• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
‘শুঁড় আসলে হাতির ফুড ডিটেক্টর’

হাতির নাক বড় হয়েই শুঁড়ে পরিণত হয়

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

‘শুঁড় আসলে হাতির ফুড ডিটেক্টর’

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১০ আগস্ট ২০১৮

হাতির শরীরের অদ্ভুত এক অঙ্গ শুঁড়। এদের নাক বড় হয়েই শুঁড়ে পরিণত হয়। নমনীয় এই অঙ্গটির শেষ প্রান্তে নাকসদৃশ ছিদ্র রয়েছে, যার সাহায্যে চলে শ্বাস-প্রশ্বাসের কাজ। শুঁড়ের শেষ প্রান্তে আছে আঙুলের মতো অভিক্ষেপ। পানি শুষে মুখে দেওয়া, খাবার প্রক্রিয়াজাত করে মুখে পুরে দেওয়া, গরমের সময় গায়ে পানি ছিটানোসহ গন্ধ নেওয়ার মতো কাজ করতে হাতি শুঁড় ব্যবহার করে। এছাড়া শরীরের এই নমনীয় অঙ্গটি দিয়ে কোনো কিছুর আকার-আকৃতি এবং তাপমাত্রা সম্পর্কে ধারণাও নেয় হাতি। হাতি সাঁতার কাটার সময়ও শুঁড় বড় ভূমিকা রাখে। এছাড়া দলের কোনো হাতি দূরে থাকলে অন্য হাতিদের অবস্থান শুঁড়টি মাটির সঙ্গে লাগিয়ে জানতে পারে এরা।

হাতির শুঁড় নিয়ে ওপরের কথাগুলো পুরনো। তবে নতুন এক গবেষণা বলছে, স্থলভাগের সবচেয়ে বড় স্তন্যপায়ী এই প্রাণীটি আসলে তার ৪০ হাজার মাংসপেশির এই অঙ্গটি খাবার খুঁজতেই বেশি ব্যবহার করে। প্রায়ই দেখা যায়, হাতি জোরে জোরে শুঁড় নাড়ায়। আসলে খাবারের গন্ধ আঁচ করতে পারলেই সেটা ভালোভাবে বুঝতেই এমনটা করে।

দক্ষিণ আফ্রিকার খাজুলোনাটাল বিশ্ববিদ্যালয়ের স্কুল অব লাইফ সায়েন্স ও প্রিটোরিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের গবেষকরা সম্প্রতি আফ্রিকান হাতির (Loxodonta africana) ওপর গবেষণাটি করেন। তারা দেখেন এই প্রজাতির হাতি শুঁড়ের সাহায্যেই দূরের খাদ্যকে চিহ্নিত করে।

আগের কয়েকটি গবেষণায় দেখা যায়, হাতিসহ তৃণভোজী প্রাণীরা রাতের বেলায় চোখের সাহায্যেই খাবার খোঁজে। তবে নতুন গবেষণায় দেখা গেছে এই প্রজাতির হাতি রাতের খাবার খুঁজতে শুঁড় ব্যবহার করে।

গবেষণাটি করতে তারা হাতি খায় এমন ১১টি উদ্ভিদ বাছাই করেন। পরে সেগুলো প্লাস্টিকের কন্টেইনারে করে হাতির সামনে রাখেন। তাতে দেখা যায়, হাতিরা ৬ প্রজাতির উদ্ভিদ বেশি পছন্দ করেছে। তবে বাকি ৫ প্রজাতির উদ্ভিদও পছন্দ করেছে কয়েকটি হাতি, তবে তা খুবই কম।

গবেষণার আরেকটি পর্বে প্লাস্টিকের কন্টেইনারে হাতিদের পছন্দের উদ্ভিদ ও কম পছন্দের উদ্ভিদ রেখে দেখেন হাতিরা তাদের পছন্দের খাবারের কন্টেইনারটিই বেছে নিচ্ছে। দেখা যায়, জোরে জোরে শুঁড় নাড়িয়ে হাতি কন্টেইনারটি পছন্দ করছে।

গবেষণার সবশেষ পর্বে একটি ওয়াই আকৃতির আবদ্ধ জায়গার দুই প্রান্তে পছন্দ ও অপছন্দের খাবার রেখে সাত মিটারের বেশি দূরত্ব থেকে হাতি ছেড়ে দেওয়া হয়। এ ক্ষেত্রে দেখা যায় দুই পথের ওই আবদ্ধ জায়গায় হাতি সব সময়ই শুঁড় নেড়ে নেড়ে পছন্দের খাবারের পথেই যাচ্ছে।

এরপর আগের কয়েকটি গবেষণার তত্ত্ব ও তথ্যের সঙ্গে নতুন গবেষণায় প্রাপ্ত উপাত্ত সমন্বয় করেই এই সিদ্ধান্তে পৌঁছান যে, শুঁড়কে আসলে হাতি ফুড ডিটেক্টর হিসেবেই বেশি ব্যবহার করে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads