• শনিবার, ২০ এপ্রিল ২০২৪, ৭ বৈশাখ ১৪২৯

ধর্ম

বিশ্বনবী (সা.)-এর জন্মের প্রেক্ষাপট

  • প্রকাশিত ০৮ নভেম্বর ২০১৯

আয়েশা মালিহা

 

 

মহান রাব্বুল আলামীন তাঁর প্রিয় হাবিব (রসুল সা.)-কে এক বিশেষ সময়ে এই জগতে মানবজাতিকে সঠিক পথের সন্ধান দেওয়ার লক্ষ্যে পাঠিয়েছেন। এ জগতে তার আগমনে কুল কায়েনাত পুলকিত ও আনন্দিত; আমরা তার উম্মত হতে পেরে গর্বিত। মহানবী (সা.)-এর জন্মের মাস রবিউল আউয়ালে তার আগমনকে কেন্দ্র করে নিয়ামতের শুকরিয়া আদায় করার উদ্দেশ্যে যে সমুদয় মাহফিল ও ইসলামী অনুষ্ঠান উদযাপিত হয়, যাকে মিলাদুন্নবী বলে। এর দ্বারা গোটা জাহানে মুসলমানদের ধর্মীয় অনুভূতি, ঈমানি ও রুহানি শক্তি বৃদ্ধি পায়। এর মাধ্যমে অন্ততপক্ষে কিছু সময়ের জন্য হলেও তাসবিহ-তাহলিল, হামদ-নাত ও দরুদ পাঠ করার মতো নানা ইবাদত করার সৌভাগ্য নসিব হয়। বিশ্বনবী মোহাম্মদ (সা.) আমাদের জন্য বড় নিয়ামত এবং সারা জাহানের জন্য রহমত ও বরকত।

আল কোরআনে এরশাদ হয়েছে, ‘আমি আপনাকে সারা জাহানের রহমতস্বরূপ প্রেরণ করেছি।’ অন্য আয়াতে এসেছে, ‘নিশ্চয় আল্লাহ মুমিনদের ওপর অনুগ্রহ করেছেন। যেহেতু তিনি তাদের কাছে তাদের মধ্য থেকে একজন রসুল প্রেরণ করেছেন।’ এ আয়াতদ্বয়ে আল্লাহতায়ালা প্রিয় নবীকে তার উম্মতের জন্য রহমত ও অনুগ্রহ হিসেবে উল্লেখ করেছেন।

এ কথা সত্য, অপসংস্কৃতির ঘোর অন্ধকারে যখন তামাম পৃথিবী সয়লাব, মানবসমাজে মনুষ্যত্ব ও মানবতা যখন ধুলায় মিশ্রিত, সামাজিক, অর্থনৈতিক, রাজনৈতিক ও ধর্মীয় অবস্থা করুণ, ব্যক্তিপূজা, অগ্নিপূজাসহ বহু ঈশ্বরে বিশ্বাসী আরব সমাজ যখন অত্যন্ত কলুষিত, নীতি-নৈতিকতার বিষয়টি যখন একেবারেই অনুপস্থিত এবং অস্থিরতা, অরাজকতা ও অশান্তি যখন সর্বত্র বিরাজমান ঠিক তখনই বিশ্বের সব মানুষের শান্তি ও কল্যাণের শাশ্বত বার্তা নিয়ে এ পৃথিবীতে শুভাগমন করেন মহামানব হজরত মোহাম্মদ (সা.)। তিনি ৫৭০ খ্রিস্টাব্দের ১২ রবিউল আউয়াল সোমবার এ পৃথিবীতে মক্কায় মা আমিনার উদরে জন্মগ্রহণ করেন।

প্রিয় নবী (সা.)-এর জন্মের সময় ছিল সুবহে সাদিকের পর এবং সূর্যোদয়ের পূর্বক্ষণ। যখন নবী (সা.) মাতৃগর্ভে ছিলেন তখন মা আমিনা স্বপ্নে দেখেন যে এক উজ্জ্বলতর আলো সিরিয়ার প্রাসাদসমূহ পর্যন্ত আলোকিত করছে। এ আলোক মা আমিনা নবীজির তাশরিফলগ্নে স্বচক্ষে পুনরায় দেখতে পান। পুণ্যময় আলোয় তার ঘর আলোকিত হয়। এ আলোর কারণে রোমের প্রাসাদসমূহ পর্যন্ত দৃষ্টিগোচর হয়। তার শুভাগমনলগ্নে পারস্যের রাজপ্রাসাদের ১৪টি চূড়া ভূমিতে ধসে পড়ে। রাজধানীতে আদিকাল থেকে জ্বালিয়ে রাখা অগ্নিকুণ্ড নির্বাপিত হয় এবং সিলওয়া উপসাগর শুষ্ক হয়ে যায়।

হজরত রসুলুল্লাহ (সা.)-এর শুভাগমনের সংবাদ পেয়ে তার প্রিয় দাদা আবদুল মুত্তালিব আনন্দিত হন এবং তাকে কোলে তুলে নিয়ে কাবা শরিফে গমন করেন এবং আল্লাহর মহান দরবারে কৃতজ্ঞতা জানিয়ে খায়ের ও বরকতের জন্য দোয়া করেন। তাঁর চাচা আবু লাহাবকে যখন সুয়াইবা নামীয় এক দাসী পেয়ারা নবীর আগমনের খবর জানান তখন আবু লাহাব ভাতিজার জন্মের কথা শুনে খুশি হয়ে আপন দাসী সুয়াইবাকে আজাদ করে দেন।

খাসায়েসে কোবরাও তারিখুল খামিদ গ্রন্থে আল্লামা জালালুদ্দিন সুয়ুতি (রহ.) উল্লেখ করেন, মা আমিনা বলেন, যখন আমার প্রিয় পুত্র ভূমিষ্ঠ হলো তখন আমি দেখতে পেলাম সে সিজদায় পড়ে আছে।

 

লেখক : প্রাবন্ধিক

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads