কথায় আছে, দাঁত থাকলে বাঙালি দাঁতের মর্যাদা দেয় না। এই যে রূপা এতদিন সংসারের সবকিছুর দায়িত্ব নিয়ে সামলে গেছে, আমরা কি কেউ তাকে প্রতিদান দিতে পেরেছি? আমাদের রূপারা প্রতিদান আশা করে না। কিন্তু তবু কি আমরা কোনোদিন বলেছি ধন্যবাদ রূপা, তুমি আসলে পরিবারের জন্য অনেক কিছুই করেছ। কিন্তু আমরা তা-ও বলি না, আমরা কত কৃপণ।
জাতীয় চলচ্চিত্র পুরস্কারপ্রাপ্ত অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী এমনই বিষয়কে উপজীব্য করে নির্মিত নাটক ‘রূপা ভাবি’র সম্পর্কে অল্প কথায় তুলে ধরার চেষ্টা করেন। মেজবাহ উদ্দিন সুমনের রচনায় ও আবু হায়াত মাহমুদের পরিচালনায় আগামী ঈদে আরটিভিতে প্রচারের জন্য নির্মিত হয়েছে বিশেষ পারিবারিক গল্পের নাটক ‘রূপা ভাবি’। নাটকটি প্রযোজনা করেছেন আলফা-আই প্রোডাকশনের কর্ণধার শাহরিয়ার শাকিল।
গত ৮ ও ৯ জুলাই রাজধানীর উত্তরার একটি শুটিং হাউসে নাটকটি নির্মাণের কাজ শেষ হয়েছে। নাটকটিতে আরো অভিনয় করেছেন ড. ইনামুল হক, শিরীন আলমসহ অনেকে। নাটকটিতে অভিনয় প্রসঙ্গে নন্দিত অভিনেত্রী তারিন বলেন, রূপা ভাবি নাটকটির গল্প প্রত্যেক মানুষের বিবাহিত জীবনের একটি অংশ। সবাই এই গল্পের সঙ্গে কোথাও না কোথাও নিজের জীবনের কিছুটা হলেও মিল খুঁজে পাবেন। লেখক খুব সুন্দরভাবে গল্পটি উপস্থাপন করার চেষ্টা করেছেন। সংসার সুখের হয় রমণীর গুণে, এ কথা কতটুকু সত্যি তা এই গল্পে আছে। রূপা ভাবি নাটকে স্বামীর চরিত্রে অভিনয় করেছেন আমার ভীষণ পছন্দের একজন কো-আর্টিস্ট, পছন্দের অভিনেতা চঞ্চল ভাই। তিনি এমনই একজন শিল্পী, শুটিংয়ে আসার আগে যার স্ক্রিপ্ট মুখস্থ থাকে, তিনি জানেন নাটকে তার চরিত্র কী।
মূলকথা তার পূর্বপ্রস্তুতি থাকে বলেই তার সঙ্গে কাজটা ভীষণ উপভোগ করি আমি। আমি নিজেও সব সময় আমার চরিত্র বুঝে, স্ক্রিপ্ট মুখস্থ করে শুটিংয়ে যাই। যেকোনো কারণেই হোক আজকাল নাটকের পরিবারের সদস্যদের দেখা যায় না। কিন্তু রূপা ভাবি এ সময়ে একটি সুন্দর পারিবারিক গল্পের নাটক।
অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, একজন রূপা আমাদের বাঙালি নারীর চিরায়ত চরিত্র। তারা প্রতিদানের আশা নিয়ে সংসার আগলে রাখে না। কিন্তু তারপরও তারা দিনের পর দিন সংসারের জন্যই নিবেদিত হয়ে কাজ করেন। এই নাটকে রূপা চরিত্রে অভিনয় করেছেন তারিন। তারিন এক কথায় অসম্ভব মেধাবী একজন অভিনেত্রী। আমি যখন অভিনয় শুরু করি, তখন অনেক মেধাবী অভিনেত্রী ছিলেন। তারা অনেকেই এখন আর কাজ করছেন না। সাময়িক একটি সিস্টেমের ভেতরের মধ্যে পড়ে আমরা যা ইচ্ছা তাই করছি। মেধাবী শিল্পীদের মূল্যায়ন করছি না। তারিনের মতো মেধাবী শিল্পীদের নিয়ে নিয়মিত নাটক নির্মাণ হওয়া উচিত। আর নির্মাতা হিসেবে আবু হায়াত মাহমুদ খুব ভালো। অনেক যত্ন নিয়ে সে নাটক নির্মাণ করার চেষ্টা করেন।