• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
ভূমিকম্পেও হেলানো মন্দির ধসে পড়ে না কেন?

পিসার হেলানো মন্দির

সংগৃহীত ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

ভূমিকম্পেও হেলানো মন্দির ধসে পড়ে না কেন?

  • তপু রায়হান
  • প্রকাশিত ১৫ মে ২০১৮

প্রায় হাজার বছর ধরেই এক বিস্ময়কর স্থাপত্য হয়ে আছে পিসার হেলানো মন্দির বা টাওয়ার। এর নির্মাণ কাজ শুরু হয় ১১৭৩ সালে। তবে ১১৭৮ সালে মন্দির তৃতীয় তলা নির্মাণের পর এটি হেলতে শুরু করে। নির্মাণ কাজ যখন শেষ হয় তখন দেখা যায় প্রায় ৫৬ মিটার উঁচু ও সাড়ে ১৪ হাজার টনের টাওয়ারটি প্রায় ৫ ডিগ্রি কোণে হেলে রয়েছে।

ধারণা করা হয় এর ভিত্তিতে মাটি ছিল নরম ও ঝুরঝুরে। কিন্তু সেই নরম মাটিতেই সে সময়কার স্থপতিরা অপরিসীম মেধার পরিচয় দিয়ে গড়ে তোলেন আট তলার টাওয়ারটি। তবে তারা হয়তো জানতেন না টাওয়ারটি এত বছর ধরে টিকে থাকবে। শুধু সেই আমলেই নয়, হাল আমলের স্থপতি ও প্রকৌশলীরাও শত শত বছর এই টাওয়ারের টিকে থাকাকে বিস্ময়ই মনে করে আসছেন।

বিশেষ করে ১২৮০ সালে যখন ইতালির এই শহরটিতে তীব্র ভূমিকম্প আঘাত হানে তখন অনেক ভবন ধসে পড়লেও বহাল তবিয়তেই টিকে ছিল হেলানো মন্দির। এরপর আরো বেশ কয়েকটি ভূমিকম্প ইতালির এই শহটিকে কাঁপালেও হেলানো মন্দিরটির কালের সাক্ষী হয়ে দাঁড়িয়েই আছে।

সম্প্রতি এক দল গবেষক জানতে পেরেছেন ভূমিকম্পের আঘাতের পরও গ্যালিলিও গ্যালিলির স্মৃতিবিজড়িত স্থাপনাটির টিকে থাকার রহস্য। ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের ভূমিকম্প প্রকৌশল ও ভূ-গঠন বিশেষজ্ঞরাসহ ১৬ জনের একটি গবেষকদল। গবেষণাটির প্রধান ছিলেন রোমা তেরে ইউনিভার্সিটির অধ্যাপক ক্যামিলো ন্যুটি আর ব্রিস্টল বিশ্ববিদ্যালয়ের সিভিল প্রকৌশল বিভাগের অধ্যাপক জর্জ মিলোনাকিস ছিলেন এই গবেষণার অন্যতম ব্যক্তি। তারা বেশ কয়েক বছর ধরেই রহস্যটি উদঘাটনের চেষ্টা করছেন।

অবশেষে তারা জানতে পেরেছেন, টাওয়ারটি যে স্থানে তৈরি হয়েছে সেখানকার মাটির ডায়নামিক সয়েল-স্ট্রাকচার ইন্টারঅ্যাকশনের (ডিএসএসআই) কারণেই ভূমিকম্পেও অটল থাকতে পারে টাওয়ারটি। অর্থাৎ ওই স্থানের মাটির নরম ও ঝুরঝুরে স্বভাবের কারণেই দীর্ঘস্থায়িত্ব পেয়েছে টাওয়ারটি।

টাওয়ারটির সহনীয় উচ্চতা এবং মাটির নরম স্বভাবের কারণেই যখন ভূমিকম্প হয় তখন এতে অনুনাদ হলেও তা খুব জোরালো হয় না। কম্পনও খুব স্থায়ী হয় না। আর এটিই টাওয়ারটির টিকে থাকার মূল রহস্য।

অধ্যাপক জর্জ মিলোনাকিসের ভাষায়, যে কারণে তৈরির সময় পিসার হেলানো মন্দিরটি হেলে পড়েছিল সেই কারণেই আজ অবধি টিকে আছে এটি।

তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই রহস্য উন্মোচনের ঘটনা পরবর্তী সময়ে ভূমিকম্প সহনীয় ভবন তৈরিতে সহায়তা করতে পারে।

কালজয়ী এই আবিষ্কারটির সারসংক্ষেপ ৮ মে সায়েন্স ডেইলিতে প্রকাশিত হলেও আগামী ১৮ থেকে ২১ জুনের মধ্যে গ্রিকের থেসালোনকিতে অনুষ্ঠিতব্য ষোড়শ ইউরোপিয়ান কনফারেন্স ইন আর্থকোয়েক ইঞ্জিনিয়ারিংয়ে আনুষ্ঠিনিক ঘোষণার মাধ্যমে বিস্তারিত জানানো হবে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads