• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯
অবসরটা নিয়েই ফেললেন চয়ন

পেনাল্টি স্পেশালিস্ট মামুনুর রহমান চয়ন

সংগৃহীত ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

অবসরটা নিয়েই ফেললেন চয়ন

  • প্রকাশিত ০২ সেপ্টেম্বর ২০১৮

কবিরুল ইসলাম, ইন্দোনেশিয়া থেকে

আগেই ঘোষণা দিয়েছিলেন জাতীয় দলের জার্সি তুলে রাখার। এশিয়ান গেমসই হবে তার আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারের শেষ আসর। তবে অনেকেই তখন বিশ্বাস করেননি। ভেবেছিলেন রাগে-ক্ষোভে অবসরের ঘোষণা দিয়েছেন তিনি। কিন্তু না, সবাইকে অবাক করে দিয়ে দক্ষিণ কোরিয়ার বিরুদ্ধে পঞ্চম স্থান নির্ধারণী ম্যাচ শেষে অবসরটা নিয়েই ফেললেন পেনাল্টি স্পেশালিস্ট মামুনুর রহমান চয়ন। ভবিষ্যতে ফেডারেশনের অনুরোধেও জাতীয় দলের জার্সি আর গায়ে তুলে নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। তার এ শূন্যতা অনেক দিন ভোগাবে জাতীয় দলকে। ম্যাচ শেষে দু’দলের খেলোয়াড়রা নিজেদের স্টিক তুলে গার্ড অব অনার জানান প্রায় দেড় শতাধিক আন্তর্জাতিক ম্যাচ খেলা এ তারকা প্লেয়ারকে। এরপর মাঠেই তার হাতে জাতীয় পতাকা আঁকা ক্রেস্ট তুলে দেন বাংলাদেশ হকি ফেডারেশনের সাধারণ সম্পাদক আবদুস সাদেক। আজ এশিয়ান গেমস হকির সমাপনী দিনে বাংলাদেশের পতাকা থাকবে চয়নের হাতে। তার নেতৃত্বেই মার্চপাস্টে অংশ নেবেন বাংলাদেশি অ্যাথলেটরা।

এক যুগ আগে জাতীয় দলের জার্সি গায়ে জড়ানো চয়নের বয়স মাত্র ৩০। এরচেয়েও বেশি বয়সে হকি খেলা সম্ভব। বাংলাদেশ দলেই আছেন তেমন বয়স্ক প্লেয়ার। অথচ ফিটনেস থাকার পরও হঠাৎ করেই কেনো তিনি অবসরের ঘোষণা দিলেন, সেটা কারো বোধগম্য নয়। তবে অন্য কোনো কারণে নয়, নিজ সন্তানকে সময় দেওয়ার জন্যই আন্তর্জাতিক ক্যারিয়ারকে বিদায় বলে দিয়েছেন বলে জানালেন চয়ন। বিকেএসপি থেকে উঠে আসা এ হকি তারকার জীবনে কোনো অতৃপ্তি নেই, ‘হকি আমাকে অনেক দিয়েছে। চারটি এশিয়ান গেমস খেলার স্বপ্ন ছিল, সেটা পূরণ হয়ে গেছে। আমি তৃপ্ত জাতীয় দলের হয়ে খেলে। আমার আর কোনো ইচ্ছে নেই। হকি আমাকে অনেক দিয়েছে। হকি খেলেছি বলেই আমি চয়ন আজ সবার কাছে পরিচিত। দেশের সেরা দশজন তারকা খেলোয়াড়ের নাম উঠে এলে সেখানে আমার নামটিও নেয় মানুষ। আমি হকি না খেললে হয়তো কেউ আমাকে চিনত না।’ বিদায়ের মুহূর্তটা স্মরণ করে এ তারকা বলেন, ‘আমি আর ন্যাশনাল টিমে খেলতে পারব না- এটা ভেবেই খুব খারাপ লাগছে। গতকাল রাত থেকেই আমি ঘুমাতে পারিনি। কারণ ন্যাশনাল টিমের ফ্ল্যাগটা আর আমার বুকে থাকবে না। কিন্তু আমার সতীর্থ ও প্রতিপক্ষ কোরিয়ার খেলোয়াড়রা আজ যে সম্মান দিয়েছেন তাতে আমি কৃতজ্ঞ।’ অবসর নেওয়ার মতো বয়স যে এখনো হয়নি সেটা অকপটেই স্বীকার করে নিলেন চয়ন, ‘আমি হয়তো আন্তর্জাতিক অঙ্গনে আরো কিছু দিন খেলা চালিয়ে যেতে পারতাম। কিন্তু ছেলের কারণেই অবসর নিচ্ছি। কারণ তিন বছর বয়সী আমার ছেলেকে যখনই ভিডিও কল দেই তখনই ও মন খারাপ করে থাকে। এখন আমি পুরোটা সময় আমার সন্তানকে দিতে চাই।’ ভবিষ্যতে ফেডারেশনের অনুরোধেও জাতীয় দলের জার্সি আর গায়ে তুলে  নেবেন না বলে সাফ জানিয়ে দেন তিনি। ক্যারিয়ারের স্মরণীয় মুহূর্ত হিসেবে ওয়ার্ল্ড হকি লিগে চীনের বিরুদ্ধে পাওয়া জয়টাকে আখ্যায়িত করেন চয়ন।

উল্লেখ্য, ২০০৬ সালে কাতার এশিয়াড দিয়ে শুরু। এরপর ২০১০ সালে গুয়াংজু ও ২০১৪ সালে ইনচন এশিয়াডে অংশ নিয়েছেন তিনি। চয়নের আগে একমাত্র হকি খেলোয়াড় হিসেবে চারটি এশিয়াডে অংশ নেওয়ার কৃতিত্ব ছিল ডিফেন্ডার মুসা মিয়ার। আর তিনটি এশিয়াডে খেলার অভিজ্ঞতা রয়েছে সাবেক খেলোয়াড় জামাল হায়দার, মুসার ভাই ইসা মিয়া ও হাবুলের।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads