• মঙ্গলবার, ১৬ এপ্রিল ২০২৪, ৩ বৈশাখ ১৪২৯
ঐতিহাসিক মক্কা বিজয় দিবস ও বর্তমানে আমাদের শিক্ষনীয়

সংগৃহীত ছবি

ধর্ম

ঐতিহাসিক মক্কা বিজয় দিবস ও বর্তমানে আমাদের শিক্ষনীয়

  • বাংলাদেশের খবর
  • প্রকাশিত ১৪ মে ২০২০

আজ বৃহস্পতিবার পবিত্র রমজান মাসের ২০ তারিখ। এইদিনের মধ্য দিয়ে পূর্ণ হচ্ছে পবিত্র রমজানে এবাদতের জন্য ভাগ করা দ্বিতীয় অধ্যায় । মক্কা বিজয় দিবসের এদিনটি ইসলামের ইতিহাসে নয়, বিশ্ব সভ্যতার ইতিহাসে অনন্য সাধারণ বৈশিষ্ট্য ও মর্যাদার অধিকারী। বর্তমান প্রেক্ষাপটেও মক্কা বিজয় আমাদের কে পথ পদর্শন করে। এ থেকে আমরা এসময়ে মুসলমানরা ইসলামের মুক্তির পথ খুজে পাই।

এখন চলুন জেনে নেয়া যাক কি ছিল মক্কা বিজয়ের ঘটনা। আজ থেকে ১৪২৬ বছর আগে ইসলামের শেষ নবী হযরত মোহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম হিজরতের অষ্টম বছরে ১০ হাজার মুসলিম সৈন্যের এক বাহিনী নিয়ে মক্কা নগরী জয় করেছিলেন এই দিনে। এ ঘটনা ছিল মুসলমানদের জন্য অত্যন্ত গৌরবের, সাফল্যের ও সন্তুষ্টির।

আরবের চরম মুর্খতার যুগে মানব জাতিকে বহই ইশ্বরের পুজা থেকে ফিরিয়ে এক আল্লাহ রাবব্বুল আলামীনের এবাদতে আনতে সৌদি আরবের মক্কার কোরাইশ বংশে জন্ম নেন শ্রেষ্ঠ মানব হজরত মুহাম্মদ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম।

আল্লাহর ঘরের তত্ত্বাবধায়ক আবদুল মুত্তালিবের ছেলে আব্দুল্লাহর ঘরে বিবি আমিনার কোলে এসে হাজির হন তিনি। ছোট বেলা থেকে তার চারিত্র্যিক মাধুর্য ও উন্নত মানবীয় গুণাবলী দ্বারা সহজেই দৃষ্টি আকর্ষণ করেছিলেন মক্কার মানুষদের।

শত অনাচার ও অসুন্দরের মধ্যে একজন উন্নত চরিত্রের মানুষ প্রথম থেকেই মানবজাতির অধঃপতন ও নিম্নগামিতা অনুভব করেছিলেন। অতপর মাত্র ৪০ বছর বয়সে নবুয়্যাত প্রাপ্তির পর যখন তিনি মুর্তিপুজা, কন্যান সন্তানদের জীবন্ত পুতে ফেলাসহ সব ধরনের অন্যায় থেকে সরে এসে এক আল্লঅহর এবাদতে ডাক দেন, তখন এত দিনের পরিচিত মানুষেগুলোই তার বিরোধীতা শুরু করে। তাই এক পর্যায় নবুওয়াতের ১৩তম বছরে আল্লাহর নির্দেশে মদিনা হিজরত করেন তিনি।

ইয়াছরিবের নাম হয়ে যায় মদিনাতুন নবী বা সংক্ষেপে মদিনা। এখান থেকে ইসলামের প্রসার ঘটে অভাবনীয় গতিতে। মক্কায় কোরাইশ গোত্র আরবে সবচেয়ে প্রভাবশালী ও মর্যাদাপূর্ণ হওয়ায় তাদের বিরোধিতা ছিল ইসলামের প্রসারে একটি বড় অন্তরায়। তা ছাড়া তারা মুসলমানদের বিরুদ্ধে সশস্ত্র তৎপরতাও চালায়। বদর, ওহুদ,আহজাব ইত্যাদি যুদ্ধে কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হতে হয়েছে মুসলমানদের। তবে এর মধ্যে খোদায়ী মদদের কারিশমাও প্রত্যক্ষ করেছে তারা। এরই ধারাবাহিকতায় আসে মক্কা বিজয়ের পালা।

মক্কা জয়ের জন্য মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লামের অভিযান পরিচালনার পেছনে কাজ করেছে হুদায়বিয়ার সন্ধি। এরপর অনেক ইতিহাস শেষে হিজরি ষষ্ঠ বছরে হুদায়বিয়ার সন্ধির চুক্তির শর্ত ভঙ্গ করেন মক্কার কুরাইশরা।

এরও দই বছর পর অষ্টম হিজরির রমজান মাসে এ অভিযান পরিচালিত হয়। ২০ রমজান মহানবী সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম মক্কায় প্রবেশ করেন। প্রায় রক্তপাতহীন সে অভিযানে ইসলামের নবীর পতাকা সেখানে সমুন্নত হয়। আর সত্য ধর্মের গৌরব প্রতিষ্ঠিত হয় আরবের সবচেয়ে সমৃদ্ধ নগরীতে। তাই মক্কা বিজয়ের ঘটনা বিশ্ব মানবতার ইতিহাসে এক অনন্য সাধারণ ঘটনা। আর সে কারণেই ২০ রমজান মুসলমানদের জন্য বিপুল গৌরবের স্মারক।

মুসলিম উম্মার গৌরবের এই বিজয় থেকে শিক্ষা নিয়ে বর্তমানে আমরা মহামারী করোনার বিরুদ্ধে সংগ্রামে সাহস সঞ্চয় করবো এবং ভবিষ্যতে জাহান্নাতের আগুন থেকে নিজেকে মুক্ত রাখতে বেশি ভাল কাজ করবো , আল্লাহর রাজিখুশি অর্জন করবো। শুধু সম্পদের পেছনেই যেন আমাদের সময় না চলে যায়, সে বিষয় লক্ষ রেখে ওপারের জন্য বেশি ভাল কাজ করতে হবে।

লেখক-কামিল শিবলী, ফিল্যান্স রাইটার

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads