• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯
হারিয়ে যাচ্ছে শনির বলয়

ফাইল ছবি

বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি

হারিয়ে যাচ্ছে শনির বলয়

  • প্রকাশিত ০৩ ডিসেম্বর ২০১৯

সৌরজগতে শনিই কি একমাত্র গ্রহ, যাকে ঘিরে বলয় আছে? তা কিন্তু নয়। শনি ছাড়াও বৃহস্পতি, ইউরেনাস, নেপচুনেরও বলয় আছে। তা সত্ত্বেও শনির বলয় নিয়ে সবচেয়ে বেশি কথা হয়, তার একটা কারণ এই যে, অন্য কোনো গ্রহেরই এত বিশাল, এত উজ্জ্বল, এত ঝকঝকে বলয় নেই। কিন্তু শনির এই চোখধাঁধানো বলয় কি অক্ষয়, অমর? নাকি ধীরে-ধীরে সেই বলয় যাচ্ছে ক্ষয়ে-ক্ষয়ে?

তার আগে জেনে নেওয়া যাক, শনির বলয়ে আছে-টা কী? আছে শুধু বরফের খণ্ড আর পাথর। আর এই নিরীহ বরফ ও পাথরের খণ্ডদের ওপরই নিরন্তর আক্রমণ করে চলেছে সূর্য থেকে আসা অতিবেগুনি রশ্মি আর ছোট-বড় উল্কাপিণ্ড। যে হানার চোটে বলয় থেকে খণ্ড খণ্ড কণা প্রতিনিয়ত ভেঙে পড়ছে শনির বায়ুমণ্ডলে। ১৯৮০ সালে মার্কিন মহাকাশ গবেষণাকেন্দ্র নাসার পাঠানো ভয়েজার প্রথমবার খবর পাঠিয়েছিল, শনির বলয় যে হারে ভেঙে পড়ছে, তাতে সম্পূর্ণ বলয় মিলিয়ে যেতে সময় লাগবে আনুমানিক ৩০ কোটি বছর। কিন্তু ২০১৭ সালে নাসার পাঠানো মহাকাশযান ক্যাসিনি শনির বুকে আছড়ে পড়ার আগে যে ছবি তুলে পাঠায়, তাতে পালটে গিয়েছে আগের সব হিসাব। জানা গেছে, আজকাল নাকি প্রতি সেকেন্ডে ১০ হাজার কেজি পরিমাণ বলয় ভেঙে পড়ছে শনির বুকে। নতুন এই পরিসংখ্যানকে হিসাবের খাতায় ফেলে দেখা যাচ্ছে, শনির এই অপূর্ব বলয়ের আয়ু কমে দাঁড়িয়েছে মাত্র ১০ কোটি বছরে।

এই পর্যন্ত পড়ে মনে হতেই পারে যে শনির বলয় ৩০ কোটি বছরে উধাও হোক বা ১০ কোটি বছরে, তাতে আমাদের কী! কিন্তু মহাকাশে ঘটে চলা অধিকাংশ ঘটনারই রেশ থাকে এ রকম কোটি-কোটি বছর ধরে। শনির বয়স যেখানে সাড়ে ৪০০ কোটি বছর, সেখানে শনির বলয়ের বয়স মাত্র ১০ থেকে ২০ কোটি বছর। যা টিকে থাকবেও আর মাত্র ১০ কোটি বছর বা তারও কম। সেদিক দিয়ে দেখতে গেলে বলা যায়, শনির বলয়কে যে আজ আমরা খুঁটিয়ে দেখতে পাচ্ছি, এ আমাদের সৌভাগ্য অবশ্যই। পৃথিবীর বুকে আমরা কয়েক কোটি বছর আগে-পরে জন্মালে হয়তো শনির এই অপরূপ বলয় আমাদের অদেখাই থেকে যেত। আজ শনির বলয়কে পরীক্ষা করে মহাজাগতিক যত রহস্যের আমরা উদঘাটন করতে পেরেছি, রহস্যে ঢাকা থেকে যেত সেসবও।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads