• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

আকাশ ও পৃথিবীতে আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত

  • প্রকাশিত ০৪ অক্টোবর ২০১৯

এস এম আতিয়া

 

আকাশ ও পৃথিবীতে আল্লাহর অসংখ্য নিয়ামত রয়েছে। মহান রাব্বুল আলামিন পবিত্র কোরআনে ইরশাদ করেন, তোমরা আল্লাহর অনুগ্রহ গণনা করলে তার সংখ্যা নির্ণয় করতে পারবে না। আল্লাহ তো অবশ্যই ক্ষমাপরায়ণ, পরম দয়ালু। (সূরা : নাহল, আয়াত : ১৮)।

আলোচ্য আয়াতে বলা হয়েছে, আল্লাহর যত নিয়ামত রয়েছে, সেগুলো গুনে শেষ করা মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। সেই নিয়ামতের সমপরিমাণ শুকরিয়া জ্ঞাপন করাও মানুষের পক্ষে সম্ভব নয়। এক্ষেত্রে আল্লাহর ক্ষমা ও অনুগ্রহই মানুষের ভরসা। মহান আল্লাহ ক্ষমাশীল, পরম দয়ালু।

সৃষ্টিজগতের ওপর আল্লাহ তা’আলার নিয়ামত এত বেশি যে, দুনিয়ার সব মানুষ সমবেতভাবে সেগুলো গুনতে চাইলেও তা গুনে শেষ করা সম্ভব নয়। মানুষের নিজের অস্তিত্বই একটি বিশাল জগৎ। চোখ, কান, নাক, হাত, পা ও দেহের প্রতিটি গ্রন্থি ও শিরা-উপশিরায় আল্লাহ তা’আলার অসংখ্য নিয়ামত রয়েছে। সূক্ষ্মতম ও বিস্ময়কর হাজারো যন্ত্রপাতি দিয়ে সাজানো প্রতিটি মানবদেহ। বলা যায়, মানুষের শরীর যেন একেকটি ভ্রাম্যমাণ কারখানা। এর বাইরে আসমান, জমিন, পাহাড়, নদী ও অন্য অসংখ্য সৃষ্টিতে জড়িয়ে আছে আল্লাহর নিয়ামতরাজি। আধুনিক বিজ্ঞান এখনো এসব সৃষ্টির রহস্যের কূলকিনারা করতে পারেনি। এসব নিয়ে চিন্তা করলে বোঝা যায়, আল্লাহ তা’আলার নিয়ামতরাজি গুনে শেষ করা বনি আদমের পক্ষে সম্ভব নয়। (তাফসিরে মাআরেফুল কোরআন)

কোনো মানুষ নিজ ইচ্ছায় এ পৃথিবীতে আসেনি। সব সৃষ্টির চেয়ে শ্রেষ্ঠ করে মহান আল্লাহ মানুষকে দুনিয়ায় পাঠিয়েছেন। প্রকৃতঅর্থে, মানুষের অস্তিত্ব লাভ আল্লাহর বিশেষ অনুগ্রহ। পাশাপাশি পার্থিব জীবনের প্রয়োজনীয় উপকরণ মানুষের সহজসাধ্য করে দিয়েছেন। মানুষের বেঁচে থাকার জন্য আল্লাহ তাদের জীবন-জীবিকার পথ সুগম করেছেন। চাষাবাদের জন্য জমিন উর্বর করেছেন। বাতাস, ছায়া ও অক্সিজেনের জন্য বৃক্ষ সৃষ্টি করেছেন। পানির জন্য খাল-বিল, নদী-নালা, সাগর, ঝরনার ব্যবস্থা করেছেন। আকাশ থেকে বৃষ্টি বর্ষণের ব্যবস্থা করেছেন। মানুষের অসংখ্য কল্যাণের নিমিত্তে সূর্যের আলো জ্বালিয়েছেন। কর্মক্লান্ত দিন শেষে বিশ্রাম ও স্বস্তির জন্য রাতকে অন্ধকারময় ও কোলাহলমুক্ত করেছেন। পৃথিবীতে লাখো সৃষ্ট বস্তু থাকা সত্ত্বেও মহান আল্লাহ মানুষকে শ্রেষ্ঠতম সৃষ্টির মর্যাদায় ভূষিত করেছেন। পৃথিবীতে মানুষকে তিনি তার প্রতিনিধি করে পাঠিয়েছেন। যুগে যুগে পথভোলা মানুষকে সঠিক পথ দেখানোর জন্য অসংখ্য নবী-রাসূল প্রেরণ করেছেন।

মানুষ আল্লাহর অবাধ্য হলেও তিনি ত্বরিত ও দ্রুত শাস্তি দেন না। তিনি তার বান্দাকে তওবা করার সুযোগ দেন। বান্দা তওবা করলে তিনি তাকে ক্ষমার চাদরে জড়িয়ে ধরেন। বান্দা একটি ভালো কাজ করলে তিনি ১০টি প্রতিদান দান করেন। আবার কেউ একটি খারাপ কাজ করলে বিপরীতে একটি গুনাহই লেখার নির্দেশ দিয়েছেন। গভীরভাবে চিন্তা করলে দেখা যাবে, জীবনের সব ক্ষেত্রেই আল্লাহর সীমাহীন অনুগ্রহ ছড়িয়ে আছে।

পবিত্র কোরআনে মহান আল্লাহ বিভিন্নভাবে মানুষকে তার অনুগ্রহ সম্পর্কে সচেতন করেছেন। মানুষের সুন্দর আকৃতি, রূপ-যৌবন, জ্ঞান-বুদ্ধি, সহায়-সম্পদ, সন্তান-সন্ততি সবকিছুই আল্লাহর দান। এ পৃথিবী ও পৃথিবীর সবকিছু মানুষের উপকারে সৃজিত। এসব নিয়ামতের দাবি হলো আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায় করা। আল্লাহর কৃতজ্ঞতা আদায়ের শ্রেষ্ঠতম পদ্ধতি হলো তার প্রতি ঈমান আনা। তার নির্দেশিত পথে জীবন পরিচালিত করা।

 

লেখক : গবেষক ও প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads