• শুক্রবার, ১৯ এপ্রিল ২০২৪, ৬ বৈশাখ ১৪২৯

শোবিজ

নৃত্য যার সাধনা

  • বিনোদন প্রতিবেদক
  • প্রকাশিত ১৭ অক্টোবর ২০১৯

তরুণ প্রজন্মের জনপ্রিয় নৃত্যশিল্পী আফরোজা সুলতানা ববি। দেশীয় নৃত্যকলাকে আন্তর্জাতিক পরিমণ্ডলে উপস্থাপন করতে চান তিনি। বর্তমানে ববি ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের সংগীত শিক্ষা কেন্দ্রে নৃত্যশিক্ষক হিসেবে কর্মরত আছেন। পাশাপাশি নৃত্য নিয়ে প্রতিনিয়ত গবেষণা করছেন। তাছাড়া নাচের কোরিওগ্রাফার হিসেবে বিভিন্ন টিভি চ্যানেলে কাজ করছেন। সম্প্রতি ববির নৃত্য পরিচালক হিসেবেও অভিষেক ঘটেছে।

এ প্রসঙ্গে তিনি বলেন, ‘ছবিটির নাম জ্যোৎস্না আকাশ। এটি পরিচালনা করছেন আবুল বাশার। ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে এ ছবির শুটিং হবে। এ ছবিটির মাধ্যমেই আমার চলচ্চিত্রে নৃত্য পরিচালক হিসেবে অভিষেক ঘটেছে। তাই শতভাগ মনোযোগ দিয়ে কাজটি করছি। আগামীতেও বিভিন্ন চলচ্চিত্রে আমার কাজ করার ইচ্ছে রয়েছে।’

১৯৯২ সালে বুলবুল ললিতকলা একাডেমির (বাফা) মাধ্যমে নৃত্যে হাতেখড়ি নেন ববি। এরপর নৃত্যের গুরুমাতা রাহিজা খানম ঝুনু, অনিক বোস, লিখন রায়, ফারহানা চৌধুরী ও আনিসুর রহমান হিরুর কাছে নৃত্যে তালিম নেন।

২০০৩ সালে বিটিভির তালিকাভুক্ত শিল্পী হিসেবে স্থান করে নেন ববি। ভুটানসহ বেশ কয়েকটি দেশে পারফর্ম করেছেন তিনি। নৃত্যকলায় একাধিকবার জাতীয় পুরস্কারও অর্জন করেছেন।

বাবা-মায়ের অনুপ্রেরণায় তার নৃত্যযাত্রা শুরু হয়েছে। এরপর থেকে দিনরাত নৃত্যসাধনা করে চলছেন তিনি। এ বিষয়ে ববি বলেন, ‘শৈশব থেকেই আমি একজন দক্ষ নৃত্যশিল্পী হওয়ার স্বপ্ন দেখেছি। এখনো সেই স্বপ্নে বিভোর রয়েছি। নৃত্যের গুরুমাতা রাহিজা খানম ঝুনু ম্যাডাম এ বিষয়ে আমাকে সবচেয়ে বেশি অনুপ্রাণিত করেছেন। তার সাহচর্যে থেকে নৃত্যের কঠিন কঠিন সব মুদ্রা আয়ত্ত করেছি। তার পরেও বলতে সাহস হচ্ছে না, আমি পরিপূর্ণ নৃত্যশিল্পী হতে পেরেছি। তাই আমি আজীবন নৃত্যশিল্পী হওয়ার সাধনা অব্যাহত রাখব।’

কবিগুরু রবীন্দ্রনাথ ঠাকুর নৃত্যশিল্পেও অসামান্য অবদান রেখে গেছেন। ১৯১৯ সালে তিনি তৎকালীন পূর্ববাংলার সিলেটের মাছিমপুর বস্তিতে মণিপুরি নৃত্য দেখে শান্তিনিকেতনে নৃত্য শিক্ষার ব্যবস্থা করেছিলেন। এরপর ভারতের বিভিন্ন অঞ্চল থেকে নৃত্যগুরুদের এনে শান্তিনিকেতনে বিভিন্ন নৃত্যানুষ্ঠান প্রযোজনা করেছেন। তার লেখা ‘মম চিত্তে নিতি নৃত্যে কে যে নাচে, তা তা থৈ থৈ, তা তা থৈ থৈ, তা তা থৈ থৈ’-গীতিকাব্যটি সবার হূদয়কে মুহূর্তেই আলোড়িত করে তোলে।

নৃত্যশিল্পে কবিগুরু অবদানকে স্বীকার করে ববি বলেন, কবিগুরুর হাত ধরেই দেশীয় নৃত্যশিল্প আধুনিকতার ছোঁয়া পেয়েছে। রবীন্দ্রনাথ তার স্বকীয় চিন্তাচেতনা ও মেধা-মননের সুনিপুণ প্রয়োগ ঘটিয়ে নৃত্যে নতুন মাত্রা যোগ করেছেন। তার নৃত্যনাট্যে অন্তর্ভুক্ত কাহিনী ও চরিত্র পাঠ করলে জীবনের শাশ্বত সত্যকে উপলব্ধি করা যায়। রবীন্দ্র নৃত্যনাট্যে বিশেষভাবে লোকায়ত জীবন ও মানবিক মূল্যবোধ প্রাধান্য পেয়েছে। অন্যদিকে তিনি নৃত্যনাট্য রচনায় সচেতনভাবে সংগীতকে প্রাধান্য দিয়েছেন।

তাছাড়া নৃত্যনাট্যের আদিতে রয়েছে গীতিনাট্য। এই গীতিনাট্য একাধারে গান, নৃত্য ও অভিনয়ের সম্মিলিত রূপ। কিন্তু নৃত্যনাট্যের ছন্দময়তা প্রত্যক্ষ ও সুস্পষ্ট। এখানে তিনি সমসাময়িক পাশ্চাত্যের সঙ্গে প্রাচ্যের সভ্যতার সমন্বয় করার চেষ্টা করেছেন। এসব কারণে তার কাছে আমরা চিরকাল ঋণী হয়ে থাকব।’

নৃত্য নিয়ে প্রত্যাশা প্রসঙ্গে ববি বলেন, ‘নৃত্য হচ্ছে শিল্পের সবচেয়ে প্রাচীন মাধ্যম, যা বিশ্বের প্রতিটি মানুষের কাছে সমান জনপ্রিয়। তাই নৃত্যচর্চাকে আরো বেশি গুরুত্ব দিতে হবে। দেশের নাচের সংগঠনগুলোকে একত্র করতে হবে। সর্বোপরি আমাদের দেশের নৃত্যশিল্পকে বিশ্বমানের করে তুলতে হবে। তা ছাড়া আমি মনে করি, নৃত্যশিল্পে এখন পেশাদারিত্বের জায়গা তৈরি হয়েছে। অনেকেই একে পেশা হিসেবে গ্রহণও করেছেন। বিশেষ করে ছেলেমেয়েদের মধ্যে নাচের আগ্রহ তৈরি হওয়ায় নৃত্য শিক্ষার স্কুলের সংখ্যাও বাড়ছে।’

আরও পড়ুন



বাংলাদেশের খবর
  • ads
  • ads