• বৃহস্পতিবার, ২৫ এপ্রিল ২০২৪, ১২ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

গৎবাঁধা নাটকে বিরক্ত তারকারাও

  • সালেহীন বাবু
  • প্রকাশিত ০৮ সেপ্টেম্বর ২০১৯

দীর্ঘদিন ধরেই নানা অভিযোগে অভিযুক্ত টিভি নাটক। চিত্রনাট্যহীন একগুঁয়ে ও মানহীন গল্প, কমেডির নামে ভাঁড়ামি, ভাষার অযাচিত ব্যবহার-সবকিছু মিলিয়ে অনেকটাই দেখার অযোগ্য হয়ে পড়ছে টিভি নাটক। সময়ের সঙ্গে সঙ্গে ক্রমেই যেন দর্শকশূন্য হয়ে পড়ছে নাটক-টেলিফিল্মগুলো। আর দর্শকের সঙ্গে সঙ্গে এসব নাটকে অভিনয় করতেও বিরক্তি প্রকাশ করছেন অনেক অভিনয়শিল্পী। এতদিন তারা এ বিষয়ে চুপ থাকলেও বর্তমানে অনেক তারকাই গৎবাঁধা নাটকের গণ্ডি পেরিয়ে সুস্থধারার  নাটকে অভিনয় করতে চাচ্ছেন।

বছরের সবচেয়ে বেশি নাটক নির্মিত হয় দুই  ঈদ-ঈদুল ফিতর ও ঈদুল আজহাকে ঘিরে। সাম্প্রতিক সময়ের নাটকগুলোর পোস্টমর্টেম করলে দেখা যায়, চলচ্চিত্রাঙ্গনের মতো নাট্যাঙ্গনকেও নাজেহাল অবস্থা। বেশির ভাগ নাটকে অযাচিত প্রেম, অশ্লীল সংলাপ, অপ্রয়োজনীয় গান, গালাগালি ও ইশারা-ইঙ্গিতসহ অনেক নাটকে প্রকাশ্যে ধূমপানও দেখানো হচ্ছে যা দর্শদের বিরক্তির কারণ হয়ে দাঁড়িয়েছে। কিছু নাটকের অবস্থা আরো নাজেহাল। নাটকের গল্প কোথায় থেকে কোথায় গিয়ে দাঁড়াবে তার কোনো খেই নেই।

এ নিয়ে হতাশা প্রকাশ করেছেন অনেক তারকাও। একই বিষয়ে অভিনেতা চঞ্চল চৌধুরী বলেন, ‘ইদানীং অনেকেই না বুঝে চিত্রনাট্য ছাড়া নাটক নির্মাণ করছেন। এমন কাজ হলে নাটকের মান তো ঠিকই থাকে না। বরং দর্শকরা বিরক্ত হয়। এসব থেকে বের হতে হবে। আমি ব্যক্তিগতভাবে চেষ্টা করি সব সময়ই ভালো গল্প বেছে নিতে। তবে মাঝে মধ্যে গতানুগতিক বিষয়গুলোর সঙ্গে আমাকেও গা ভাসাতে হয়। কারণ আমার রুটি রুজি আসে অভিনয়ের মধ্য থেকেই। তাই নিজের সাধ্যমতো চেষ্টা করি ভালো মানের কাজ করতে। যাতে দর্শকরা আমাকে মনে রাখে। একটা জিনিস চিরন্তন সত্য দর্শক যাকে মনে রাখে না সে তারকা অভিনয়ে বেশিদিন টিকতে পারে না।’

একসময়ের আলোচিত অভিনেত্রী ও সদ্য অভিনয়শিল্পী সমিতির নির্বাচিত কার্যনির্বাহী সদস্য বন্যা মির্জা বলেন, ‘ঘরের মানুষ হয়ে ঢালাওভাবে মন্তব্য করতে চাচ্ছি না। তা-ও বলতে বাধ্য হচ্ছি, অনেকেই পেটের দায়ে মানহীন কাজ করছেন। এভাবে চলতে থাকলে তো মুশকিল।’

এদিকে বর্তমান সময়ের অন্যতম আলোচিত অভিনেত্রী মেহজাবীন চৌধুরী। বেশির ভাগ নাটকেই তাকে দেখা যায় বেকার ছেলের সঙ্গে প্রেম করতে। এ বিষয় তার কাছে জানতে চাওয়া হলে তিনি বলেন, ‘গল্পের প্রয়োজনেই এমনটি করতে হয়। তবে এর দায়ভার চিত্রনাট্যকারের। তারা যেভাবে গল্প লেখেন আমরা সেভাবেই ক্যামেরার সামনে দৃশ্যায়ন করি। আমরাও চাই নিত্যনতুন চরিত্রে অভিনয় করতে।’

আরেক জনপ্রিয় অভিনেত্রী সাফা কবির বলেন, ‘আমরা যারা অভিনয় করি তারা চাই। নাটকের গল্পের ভিন্নতা থাকুক। তাহলে আমাদের চরিত্রেরও ভিন্নতা থাকবে।  কিন্তু চিত্রনাট্য একই ধারার হলে সেখানে চরিত্র ফুটিয়ে তোলার সম্ভাবনাই কম থাকে।’

ছোট পর্দার প্রিয়মুখ অহনা বলেন, ‘একজন অভিনেতা বা অভিনেত্রী যখন একটি চরিত্রে জনপ্রিয়তা পান, তখন সবাই একই ধরনের চরিত্রে তাকে বারবার ডাকেন। এ চর্চাটা খুবই বাজে। নচেৎ মোশাররফ করিম ভাইয়ের মতো মেধাবী অভিনেতাকে কেন বছরের পর বছর কমেডি নাটকে আটকে থাকতে হবে। আমাদের গল্পের অভাব রয়েছে। চিত্রনাট্যকারের অভাব রয়েছে। এসব থেকে বের হয়ে নতুন কিছু দরকার।’

তবে আশার কথা হচ্ছে, সামনের দিনগুলোতে বিতর্কের ঊর্ধ্বে উঠে কাজ করতে চাইছেন নতুন প্রজন্মের অভিনয়শিল্পীরা। সময়োপযোগী গল্পে অভিনয়ের মাধ্যমে গতানুগতিক ধারাকে ভাঙতে চাইছেন এসব তারকা। সঙ্গে একমত পুরোনো তারকারাও। গৎবাঁধা কমেডি আর ভাঁড়ামি একটি নাটকে সাময়িক বিনোদনের খোরাক জোগায়। কিন্তু সে নাটক সময়ের পরিক্রমায় বিলীন হয়ে যায়।

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads