• শুক্রবার, ২৯ মার্চ ২০২৪, ১৫ চৈত্র ১৪২৮
তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তরের প্রযুক্তি টেসলা কয়েল

বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা তারবিহীন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ শক্তি স্থানান্তরের স্বপ্ন থেকে সর্বপ্রথম একটি পরীক্ষাটি করেন

ছবি : ইন্টারনেট

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

তারবিহীন বিদ্যুৎ স্থানান্তরের প্রযুক্তি টেসলা কয়েল

  • আসিফ খান
  • প্রকাশিত ১২ আগস্ট ২০১৮

শব্দ বা আলোক শক্তিকে রূপান্তরের মাধ্যমে ধারাবাহিকভাবে বিদ্যুৎ শক্তি ও তাকে তরঙ্গে পরিণত করে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে পাঠানোর প্রযুক্তি আবিষ্কার হয়েছে প্রায় শত বছরেরও বেশি সময় আগে। শব্দকে এক স্থান থেকে অন্য স্থানে পাঠাতে তারবিহীন প্রযুক্তির প্রথম আবিষ্কার রেডিও। এরপর আরো এক ধাপ এগিয়ে একই সঙ্গে শব্দ ও ছবি (মূলত আলো) পাঠানোর যন্ত্রও আবিষ্কৃত হয় প্রায় ৮০ বছর আগে। তারবিহীন ইন্টারনেট সেবাও গত এক দুই দশকে অনেক সহজলভ্য হয়ে উঠেছে। কিন্তু দেড়শ বছরের বেশি আগে বিজ্ঞানী মাইকেল ফ্যারাডে বিদ্যুৎ আবিষ্কার করলেও একমাত্র ব্যাটারি ছাড়া এই শক্তিটাকে এক স্থান থেকে আরেক স্থানে নেওয়ার অন্য কোনো উপায় জানা যাচ্ছিল না। ফলে বাসাবাড়ি বা কল-কারখানায় বিদ্যুৎ ব্যবহার ও তা দিয়ে বিভিন্ন যন্ত্র বা ইঞ্জিন চালাতে তাদের বিকল্পও ছিল না।

তবে বছর চারেক আগে বিজ্ঞানী নিকোলা টেসলা তারবিহীন পদ্ধতিতে বিদ্যুৎ শক্তি স্থানান্তরের স্বপ্ন থেকে সর্বপ্রথম একটি পরীক্ষাটি করেন।

মাইকেল ফ্যারাডের সূত্র অনুযায়ী, যদি কোনো কুণ্ডলিত তারের ভেতর দিয়ে একটি চুম্বককে দ্রুত আনা নেওয়া করা যায় তাহলে পরিবর্তনশীল চুম্বক ক্ষেত্রের প্রভাবে তারের ভেতর তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি হবে।

একইভাবে যদি কোনো কুণ্ডলিত তারের ভেতর পরিবর্তনশীল তড়িৎ প্রবাহ চালানো যায় তাহলে ওই কুণ্ডলির চারপাশে একটি অস্থায়ী চুম্বক ক্ষেত্রের সৃষ্টি হবে। টেসলা কয়েল পরীক্ষায় একই সঙ্গে দুটি কুণ্ডলিত তারের ব্যবহার করা হয়। একটি তিন কুণ্ডলির তারকে প্রায় তিন শ কুণ্ডলির তারের ওপর বসানো হয়, যেন তড়িৎচুম্বকীয় আবেশের দ্বারা এটি উচ্চধাপী ট্রান্সফর্মারের মতো কাজ করে। এর কাজ হচ্ছে কম বিভবের তড়িৎকে উচ্চ বিভবের তড়িতে রূপান্তরিত করা।

ট্রানজিস্টর, রেজিস্ট্যান্স ইত্যাদি ব্যবহারের মাধ্যমে প্রথমে তিন কুণ্ডলির তারের ভেতর দিয়ে তড়িৎ প্রবাহিত করা হয়। প্রবাহের ফলে উৎপন্ন চুম্বক ক্ষেত্র তিন শ কুণ্ডলির তারের চারপাশে আবিষ্ট হয়। এটি তারের দুই প্রান্তে অত্যধিক উচ্চ বিভবের সৃষ্টি করে।

এই অবস্থায় তারের চারপাশে যদি কোনো প্রবাহী বস্তুকে আনা হয় তখন তা অত্যধিক উচ্চ বিভবের ফলে আয়নিত বস্তুর মতো আচরণ করে। কোনো বৈদ্যুতিক বাতির ক্ষেত্রে তা বাতির ভেতরে তড়িৎ প্রবাহের সৃষ্টি করে। ফলে বাতিটি কোনো প্রকার তড়িৎ সংযোগ ছাড়াই শুধু আবেশের প্রভাবে জ্বলে ওঠে। বিজ্ঞানী টেসলার নাম অনুসারেই তারবিহীন বিদ্যুৎ শক্তি স্থানান্তরের এই অসাধারণ উপায়ের নাম দেওয়া হয়েছে টেসলা কয়েল। তবে এই ধরনের কয়েল এখনো গৃহস্থালির কাজে ব্যবহার করার উপায়ে আসেনি। গবেষকদের আশা, অদূর ভবিষ্যতে সেই স্বপ্নও পূরণ হবে।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads