• বৃহস্পতিবার, ১৮ এপ্রিল ২০২৪, ৫ বৈশাখ ১৪২৯
‘তিন মাস বয়স থেকেই শিশুকে সলিড খাবার খাওয়ানো উচিত’

ছয় মাসের আগে কোনো খাবারই শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প হতে পারে না

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

‘তিন মাস বয়স থেকেই শিশুকে সলিড খাবার খাওয়ানো উচিত’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১১ জুলাই ২০১৮

শিশুর সুস্বাস্থ্য ও স্বাভাবিক বেড়ে ওঠায় মায়ের দুধের কোনো বিকল্প নেই- এই ধারণাটি প্রায় ধ্রুব হয়ে গেছে। পাশাপাশি ছয় মাস বয়স পর্যন্ত বুকের দুধ ছাড়া আর কোনো খাবার না দেওয়ার বিষয়েও রয়েছে এক অলিখিত নিয়ম। আধুনিক চিকিৎসাবিজ্ঞান থেকে শুরু করে আদিকালের লোকজ জ্ঞান- সব জায়গাতেই বলা হয়েছে এই নিয়ম আর বুকের দুধের গুণাগুণের কথা।

কিন্তু সম্প্রতি এক গবেষণায় দেখা গেছে, শিশুর বয়স তিন মাস হলেই তাকে বুকের দুধের পাশাপাশি ‘সলিড খাবার’ দেওয়া যায়। তাতে ওই শিশুর ঘুম ভালো হয়।

তবে গবেষকরা এও বলেছেন যে, ছয় মাসের আগে কোনো খাবারই শিশুর জন্য মায়ের দুধের বিকল্প হতে পারে না।

লন্ডন বিশ্ববিদ্যালয়ের কিং কলেজ ও সেন্ট জর্জ কলেজের গবেষকদের করা ওই গবেষণায় দেখা গেছে, তিন মাস বয়স থেকে যেসব শিশুকে বুকের দুধের পাশাপাশি ‘সলিড খাবার’ দেওয়া হয়েছে তাদের ঘুম শুধু বুকের দুধ খাওয়া শিশুদের চাইতে ভালো হয়।

জরিপধর্মী এই গবেষণাটি করতে গবেষকরা তিন মাস বয়সী ১ হাজার ৩০৩ শিশুকে নমুনা হিসেবে বাছাই করেন। পরে তাদের দুই ভাগে ভাগ করেন। এরপর এক ভাগ শিশুকে ছয় মাস ধরে শুধু বুকের দুধই খাওয়ানো হয়। আরেক ভাগ শিশুকে তিন মাস বয়স থেকে বুকের দুধের পাশাপাশি সলিড খাবারও দেওয়া হয়।

এরপর ওইসব শিশুর বয়স ১২ মাস হওয়ার আগ পর্যন্ত তাদের বাবা-মাকে প্রতিমাসে একটা করে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। আর তিন বছর বয়স পর্যন্ত প্রতি তিন মাসে একটি করে প্রশ্নপত্র দেওয়া হয়। বাবা-মায়েরা সেগুলো পূরণ করে সময় মেনে জমাও দেন।

তিন বছর পরে তারা দেখেন, তিন মাস বয়স থেকেই যাদের ‘সলিড খাবার’ দেওয়া হতো তারা অন্য শিশুদের চাইতে দীর্ঘ সময় ঘুমায়। তারা অন্য শিশুদের মতো সচরাচর জেগে ওঠে না। সব মিলিয়ে তারা দেখেন, অন্য শিশুদের চাইতে তিন মাস বয়স থেকে ‘সলিড খাবার’ খাওয়া শিশুদের ঘুমের সমস্যা কম। এ ছাড়া এসব শিশুর মায়েদের স্বাস্থ্যও তুলনামূলক ভালো।

গবেষকরা দেখতে পান, এসব শিশু প্রতিরাতে গড়ে ১৬ মিনিট করে বেশি ঘুমায়। যার মানে ওই শিশুর মা-বাবা সপ্তাহে দুই ঘণ্টা বেশি ঘুমানোর সুযোগ পান। যার ইতিবাচক প্রভাব পড়ে শিশুর বাবা-মায়ের কাজ ও মনে।

গবেষণাকর্মটির এক সদস্য ও সেন্ট জর্জ কলেজের গবেষক ড. মাইকেল পারকিন বলেন, ঘুমের এই ছোট্ট সময় ব্যবধানই বাবা-মায়ের জন্য বিরাট সুবিধা নিয়ে আসে। কারণ ঘুমের সমস্যা আসলে একজন মানুষের জীবনকে ধ্বংস করে দিতে পারে। সেখানে সপ্তাহে দুই ঘণ্টা বাড়তি সময় পাওয়া অনেক বড় সুযোগ।

এদিকে এই গবেষণার ফলাফল প্রকাশের পরে ছয় মাস বয়সের আগে শিশুকে সলিড খাবার না দেওয়ার বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার সুপারিশও সমর্থন করছেন অনেক বিশেষজ্ঞ। তবে গবেষণাটিকে খারিজ না করে তারা বলছেন, শিশুর বয়স চার মাস হলে তাকে সলিড খাবার দেওয়া যায়।

তবে নতুন এই গবেষণার ব্যাপারে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নিতে হলে আরো কয়েকদফা গবেষণা করা দরকার বলে মনে করেন গবেষক দলের আরেক সদস্য কিংস কলেজের অধ্যাপক গিডিওন ল্যাক।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads