালো খাবার খাওয়া। আরেকটি আমল যুক্তিভিত্তিক প্রমাণিত। সেটি হলো, আহলে বায়াত তথা নবী পরিবারের শাহাদতের কারণে তাঁদের জন্য দোয়া করা, দরূদ পড়া ও তাঁদের জীবন থেকে সত্যের ওপর অটল থাকার শিক্ষা গ্রহণ করা। এ ছাড়া অন্য কোনো আমল নেই।

একসময় আশুরার রোজা ফরজ ছিল। কিন্তু রমজানের রোজা ফরজ হওয়ার পর তা রহিত হয়ে গেছে। তখন থেকে আশুরার দিন রোজা রাখা মুস্তাহাব। সহিহ মুসলিম শরিফে এসেছে, হজরত আয়েশা (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, ‘কুরাইশরা জাহেলি যুগে আশুরার দিন রোজা রাখত। কিন্তু রাসুলুল্লাহ (সা.) সেদিন রোজা রাখতেন যখন তিনি মদিনায় হিজরত করেন, তখন থেকে। তিনি নিজে রোজা রাখেন ও সাহাবাদের রোজা রাখার নির্দেশ দেন। অতঃপর যখন রমজানের রোজা ফরজ হয়, তখন তিনি বললেন, যার ইচ্ছা রোজা রাখো, যার ইচ্ছা রোজা রাখবে না।’ (মুসলিম শরিফ)

মুসনাদে হুমাইদিতে এসেছে, হজরত আবু কাতাদাহ (রহ.) থেকে বর্ণিত, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘আরাফার দিনের রোজা এ বছর ও আগামী বছরের পাপের কাফ্ফারা হবে। আর আশুরার রোজা এক বছরের পাপের কাফ্ফারা হবে।’

ইবনে আব্বাস (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি বলেন, রাসুলুল্লাহ (সা.) ইরশাদ করেন, ‘তোমরা আশুরার দিন রোজা রেখো আর ইহুদিদের বিরোধিতা করো। তাই তোমরা একদিন আগে বা পরে রোজা বাড়িয়ে দাও।’ (মুসনাদে আহমদ)

অনেকের মতে, আশুরার দিন রোজা রাখার চারটি স্তর রয়েছে। যথা প্রথম স্তর—৯, ১০ ও ১১তম দিন রোজা রাখা। এটি উত্তম অভিমত। দ্বিতীয় স্তর হলো—৯ ও ১০ তারিখ রাখা। আর তৃতীয় স্তর হলো, ১০ তারিখের সঙ্গে ১১ তারিখ রোজা রাখা। চতুর্থ স্তর হলো, শুধু ১০ তারিখে রোজা রাখা। কোনো কোনো আলেম এটিকে মুবাহ বলেছেন। অনেকে মাকরুহ বলেছেন। তবে কেবল ১০ তারিখ রোজা রাখা মাকরুহ হওয়ার অভিমত শক্তিশালী।

 

খাবারে প্রশস্ততা করলে বরকত হয়

বায়হাকিতে এসেছে, আবদুল্লাহ (রা.) থেকে বর্ণিত, তিনি নবী (সা.) থেকে বর্ণনা করেন, ‘যে ব্যক্তি আশুরার দিন পরিবারে প্রশস্ততা করবে, সে সারা বছর প্রশস্ততায় থাকবে (তাবরানি, বায়হাকি)। অবশ্য এ হাদিসের বর্ণনা সূত্রে দুর্বলতা আছে। তবে ইবনে হিব্বানের মতে, এটি ‘হাসান’ পর্যায়ের হাদিস।

 

কুসংস্কার এবং বর্জনীয় আমল

১. নতুন ঘরবাড়ি নির্মাণ না করা; ২. এ মাসে বিয়েশাদি না করা; ৩. কোনো ভালো কাজের সূচনা না করা; ৪. গোশত না খাওয়া ও নিরামিষ আহার করা; ৫. পান না খাওয়া, ৬. সাদা কাপড় বা কালো কাপড় তথা শোকের পোশাক পরা; ৭. নতুন ও সুন্দর পোশাক পরিধান না করা; ৮. সব ধরনের আনন্দ-উৎসব পরিহার করা, ৯. মাতম করা এবং বুক চাপড়ানো; ১০. ছুরি, চাকু, ব্লেড বা ধারালো অস্ত্র দ্বারা নিজের বুক, পিঠ ও শরীর থেকে রক্ত বের করা; ১১. প্রতীকী রক্তে রঞ্জিত হওয়া ইত্যাদি।

 

এস এম আতিয়া

লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads