• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

টয়লেটের চেয়ে বেশি জীবাণু স্মার্টফোনে!

  • ডেস্ক রিপোর্ট
  • প্রকাশিত ১৪ জানুয়ারি ২০১৯

টয়লেটের মধ্যে জীবাণুর কথা আমরা সবাই জানি, কিন্তু স্মার্টফোনে। শুনতে একটু হাস্যকর হলেও বিষয়টির ওপর জোর গবেষণা চালিয়েছেন গবেষকরা। বিজ্ঞানীরা বলছেন, স্মার্টফোনের ব্যবহারের সময় এবং এর ওপর নির্ভরতা বেড়ে যাওয়ায় নানা সময়ে হাতে লেগে থাকা ব্যাকটেরিয়া বা নিজের অজান্তে অন্য কিছু থেকে জীবাণু চলে আসে মোবাইলে। আর এতে করে জীবাণুঘটিত সংক্রমণ বাড়ার কারণ হিসেবে স্মার্টফোনকেই দায়ী করছেন বিজ্ঞানীরা।

ভারতীয় সংবাদমাধ্যম আনন্দবাজারে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, সম্প্রতি বিদেশের বিভিন্ন সমীক্ষায় উঠে এসেছে, উন্নত দেশের নাগরিকদের স্মার্টফোনে লেগে থাকা জীবাণুর পরিমাণ নাকি টয়লেটের কমোডের থেকেও বেশি! সেইসব জীবাণুর মধ্যে রয়েছে ‘ই কোলাই’-সহ নানা ধরনের রোগ সৃষ্টিকারী ব্যাক্টেরিয়াও। ২০১১ সালে লন্ডন স্কুল অব হাইজিন এবং ট্রপিক্যাল মেডিসিনের সমীক্ষায় ধরা পড়েছিল, সে-দেশে প্রতি ছয়টি মোবাইলের মধ্যে একটিতে ফিক্যাল ব্যাক্টেরিয়া (মল থেকে উৎপন্ন) রয়েছে। সেই সঙ্গে পাওয়া গিয়েছিল ই-কোলাইয়ের মতো ব্যাক্টিরিয়াও।

জনস্বাস্থ্য বিজ্ঞানী এবং পরিবেশবিদদের অনেকেই বলছেন, তরুণ প্রজন্ম মোবাইল নিয়ে সর্বত্র যাতায়াত তো করছেই। অনেকে বাড়ির একেবারে ছোট সদস্যের হাতেও মোবাইল ধরিয়ে দিচ্ছেন। সেই শিশুটি মোবাইল মুখেও দেয়। খেতে খেতে অনেকে কথা বলেন মোবাইলে, খাবার টেবিলেও মোবাইল রেখে দেন। দুটোই সমান বিপজ্জনক। টয়লেটে গেলে ভালোভাবে সাবান দিয়ে হাত-পা-মুখ ধুতে বলা হয়। কিন্তু মোবাইল তো আর ধোয়া যায় না। তার ওপরে স্মার্টফোনে কভার থাকে। মোবাইল ফোন যদিও বা মুছে নেওয়া যায়, কিন্তু আবরণের আড়ালে তো রুমাল পৌঁছায় না।

ব্রিটেনের অ্যাবারডিন বিশ্ববিদ্যালয়ের ব্যাক্টেরিয়োলজির অধ্যাপক হিউ পেনিংটনের মতে, মোবাইল দিনের মধ্যে বহুবার শরীরের সংস্পর্শে আসে। তাই সংক্রমণের আশঙ্কা বাড়ে।

কলকাতার অল ইন্ডিয়া ইনস্টিটিউট অব পাবলিক হেলথ অ্যান্ড হাইজিনের বিজ্ঞানী মধুমিতা দুবে বলেন, টয়লেট থেকে বেরিয়ে ঠিকমতো হাত না-ধুলে বা টয়লেটে মোবাইল নিয়ে গেলে তার মাধ্যমে নানা ধরনের ক্ষতিকর ব্যাক্টেরিয়া ছড়িয়ে পড়ার আশঙ্কা থাকে। সব সময় হয়তো সঙ্গে সঙ্গে রোগ দেখা দেবে না। কিন্তু বিপদের আশঙ্কা থেকেই যায়।

তিনি আরো বলেন, মোবাইলের ব্যবহার তো বন্ধ করা যাবে না। তবে বিপদ রুখতে নিয়ম করে হাত-পা-মুখ ধোয়ার মতো স্বাস্থ্য-সচেতনতা জরুরি।

জনস্বাস্থ্য ও পরিবেশবিজ্ঞানী স্বাতী নন্দী চক্রবর্তীর বক্তব্য, সর্বত্র ব্যবহারের ফলে মোবাইল হয়ে উঠছে জীবাণুর অন্যতম বাহক। শিশুরা হাত এবং যেকোনো জিনিস বারবার মুখে দেয়। তাই ওদের মোবাইল দেওয়া উচিত নয়। অ্যাসিনেটোব্যাক্টর, সিউডোমোনাস, স্টেফাইলোকক্কাসের মতো ব্যাক্টেরিয়া এভাবে বেশি ছড়ায়। আমজনতা, চিকিৎসকদের এই বিষয়ে আরো সচেতনতা জরুরি। শুধু শিশু নয়, এই জীবাণু সব বয়সের মানুষেরই ক্ষতি করতে পারে।

 

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads