• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
ঐতিহাসিক বদর দিবস ও আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপট

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ঐতিহাসিক বদর দিবস ও আমাদের বর্তমান প্রেক্ষাপট

  • বাংলাদেশের খবর
  • প্রকাশিত ১১ মে ২০২০

আজ সোমবার রমজানুল মোবারকের সতের তারিখ। ঐতিহাসিক বদর দিবস। শুধু ইসলামের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে দিনটি অনন্য স্থান দখল করে রেখেছে। এদিকে সেই ঐতিহাসিক যুদ্ধ থেকে আমরা বর্তমান সময়ে অনেক শিক্ষাও নিতে পারি। যা এই সংকটময় করোনা যুদ্ধে আমাদেরকে বাচাতে পারে।

ইসলামের শুরুতে এ ধরনের যুদ্ধ হয়েছে। বিদায় হজের পর ইসলামের একটি পরিপূর্ণ রুপ চলে এসেছে। এরপর যে কোন অজুহাতে যুদ্ধ-জিহাদের কথা বলেন নিসক মসজিদে মানুষ হত্যা ছাড়া কয়েকশ বছরের ইতিহাসে আর বেশি কছিু দিতে পারেনি। নিকট অতীতের যতগুলো মুসলিম দেশের যুদ্ধ হয়েছে সবাই এক ইসলামের জন্যই জীবন দিচ্ছে। এটি এই সভ্য সমাজে কোনভাবেই মানা যায় না। তবে এটি যেহেতু ইসলামের একটি ঐতিহাসিক বিজয় ওই সব এক আল্লাহকে অস্বীকারকারীদের বিপক্ষে।

তাই এই দিন মুসলমানদের কাছে ইতিহাসের পাতায় অনেক তাৎপর্যপূর্ণ। চলুন জেনে নেয়া যাক কি হয়েছিল সেদিন। আর কিভাবেই সামান্য সংখ্যক প্রতিনিধি নিয়ে কিভাবে শক্তিশালী দলে বিপক্ষে জয় হওয়া যায়।

হিজরি দ্বিতীয় সনের সতেরই রমজান মদিনা থেকে প্রায় ৭০ মাইল দূরে বদর প্রান্তরে সংঘটিত হয়েছিল আল্লাহর একত্ব ও তার পাঠানো রাসূলের প্রতি অবিশ্বাসী বিশাল সুসজ্জিত বাহিনীর বিপক্ষে বিশ্বাসী ছোট একটি দলের প্রত্যক্ষ সশস্ত্র লড়াই। তাতে মানুষের সব ধারণা নাকচ করে দিয়ে প্রায় উপকরণহীন ছোট দলটিকে জয়ী করেন মহান রাব্বুল আলামিন। সত্য-মিথ্যার চিরন্তন দ্বন্দ্বের ইতিহাসে সংযেজিত হয় নতুন অধ্যায়।

মহানবী সা: মদীনায় হিজরত করে যাওয়ার দ্বিতীয় বছরে সশস্ত্র জিহাদের অনুমতি নিয়ে নাজিল হয় কুরআন মজিদের কয়েকটি আয়াত। যেমন সূরা হজের ৩৭ নং আয়াতে বলা হলো- যাদের বিরুদ্ধে যুদ্ধ চালানো হচ্ছে, তাদেরকে (যুদ্ধের) অনুমতি দেয়া হলো এ জন্য যে, তারা নির্যাতিত হয়েছে। আর আল্লাহ তাদের সাহায্য করতে সক্ষম। তাদেরকে নিজেদের বাড়িঘর থেকে বিতাড়িত করা হয়েছিল অন্যায়ভাবে শুধু এ কারণে, তারা বলে আমাদের প্রভু আল্লাহ।

এভাবে সশস্ত্র পন্থায় কাফেরদের প্রতিরোধ করার অনুমতি লাভের পর আল্লাহর নবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম প্রস্তুত হলেন।

লড়াই শুরুর আগে আল্লাহর নবী দোয়া করেছিলেন, হে আল্লাহ, তুমি যদি চাও দুনিয়াতে তোমার ইবাদত করার কেউ না থাকুক, তাহলে এই ক্ষুদ্র দলটিকে নিশ্চিহ্ন হতে দাও। আল্লাহ তা চাননি। আল্লাহ তায়ালার অভিপ্রায় ছিল বাহ্যিক ও উপকরণগত শক্তির তুচ্ছতা প্রমাণ করা। তাই প্রায় নিরস্ত্র মুষ্টিমেয় মুজাহিদদের কাছে পরাজিত হয় সুসজ্জিত বিশাল বাহিনী। কুরাইশদের দর্প চূর্ণ হলো। তাদের পক্ষে নিহত হলো ৭০ জন। বন্দী হয় আরো ৭০ জন। আর মুসলমানদের মধ্যে শহীদ হন মাত্র চৌদ্দ জন। যুদ্ধের এ ধরনের ফলাফল ছিল সম্পূর্ণ অভাবনীয়। কিন্তু তা ছিল আল্লাহর কুদরতের প্রমাণ।

বর্তমানে আমরা যে করোনা যুদ্ধে অবতীর্ণ হয়েছি এথেকে পরিত্রাণ পেতে হলে  বদরের কথা আসলেই যুদ্ধের সেই ইতিহাস চলে আসে। আজ আমাদের সেই বদরের যুদ্ধে সাহাবীদের সাহসকে কাজে লাগাতে হবে।

আর মহা নবী যেমন আল্লাহ দরবারে সাহার্য চেয়ে ছিলেন ঠিক তেমনিভাবে আমাদেরও একমাত্র খোদার দরবারেই সাহায্য চাইতে হবে। এটা সত্যি হয়ে গেছে কোন বিজ্ঞানই হটাৎ দানবের মতো থাবা দেয়া এই মহামারিতে এখনও মুক্তি দিতে পারেনি। হ্যা এটা সত্যি একদিন হয়তো অবিষ্কার হবে। তখনও কি আমরা এথেকে শিক্ষা নিব না। কেন এই মহামারী করোনা। আমাদের অপরাধটাই বা কি। কত নিরীহ মানুষ প্রাণ দিল এই মহামারিতে।

এসবের একটাই উত্তর আমরা মুসলিম হিসেবে আমাদের অগণিত গুনাহের জন্য প্রথমে খোদার কাছে মাফ চাই। তারপরপর তার কাছে সাহায্য প্রার্থনা করি। তবে সেই বদরের মতো করোনাযুদ্ধে আমরা জয়ী হব।

লেখক- কামিল শিবলী, ফ্রিল্যান্স রাইটার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads