• বৃহস্পতিবার, ২৮ মার্চ ২০২৪, ১৪ চৈত্র ১৪২৮
অভিনয়ের মঞ্চ থেকে রাজনীতির মঞ্চে

রোকেয়া প্রাচী

সংগৃহীত ছবি

শোবিজ

অভিনয়ের মঞ্চ থেকে রাজনীতির মঞ্চে

  • প্রকাশিত ১৫ নভেম্বর ২০১৮

রোকেয়া প্রাচী— দেশের সংস্কৃতি অঙ্গন এক উজ্জ্বল করা মুখ। কী মঞ্চে, কী ছোটপর্দা, কী রুপালি পর্দায় সমানতালে অভিনয় করে দর্শককের প্রশংসা কুড়িয়েছেন। সংস্কৃতির বাইরেও তার রয়েছে আরেকটি পরিচয়। তিনি একজন রাজনীতিবিদও। বাংলাদেশ মহিলা আওয়ামী লীগের সাংস্কৃতিক সম্পাদক তিনি। আসন্ন একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে অংশ নিতে চান রোকেয়া প্রাচী। জাতীয় নির্বাচন নিয়ে এখন ব্যস্ততার মধ্যে দিনগুলো কাটাচ্ছেন এ অভিনেত্রী। তার মধ্যেও একান্ত সাক্ষাৎকারে তিনি তুলেছেন সংস্কৃতি ও রাজনৈতিক অঙ্গনের টুকরো টুকরো কথা। রোকেয়া প্রাচীর সাক্ষাৎকার নিয়েছেন সালেহীন বাবু

অভিনয় থেকে রাজনীতিতে- এই প্রসঙ্গে কিছু বলুন।

আমার বাবা মরহুম আবদুর রাজ্জাক আওয়ামী লীগের রাজনীতি করতেন। আমাদের বাড়িতে আওয়ামী লীগের সভা-সমিতির বিভিন্ন কর্মকাণ্ড হতো। ১৯৭৫ সালে যখন বঙ্গবন্ধু শহীদ হন সে সময় আমার বাবা শ্রমিক লীগের সভাপতি ছিলেন। কাজেই আমাদের বাড়িতে সব সময়ই রাজনৈতিক কর্মকাণ্ড চলত। আমাদের বাড়িতে তিনজন মুক্তিযোদ্ধা। আমার বাবা, আমার দুই চাচা। আমাদের বাড়ি মুক্তিযোদ্ধাদের বাড়ি হিসেবেই পরিচিত। এসব দেখে বেড়ে ওঠা আমার। আমার বাবার সময়কাল থেকে আমি পারিবারিকভাবে রাজনীতিতে যুক্ত। জাহানারা ইমামের আন্দোলনে এবং এরশাদবিরোধী আন্দোলনের সময় একজন শিল্পী হিসেবে সরাসরি যুক্ত ছিলাম। সক্রিয় ছিলাম যুদ্ধাপরাধীদের বিচারের দাবিতে। বিএনপি-জামায়াতের নৈরাজ্যের প্রতিবাদে ছিলাম রাজপথে। ’৯০-এর সেই উত্তাল সময়ে আমরা রাজনৈতিক বক্তব্য নিয়ে প্রচুর পথনাটক করেছি। আরণ্যকের পাশাপাশি কথা আবৃত্তি চর্চা কেন্দ্রের হয়ে আবৃত্তি চর্চায়ও সক্রিয় ছিলাম। ওই সময় মনেপ্রাণে স্বাধীনতার স্বপক্ষের শক্তি বাংলাদেশ আওয়ামী লীগের একজন কর্মী ছিলাম।

মনোনয়নের বিষয়ে কিছু বলুন-

আশা করি আমার প্রিয় দল আওয়ামী লীগ ও  দলীয় সভানেত্রী শেখ হাসিনা আমাকে মূল্যায়ন করবেন। ফেনী আমার এলাকা, সে কারণে আমাকে যদি নেত্রী যোগ্য মনে করেন আমি সে দায়িত্ব পালন করব। আর যদি নেত্রী মনে করেন আমার চেয়ে যোগ্য কাউকে কিংবা নেত্রী যাকে মনোনয়ন দিতে চান আমি তার জন্যও কাজ করব। আমার উদ্দেশ্য রোকেয়া প্রাচীর জন্য নৌকা নয়, নৌকার জন্য রোকেয়া প্রাচী। রোকেয়া প্রাচীর কাজ হচ্ছে নৌকার জন্য মাটি তৈরি করা যে মাটিতে নৌকার বীজ বপন করা সম্ভব। কাজেই আমি মাটিটা প্রস্তুত করছি সেটা নৌকার জন্য, রোকেয়া প্রাচীর জন্য নয়। নৌকার বিজয়ের জন্য কাজ করছি, নেত্রীর জন্য কাজ করছি। সুযোগ পেলে নেত্রী শেখ হাসিনার মনের মতো করে ফেনীকে সাজাব।

অভিনয় শিল্পী থেকে রাজনীতিবিদ, তফাৎটা কোথায়?

যারা অভিনয় থেকে রাজনীতিতে যান তাদের অনেক সুবিধা থাকে। একজন অভিনেতা-অভিনেত্রী যদি ভালো অভিনয় করে দর্শকদের মন জয় করতে পারেন তাহলে তিনি শুধু তার ভক্তদের কাছেই জনপ্রিয় নন, বরং সর্বমহলে সমাদৃত হন। অভিনয়ের পর তিনি যদি রাজনীতিতে যোগ দেন তাহলে তার গ্রহণযোগ্যতা আরো বেড়ে যায়। একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী হিসেবে মানুষের কাছে যাওয়ার সুযোগ যতটা না থাকে একজন রাজনীতিবিদ হিসেবে তার অনেক মানুষের সঙ্গে সরেজমিন পরিচয় হয়। রাজনীতিতে তৃণমূল থেকে মাটি ও মানুষের সঙ্গে কাজ করা যায়।

রাজনীতির ব্যস্ততায় অভিনয়ে কোনো প্রভাব পড়ছে কি?

প্রভাব তো পড়েছেই। রাজনীতি একটি বিশাল ক্ষেত্র। এখানে সময় দিতেই হবে। অভিনয়ের ক্ষেত্রে আমি সব-সময় বেছে বেছে অভিনয় করেছি। রাজনৈতিক কর্মকাণ্ডে সক্রিয় হওয়ার পরিকল্পনার ফলে অভিনয়ে সময় কম দিতে হবে সে বাস্তবতা মেনেই এবার দেশের কাজের দিকে গুরুত্ব দিতে চাই।

রাজনীতিবিদ হিসেবে বিশেষ কোনো পরিকল্পনা আছে কি?

বিশেষ পরিকল্পনার মধ্যে রয়েছে বাংলাদেশের শিক্ষাক্ষেত্র নিয়ে কাজ করব। নারী শিক্ষার গুরুত্ব তুলে ধরতে এরই মধ্যে আমি এলাকায় প্রচারণা চালিয়েছি। দেশের নারীরা এখন পিছিয়ে নেই। সরকারের শীর্ষ পর্যায় থেকে শুরু করে সব জায়গায় নারীদের ভালো অবস্থান রয়েছে। নারী উন্নয়নের পাশাপাশি আমার এলাকা ফেনী-৩-কে রোল মডেল বানাতে চাই। ফেনীতে সার্বজনীন শিক্ষা প্রসার, সবার জন্য সুস্বাস্থ্য নিশ্চিতকরণ, নেশামুক্ত সমাজ প্রতিষ্ঠা, বেকারদের কর্মসংস্থানের ব্যবস্থার জন্য উদ্যোগ গ্রহণ করব। এটা শুধু আমার নির্বাচনী ওয়াদা নয়, এটা আমার প্রাণের দাবিও।

ধন্যবাদ সময় দেওয়ার জন্য। আপনার সাফল্য কামনা করছি-

আপনাকেও ধন্যবাদ। তবে শেষ করার আগে আমি আবারো বলছি অভিনয় আর রাজনৈতিক ক্ষেত্র দুটি আলাদা হলেও দুটোকেই সমান ভালোবাসী। তবে জনগণের সেবার জন্য মুখিয়ে আছি।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads