• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
পরনিন্দা জঘন্য অপরাধ

প্রতীকী ছবি

ধর্ম

পরনিন্দা জঘন্য অপরাধ

  • প্রকাশিত ২২ সেপ্টেম্বর ২০১৯

গীবত বা পরনিন্দা করা ইসলামের দৃষ্টিতে জঘন্য অপরাধ। কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার দোষ-ত্রুটি আলোচনা করার নামই গীবত। মহান আল্লাহতায়ালা এরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা অনেক ধারণা থেকে বেঁচে থাক। নিশ্চয়ই কতক ধারণা গুনাহ। কারো গোপনীয় বিষয় সন্ধান করো না। তোমাদের কেউ যেন কারো পেছনে নিন্দা না করে। তোমাদের কেউ কি স্বীয় মৃত ভাইয়ের গোশত ভক্ষণ করতে পছন্দ করবে? বস্তুত তোমরা তো একে ঘৃণাই কর’ (সুরা হুজরাত : ১২)। মহান আল্লাহতাআলা আরো এরশাদ করেন, ‘হে মুমিনগণ! তোমরা একে অপরের প্রতি দোষারোপ করো না’ (সুরা হুজরাত : ১১)।

গীবত কী? এ সম্পর্কে হজরত আবু হুরায়রা (রা) থেকে বর্ণিত, একসময় রাসুল (সা.) সাহাবায়ে কেরামগণকে জিজ্ঞেস করলেন, ‘তোমরা কি বলতে পারো, গীবত কাকে বলে?’ সাহাবিগণ আরজ করলেন, আল্লাহ ও তাঁর রাসুলই (সা.) ভালো জানেন। তখন রাসুলুল্লাহ (সা.) এরশাদ করলেন, গীবত হলো কোনো ব্যক্তির অনুপস্থিতিতে তার এমন দোষ-ত্রুটি বর্ণনা করা, যা শুনলে সে অসন্তুষ্ট হয় এবং অন্তরে আঘাত পায়, তাকেই গীবত বলে। অর্থাৎ কারো অগোচরে তার এমন দোষ বলা যা বাস্তবেই তার মধ্যে আছে, তাই গীবত বা পরনিন্দা। আর যদি তার মধ্যে সেই দোষ না থাকে, তবে তা অপবাদ যা গীবত থেকেও মারাত্মক গুনাহ’ (মুসলিম : ২৫৮৯)।

রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা গীবত বা পরনিন্দা করা থেকে বেঁচে থাকবে। কারণ তাতে তিনটি ক্ষতি রয়েছে— প্রথমত গীবতকারীর দোয়া কবুল হয় না; দ্বিতীয়ত গীবতকারীর কোনো নেক আমল কবুল হয় না; এবং তৃতীয়ত আমলনামায় তার পাপ বৃদ্ধি হয়ে থাকে’ (বুখারি : ২৮৩৭)। রাসুল (সা.) এরশাদ করেন, ‘তোমরা অন্যের দোষ অন্বেষণ করবে না, গুপ্তচরবৃত্তি করবে না, পরস্পর কলহ করবে না, হিংসা-বিদ্বেষ করবে না’ (মুসলিম : ১৯০৩)।

তবে কোনো ব্যক্তির অনিষ্ট থেকে ব্যক্তি, দেশ কিংবা জাতিকে বাঁচাতে গীবত করা অপরাধ নয়। ব্যক্তি এবং জাতিকে সচেতন করার উদ্দেশ্যে তাদের দোষগুলো মানুষকে জানিয়ে দেওয়া আবশ্যক। এক্ষেত্রে গীবত করা জায়েজ। পরিশেষে বলা যায়, পরনিন্দা মানুষের ঈমান-আমলকে বিনষ্ট করে দেয়। মহান আল্লাহতায়ালা আমাদের এসব নিন্দনীয় কাজ থেকে বেঁচে থাকার তওফিক দান করুন।

এহসান বিন মুজাহির

লেখক : শিক্ষক ও গবেষক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads