• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
টাক মাথায় চুল গজানোর চিকিৎসায় নতুন আলো

চুল পড়ার চিকিৎসায় এখনো মাত্র দুটি ওষুধ প্রচলিত আছে

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

টাক মাথায় চুল গজানোর চিকিৎসায় নতুন আলো

  • তপু রায়হান
  • প্রকাশিত ০৭ আগস্ট ২০১৮

নারী-পুরুষ নির্বিশেষে সবাই একটি সাধারণ সমস্যায় ভোগেন। সেটা কারো আগে শুরু হয়, আবার কারো একটু দেরিতে। তবে কমবেশি চুল পড়ে সবারই। তবে অকালে যারা চুল হারিয়ে টাক পড়ার অবস্থায় তাদের ভোগান্তিটা একটু বেশিই। সারাক্ষণ তাদের চিন্তা, কীভাবে চুল পড়া ঠেকাবেন বা কী করলে নতুন করে আবার চুল গজাবে? তবে চিকিৎসা বিজ্ঞানও চুল পড়া প্রতিরোধে কার্যকর দুটি উপায়ের কথা বলে। প্রথমত, ওষুধ সেবন করা এবং দ্বিতীয়ত, প্রতিস্থাপন করা।

কিন্তু বেশিরভাগ ক্ষেত্রেই চুল পড়া ঠেকানোর বা নতুন চুল গজানোর চটকদার বিজ্ঞাপনের ফাঁদে ফেলে পয়সা হাতিয়ে নেয় এক শ্রেণির অসাধু মানুষ। কখনো আবার এসব অপচিকিৎসার শিকার হয়ে অনেকে ক্যানসারের মতো রোগেও আক্রান্ত হন।

চুল পড়ার চিকিৎসায় এখনো মাত্র দুটি ওষুধ প্রচলিত আছে। এর একটি হচ্ছে মিনোক্সিডিল, যা পুরুষ ও নারী উভয়েই ব্যবহার করতে পারেন। আর অন্যটি হচ্ছে ফিনাস্টেরাইড, যা শুধু পুরুষরাই ব্যবহার করতে পারেন। কিন্তু ওই দুটি ওষুধেরই কিছু না কিছু পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া আছে। তাই টাকের সমস্যায় আক্রান্তরা চুল প্রতিস্থাপনের মতো পন্থাকে গ্রহণ করেন।

তবে গবেষকরা চলতি ২০১৮ সালে চুল পড়া প্রতিরোধ ও নতুন চুল গজানোর এমন দুটি উপায় আবিষ্কার করেছেন, যা খুব বেশি পার্শ্বপ্রতিক্রিয়া ছাড়াই চুল বড় ও মজবুত হতে সহায়তা করে এবং নতুন করে চুল গজাতে সাহায্য করে। তবে উভয় গবেষণার গবেষকরাই সতর্ক করে দিয়ে বলেছেন, তাদের গবেষণার আলোকে মানুষের চিকিৎসা দিতে আরো গবেষণার প্রয়োজন হবে।

চলতি বছর মে মাসে প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে দাবি করা হয়, হাড়ের ক্ষয়রোধে ব্যবহার হয় এমন একটি ওষুধ মাথার চুল পড়া ঠেকানোর এক নতুন চিকিৎসা হয়ে উঠতে পারে।

ম্যানচেস্টার বিশ্ববিদ্যালয়ের করা সেই গবেষণার গবেষকদের দাবি, অস্টিওপোরোসিসের চিকিৎসায় ব্যবহূত ওষুধ সাইক্লোস্পোরিন নিয়ে ল্যাবরেটরিতে পরীক্ষা করার সময় দেখা গেছে, এটি চুলের গোড়ার ওপর ‘নাটকীয়’ প্রভাব ফেলে এবং তাকে বাড়তে উদ্দীপ্ত করতে পারে।

আসলে গবেষকরা তখন দেখেন, মানুষের দেহের যে প্রোটিনের কারণে চুলের বৃদ্ধি আটকে যায় এই সাইক্লোস্পোরিন ঠিক এই প্রোটিনটিকেই আক্রমণ করে।

এদিকে গত ৩০ জুলাই সায়েন্টিফিক রিপোর্টে প্রকাশিত চুল পড়া নিয়ে করা এক গবেষণার নিবন্ধে দাবি করা হয়েছে, টাক মাথায় চুল গজানোর সবচেয়ে ভালো উপায় খুঁজে পেয়েছেন গবেষকরা।

চর্বিযুক্ত খাবার ও কোলেস্টেরল মানুষের চুল গজাতে সাহায্য করে আগের এমন এক গবেষণার ফলাফল ধরেই নতুন গবেষণা শুরু করেন জন হপকিনস ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের একদল গবেষক। ইঁদুরের ওপর করা ওই গবেষণায় দেখা গেছে, ত্বক ও অন্যান্য কোষের পর্দার ফ্যাটি যৌগ গ্লাইকোস্ফিনগোলিপিড বা জিএলএলএস প্রয়োগ করার পর লোমহীন ইঁদুরের শরীরে লোম গজিয়েছে।

গবেষণায় লোমহীন ইঁদুরগুলোকে গ্লাইকোস্ফিনগোলিপিড তৈরি করতে পারে এমন উচ্চ চর্বিযুক্ত খাবার দেওয়া হয়। প্রায় ৩৬ সপ্তাহ ধরে চলা এই গবেষণায় দেখা যায়, লোমহীন ইঁদুরের শরীরে লোম গজাতে শুরু করেছে।

শুধু তাই এই সময়ে কালো রঙের ইঁদুরের লোম সাদা হওয়ার হারও কমেছে। তবে নতুন এই গবেষণাটির প্রধান গবেষক ও জন হপকিনস ইউনিভার্সিটি স্কুল অব মেডিসিনের অধ্যাপক সুব্রত চট্টোপাধ্যায় বলেন, চুল পড়া প্রতিরোধ বা চুল গজানো নিয়ে এই গবেষণাই সেরা। তবে এটি এখনই মানুষের ক্ষেত্রে প্রয়োগ করা যাবে না। আরো অনেক গবেষণা করতে হবে তার আগে। তিনি আশা প্রকাশ করেন, এই গবেষণা সোরিওসিস বা ডায়াবেটিসজনিত ত্বকের সমস্যা সমাধানেও ভূমিকা রাখবে। তবে সেজন্য অধিকতর গবেষণার কথা আবারো মনে করিয়ে দেন ড. সুব্রত।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads