• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮

ছবি

ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

আবারো পেছাল সময়

২৪ এপ্রিল মহাকাশে যাচ্ছে বঙ্গবন্ধু-১

  • নিজস্ব প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ২৯ মার্চ ২০১৮

আবারো পেছাল দেশের প্রথম স্যাটেলাইট বঙ্গবন্ধু-১ উড্ডয়নের সময়। সবকিছু ঠিক থাকলে আগামী ২৪ এপ্রিল স্যাটেলাইটটির উড্ডয়ন হবে। স্যাটেলাইট নির্মাতা প্রতিষ্ঠান থেলেস এলেনিয়ার বরাত দিয়ে এমনটাই জানিয়েছে যুক্তরাষ্ট্রভিত্তিক সংবাদমাধ্যম আমেরিকা স্পেস।

নিজেদের টুইটার ও ফেসবুকে দেওয়া এক পোস্টে আমেরিকা স্পেস জানায়, গতকাল বুধবার ফ্রান্সের থেলেস এলেনিয়ার প্লান্ট  থেকে কার্গো উড়োজাহাজে করে ফ্লোরিডার লঞ্চ প্যাডের উদ্দেশে স্যাটেলাইটটি নিয়ে যাওয়া হয়েছে। লঞ্চারের উৎপাদনগত এবং কারিগরি জটিলতা না থাকলে বঙ্গবন্ধু-১ নিয়ে আগামী ২৪ এপ্রিল উড্ডয়ন করতে যাচ্ছে স্পেস এক্সের শাটল কার্গো ফ্যালকন-৯।

এ লক্ষ্যে গতকাল বুধবার ফ্রান্সের নাইস বিমানবন্দরে আনা হয় বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইটটি। অ্যানতোনাভ কার্গো উড়োজাহাজে করে স্থানীয় সময়ানুযায়ী বৃহস্পতিবার সকাল ৬টা থেকে ৮টার মধ্যে ফ্লোরিডার কেপ ক্যানাভেরালের উদ্দেশে রওনা দেবে স্যাটেলাইট উড়োজাহাজটি। যাত্রাপথে বোস্টনে বিরতি নিয়ে ৩০ মার্চ কেপ ক্যানাভেরালে স্পেস এক্সের লঞ্চ প্যাডে নামবে বঙ্গবন্ধু-১। ওই দিনই ফ্যালকন-৯-এ ইন্টিগ্রেশন, টেস্টিং এবং ফুয়েলিং করা হবে। ফ্যালকন-৯-এর আপগ্রেডেড ব্লক-৫ ভার্সনে প্রথম উৎক্ষেপণ হবে বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের।

জানা গেছে, আগামী ২৪ এপ্রিল এটি উৎক্ষেপণকালে গাজীপুরের গ্রাউন্ড স্টেশন থেকে এই স্যাটেলাইট লঞ্চিংয়ে সরাসরি অংশগ্রহণ করবেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা। এ সময় তার সঙ্গে ডাক, টেলিযোগাযোগ ও তথ্যপ্রযুক্তিমন্ত্রী মোস্তাফা জব্বার,  তথ্য ও যোগাযোগ প্রযুক্তি প্রতিমন্ত্রী জুনাইদ আহমেদ পলকেরও উপস্থিত থাকার কথা রয়েছে। আর বাংলাদেশের প্রতিনিধি হিসেবে কেপ ক্যানাভেরালে উপস্থিত থাকবেন তথ্য প্রতিমন্ত্রী তারানা হালিমের নেতৃত্বে ২২ সদস্যের প্রতিনিধি দল।

প্রসঙ্গত, এর আগে স্যাটেলাইট উড্ডয়নের তারিখ ৩ দফা পেছানো হয়েছিল। ২০১৭ সালের ১৬ ডিসেম্বর উড্ডয়নের কথা থাকলেও হারিকেন ইরমার কারণে উৎক্ষেপণ কেন্দ্র ক্ষতিগ্রস্ত হয়। ফলে অন্যান্য দেশের স্যাটেলাইট উৎক্ষেপণও বন্ধ হয়ে যায়। পরে চলতি বছরের ফেব্রুয়ারি এবং ৫ এপ্রিল এ তারিখ নির্ধারণ করা হলেও কিছু যান্ত্রিক ত্রুটি পুনঃমেরামতের কারণে আবারো পেছানো হয়েছে এ সময়।

বাংলাদেশের ভূমি থেকে উপগ্রহটি নিয়ন্ত্রণের জন্য দুটি গ্রাউন্ড স্টেশন তৈরি করা হয়েছে। গাজীপুর জেলার জয়দেবপুর এবং রাঙ্গামাটির বেতবুনিয়ায় এই গ্রাউন্ড স্টেশন। বেতবুনিয়ার গ্রাউন্ড স্টেশনটি ব্যাকআপ স্টেশন হিসেবে ব্যবহার করা হবে। মূলত কাজ হবে জয়দেবপুরের স্টেশনেই। বঙ্গবন্ধু-১ স্যাটেলাইট অরবিটে পাঠানোর পর থ্যালাস সেটি পর্যবেক্ষণ করবে। এর পাশাপাশি বাংলাদেশের এই গ্রাউন্ড স্টেশন থেকেও চলবে পর্যবেক্ষণ কার্যক্রম। এটি উৎক্ষেপণের পর ইন-অরবিট টেস্ট বা আইওটি শেষে ৩ মাস পর বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট থেকে সেবা পাওয়া যাবে। ইতোমধ্যে সেবা বিপণনে প্রচার-প্রচারণা ও যোগাযোগের জন্য স্যাটেলাইট কোম্পানি উদ্যোগ নিয়েছে। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইটের ৪০টি ট্রান্সপন্ডারের মধ্যে ২০টি দেশের ব্যবহারের জন্য রেখে বাকিগুলো অন্যান্য দেশের কাছে ভাড়া দেওয়া হবে। এর মাধ্যমে প্রতিবছর ৫ মিলিয়ন মার্কিন ডলার আয় করা যাবে।

এখন দেশের স্যাটেলাইট টেলিভিশন চ্যানেল, টেলিফোন ও রেডিও বিদেশি স্যাটেলাইট ভাড়ায় ব্যবহার করে। এতে প্রতি বছর ভাড়া বাবদ বাংলাদেশকে ১১০ কোটি টাকা গুনতে হয়। বঙ্গবন্ধু স্যাটেলাইট চালু হলে দেশে এ বৈদেশিক মুদ্রারই সাশ্রয় হবে।

এর পাশাপাশি জ্যোতির্বিজ্ঞান গবেষণা, আবহাওয়ার পূর্বাভাস, টিভি, রেডিও চ্যানেল, মোবাইল ও ইন্টারনেট যোগাযোগ প্রযুক্তি, নৌ-পরিবহনের নেভিগেশন প্রভৃতি কাজেও স্যাটেলাইটটি ব্যবহার করা যাবে।

এ ছাড়া দূর সংবেদনশীল তথ্যে, মাটি বা পানির নিচে অনুসন্ধান ও উদ্ধার কাজে ব্যবহার করা যাবে এ স্যাটেলাইট। মহাশূন্য এক্সপ্লোরেশন, ছবি তোলার কাজে, হারিকেন-ঘূর্ণিঝড় ও প্রাকৃতিক বিপর্যয়ের পূর্বাভাস, গ্লোবাল পজিশনিং বা জিপিএস, গামা রে বারস্ট ডিটেকশনের কাজে লাগবে এটি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads